Advertisement
E-Paper

ইডির উপরে হামলার সময় শাহজাহান ছিলেন বাড়ির কাছেই, নির্দেশ দেন ফোনে, দাবি করল সিবিআই

ছ’দিনের সিবিআই হেফাজত শেষ হয়েছে সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল নেতা শাহজাহানের। বৃহস্পতিবার তাঁকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত চত্বরে মোতায়েন করা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী, পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৮:০৭
image of shahjahan sheikh

শাহজাহান শেখ। — ফাইল চিত্র।

শাহজাহান শেখ বাড়ির পাশ থেকে ফোনে ‘অনুগামী’-দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁদের সন্দেশখালিতে নিজের বাড়ির সামনে জড়ো করেছিলেন। ইডি আধিকারিকদের উপর হামলা চালানোর জন্য ‘অনুগামী’-দের তিনিই নির্দেশ দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার বসিরহাট আদালতে এমনটাই দাবি করলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। তাঁর দাবি, তদন্তে এ সব তথ্য উঠে এসেছে। শাহজাহানকে ১২ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। অন্য একটি মামলায় পাঁচ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

ছ’দিনের সিবিআই হেফাজত শেষ হয়েছে সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল নেতা শাহজাহানের। বৃহস্পতিবার তাঁকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত চত্বরে মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশ। সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে শাহজাহানকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়নি। সিবিআইয়ের আইনজীবী দাবি করেছেন, শাহজাহানের নির্দেশেই গত ৫ জানুয়ারি ইডি আধিকারিকদের উপর হামলা চালানো হয়েছিল। তিনি বাড়ির পাশ থেকে ফোন করে ‘অনুগামী’-দের জড়ো হতে বলেছিলেন।

শাহজাহানের সঙ্গে সুকোমল সর্দার এবং মেহেবুর মোল্লাকেও হাজির করানো হয় আদালতে। তাঁদেরও ১২ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বসিরহাটের মহকুমা আদালত। শাহজাহান ‘ঘনিষ্ঠ’ অজিত মাইতিকে আবার পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে নিয়েছে সন্দেশখালি থানার পুলিশ। অজিতকে সন্দেশখালি থানার পুলিশ গ্রেফতার করে। তাঁকে ছ’দিনের পুলিশি হেফাজত শেষে বৃহস্পতিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। সন্দেশখালি থানার পুলিশ ৭৬ নম্বর মামলায় তাঁকে সাত দিনের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন করে। আদালত পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। তাঁর বিরুদ্ধে সন্দেশখালি থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সেই সব অভিযোগ নিয়ে জেরার জন্যই অজিত মাইতিকে হেফাজতে নিতে চেয়েছে সন্দেশখালি থানার পুলিশ। আগামী ২ এপ্রিল তাঁকে বসিরহাট মহাকুমা আদালতে হাজির করানো হবে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অজিতকে দুর্নীতি এবং জমি দখলের অভিযোগে স্থানীয়েরা ঘেরাও করেন। মারধর করতে উদ্যত হন। তখন অজিত ওই এলাকায় একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন । ছ’ঘন্টা সেখানে আটকে থাকার পর অজিতকে সেখান থেকে উদ্ধার করে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতি মামলায় সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়েছিল ইডি। সেই সময়েই স্থানীয়দের হাতে নিগৃহীত হন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। তিন আধিকারিককে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেই থেকে শাহজাহান ‘বেপাত্তা’ ছিলেন। তার পর শাহজাহান অনুগামীদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলে পথে নামেন সন্দেশখালির বাসিন্দাদের একাংশ। শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ দুই নেতা উত্তম সর্দার এবং শিবপ্রসাদ হাজরা ওরফে শিবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে শাহজাহানের খোঁজ মিলছিল না। এই নিয়ে শাসক তৃণমূলের দিকে আঙুল তোলেন বিরোধীরা।

সন্দেশখালিত হামলার ঘটনায় তিনটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। যা নিয়ে হাই কোর্টে যায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চ ইডি আধিকারিকদের উপর আক্রমণের ঘটনায় সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশকে যৌথ ভাবে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল। যাকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় ইডি এবং রাজ্য পুলিশ। সেখানে গত ৭ ফেব্রুয়ারি সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। ওই নির্দেশের অষ্টম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, রাজ্য পুলিশও এই সংক্রান্ত তদন্ত থেকে দূরে থাকবে। অর্থাৎ, এই সংক্রান্ত তদন্ত থেকে রাজ্যের পুলিশকে বিরত থাকতে বলেছিল হাই কোর্ট। তৃণমূল দাবি করে, আদালতের কারণে শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারেনি রাজ্য পুলিশ। পরে কলকাতা হাই কোর্ট জানায়, তৃণমূল নেতা শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারবে রাজ্যের পুলিশ। কোনও স্থগিতাদেশ তাতে দেওয়া হয়নি। ৫৫ দিন পর গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল, মিনাখাঁ থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। বসিরহাট আদালত তাঁকে ১০ দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল। সিআইডি-র হেফাজতে ছিলেন তিনি। পরে কলকাতা হাই কোর্ট শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে বলে। সন্দেশখালিকাণ্ডের তদন্তের ভার যায় সিবিআইয়ের হাতে।

Shahjahan Sheikh CBI ED
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy