সময়ের প্রয়োজন বুঝে নানা গণসংগঠনকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে আন্দোলনের পথে এগিয়েছিলেন প্রয়াত শ্যামল চক্রবর্তী। তাঁর স্মরণ-সভায় তাঁরই উদ্যোগকে মনে রেখে যৌথ সংগ্রাম এবং ‘ব্যাপকতর ঐক্যে’র বার্তাই উঠে এল।
দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্যামলবাবুর স্মরণ অনুষ্ঠানে বামফ্রন্টের শরিক এবং তার বাইরের বিভিন্ন বাম দলের পাশাপাশি কংগ্রেসকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল সিপিএম। এসইউসি, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন, পিডিএসের সঙ্গেই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতারা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র সেখানে বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, শ্রমজীবী মানুষের উপরে যে ভাবে আক্রমণ নেমে আসছে, তার মোকাবিলার প্রয়োজনে শ্যামলদা বিভিন্ন গণ-সংগঠনকে একত্রিত করে বিপিএমও (বেঙ্গল প্ল্যাটফর্ম অফ মাস অর্গানাইজেশন্স)গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। সাধারণ মানুষের স্বার্থে যৌথ সংগ্রামকেই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আরও ব্যাপকতর মানুষের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’’
ছয়ের দশক থেকে ছাত্র আন্দোলন এবং পরবর্তী কালে শ্রমিক সংগঠনে শ্যামলবাবুর ভূমিকার কথা স্মরণ করেন তাঁর দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক সতীর্থ বিমান বসু। পাশাপাশিই সূর্যবাবু মনে করিয়ে দেন, দলের প্রথম সারির নেতা হিসেবে শ্যামলবাবু কী ভাবে তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন, তাদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করে নিতে পারতেন। যে কাজের প্রয়োজন এখনও সর্বাধিক।
প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে এ দিন স্মরণ-সভায় উপস্থিত ছিলেন শুভঙ্কর সরকার ও দুই বিধায়ক অসিত মিত্র এবং সুখবিলাস বর্মা। অসিতবাবুও বলেন, বিজেপি এবং তৃণমূলের মোকাবিলায় সমমনোভাবাপন্ন দলের একজোট হয়ে লড়াই করাই এখন পথ।
শিল্প-সাহিত্য জগতের চর্চা করতেন শ্যামলবাবু। নিজে লিখতেন, দলের তরফে প্রকাশনা সংস্থার দেখভালও করেছেন। বিজেপি যে ভাবে রামের নামে হিন্দু সংস্কৃতির ধ্বজা ওড়াতে চাইছে, তার প্রেক্ষিতে বাংলার প্রকৃত পরম্পরা চেনাতে শ্যামলবাবুর লেখার কথাও এসেছে এ দিন। এই মঞ্চ থেকেই শ্যামলবাবুর কন্যা ঊষসী চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তাঁর বাবার ক্ষেত্রে পার্টি এবং পরিবারের সীমারেখা অস্পষ্ট ছিল। কোভিড পরিস্থিতিতে পরিবারের তরফে আলাদা আর কোনও স্মরণ-সভা হবে না। পরে জন্মদিনে পরিবার কোনও স্মরণ-অনুষ্ঠান করতে পারে। সিটু অবশ্য তাদের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির স্মরণে ট্রেড ইউনিয়নদের নিয়ে শ্রমিক ভবনে স্মরণ-সভা করবে ২২ অগস্ট।