Advertisement
০৯ মে ২০২৪

প্রচারেই ধপাস! প্রার্থী বললেন, না দেখে বসেছি

ভোটের প্রচারে তিনি এলেন। বসতে গেলেন চেয়ারে, এবং পড়ে গেলেন! অপ্রতিভ হাসিতে বললেন বটে ‘‘না দেখে বসে পড়েছিলাম,’’ কিন্তু ততক্ষণে দেগঙ্গার প্রার্থী রহিমা বিবিকে ঘিরে জল্পনা ঘুরছে, প্লাস্টিকের চেয়ার কেউ টেনে সরিয়ে নেয়নি তো!

সরাসরি মাটিতে! দেগঙ্গায় তৃণমূল প্রার্থী রহিমা বিবি। সোমবার সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

সরাসরি মাটিতে! দেগঙ্গায় তৃণমূল প্রার্থী রহিমা বিবি। সোমবার সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৬ ০৪:২৩
Share: Save:

ভোটের প্রচারে তিনি এলেন। বসতে গেলেন চেয়ারে, এবং পড়ে গেলেন!

অপ্রতিভ হাসিতে বললেন বটে ‘‘না দেখে বসে পড়েছিলাম,’’ কিন্তু ততক্ষণে দেগঙ্গার প্রার্থী রহিমা বিবিকে ঘিরে জল্পনা ঘুরছে, প্লাস্টিকের চেয়ার কেউ টেনে সরিয়ে নেয়নি তো!

কেন এমন জল্পনা? রহিমাকে দেগঙ্গায় প্রার্থী করার প্রতিবাদে দফায় দফায় পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়ে যাঁরা বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন, তাঁরা স্থানীয় তৃণমূল নেতা মিন্টু সাহাজির অনুগামী— দলেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে সে কথা। মিন্টুকেই প্রার্থী হিসাবে চেয়েছিলেন তাঁরা। সোমবার প্রথম প্রচারে এসে সেই দেগঙ্গাতেই রহিমার এমন ‘মাটি নেওয়া’ তাই মিন্টু-ঘনিষ্ঠদের কারসাজি কিনা, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। ‘‘কেউ ইচ্ছে করে চেয়ার টেনে নেয়নি তো,’’ উড়ে আসছে এমন বাঁকা মন্তব্য। বস্তুত, মিন্টুর পক্ষ নিয়ে যাঁরা গত দু’দিন ধরে আন্দোলন শানিয়েছেন, তাঁদের কেউকে কাউকে এ দিন দেখা গিয়েছে রহিমার আশেপাশে।

ডানপন্থী রাজনীতির ঘরানায় প্রার্থিপদ নিয়ে এমন জলঘোলা নতুন কিছু নয়। বিশেষত, দল যদি ক্ষমতায় থাকে, তা হলে প্রার্থিপদের দাবিদার একাধিক, এমন দেখা যায় আকছার। এ বারই পাণ্ডুয়া, কান্দি, সিঙ্গুর, চণ্ডীতলা, রায়দিঘি, সাতগাছিয়া, চ্যাংড়াবান্দা— দক্ষিণ থেকে উত্তর উদাহরণ বিস্তর। তৃণমূল ভবনে গিয়ে ধর্নাও দিয়েছেন কেউ কেউ। কিন্তু এমন ক্ষোভ-বিক্ষোভ-ধর্না কিংবা নিদেন পক্ষে গোঁসা করে প্রার্থিপদ পরিবর্তনের নজির রেখেছেন কেউ, তেমন উদাহরণ বিরল— জানাচ্ছেন প্রবীণ রাজনীতিবিদেরা।

কী হয়েছিল এ দিন? বেলা ৪টে নাগাদ বেড়াচাঁপা ফুটবল মাঠে আসেন রহিমা। মাঠেই চেয়ার পেতে বসার ব্যবস্থা হয়েছিল তাঁর। ছোট সভা করার কথা। কিন্তু সুর কাটল শুরুতেই। চেয়ারে বসতে গিয়ে ধপাস করে পড়ে গেলেন ভারিসারি চেহারার মধ্যবয়সী রহিমা।

হই হই করে তাঁকে টেনে তোলার জন্য এগিয়ে গিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু রহিমা উঠবেন না কিছুতেই। শেষমেশ অবশ্য কর্মীদের অনুরোধে চেয়ারে উঠে বসেন তিনি।

মিন্টু এ দিন ছিলেন না সভায়। তাঁকে নির্দোষ প্রশ্ন করা গিয়েছিল, কী করে উনি পড়ে গেলেন বলুন তো? উত্তরে মিন্টু বলেন, ‘‘এ তো নেহাতই দুর্ঘটনা!’’ তা হলে আর ক্ষোভ পুষে রাখছেন না? মিন্টুর জবাব, ‘‘আমি তো কিছুই করছি না। যাঁরা আমাকে প্রার্থী হিসেবে চেয়েছিলেন, তাঁরাই ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।’’

দলের এ হেন পরিস্থিতি নিয়ে রহিমা বলেন, ‘‘একটা সংসারে অনেক ভাইবোন থাকলে একটু ঝগড়াঝাটি হয়। সব মিটে গিয়েছে।’’

তবে মিটে যাওয়ার লক্ষণ অবশ্য দেখা যায়নি। সোমবার সন্ধ্যায় রহিমা মিন্টুর বাড়ি গেলে সেখানে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। কোনও মতে বেরিয়ে আসেন রহিমা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

candidate falldown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE