ট্রাঙ্ক ভর্তি সারদার নথি পৌঁছল সিবিআই দফতরে। —নিজস্ব চিত্র
পাঁচ বছর ধরে ‘দরবার’ করে কার্যত কিছুই মেলেনি। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সারদার সেই সব নথির একাংশ ‘বাক্সবোঝাই’ হয়ে পৌঁছল সিবিআই দফতরে। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার ফের দু’ট্রাঙ্ক নথি পেল সিবিআই। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় চার ট্রাঙ্ক। সৌজন্যে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট।
গত কাল আইপিএস অফিসার অর্ণব ঘোষকে জেরার সময়, দু’ট্রাঙ্ক ভর্তি নথি সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের দফতরেপৌঁছে দিয়েছিল বিধননগর দক্ষিণ থানা। এ দিন আরও দু’টি ট্রাঙ্ক হাতেপেল কেন্দ্রীয় ওই গোয়েন্দা সংস্থা।ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার তৎকালীন সাব ইনসপেক্টর আর আই মোল্লা (বর্তমানে তিনি বিধাননগর দক্ষিণ থানায় কর্মরত) প্রিজন ভ্যানে করে ওই দু’টি ট্রাঙ্ক সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে নিয়ে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে আনেন বেশ কয়েকটি ফাইলও।
সিবিআই সূত্রে খবর, চিটফান্ড তদন্তের ক্ষেত্রে এই নথিগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিধাননগরের প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধান অর্ণব ঘোষকে দু’দফায় সব মিলিয়ে ১৫ ঘণ্টা জেরায় অনেকটাই ধোঁয়াশা কেটেছে বলে ওই সূত্রটির দাবি। ওই সূত্রটির মতে, যে নথি পাওয়া যাচ্ছিল না অর্ণবকে জেরা করার পর তার অনেকটাই হাতে এসেছে।
সারদা-কাণ্ডের তদন্তে অর্ণবের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সেই সময় বিধননগরের পুলিশ কমিশনার ছিলেন রাজীব কুমার।অর্ণবের থেকে পাওয়া তথ্য এবং হাতে আসা নথি খতিয়ে দেখে এবার রাজীবকে জেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাঁকে ফের জেরার জন্য নোটিস পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। অন্য দিকে এ দিনই রাজীব কুমারের এক প্রতিনিধি সিবিআই দফতরে গিয়ে ওই পুলিশ কর্তার পাসপোর্ট জমা দিয়ে এসেছেন।
অর্ণবকে জেরার পাশাপাশি তাঁর বয়ানও রেকর্ড করা হয়েছে। সারদা তদন্তে অর্ণবের কী ভূমিকা ছিল,ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেতাঁকে বিশেষ দায়িত্ব পালন করতে হয়েছিল কিনা—সে সবইতাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।অর্ণবও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে সারদা তদন্তের বিষয়ে মুখ খুলেছেন বলে ওই সূত্রটির দাবি।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর সামনে জয় শ্রীরাম বলায় গ্রেফতার ১০, কাল থানা ঘেরাও বিজেপির
আরও পড়ুন: মোদীর সরকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত, দেখে নিন কে কী মন্ত্রী হলেন
এর আগে অবশ্য সারদার নথি পেতে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সিবিআইয়ের। কিন্তু তারা যে নথি চাইছিল, তা পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সে কারণেই রাজীব কুমারকে শিলংয়ে জেরা করা হয়। কিন্তু তাতেও সেই নথি পাওয়া যায়নি বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর, ফের রাজীবকে জেরা করতে সম্প্রতি নোটিস দেয় সিবিআই। কিন্তু নোটিসের বিরোধীতা করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার।শুক্রবার আদালত জানিয়ে দেয়, আপাতত ১০ জুলাই পর্যন্ত গ্রেফতার করা যাবে না রাজীব কুমারকে। কিন্তু সিবিআই জেরার মুখোমুখি হতেও তাঁকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। তিনি এত দিন যে জিজ্ঞাসাবাদ এড়িয়ে যাচ্ছিলেন, তা-ও আর সম্ভব হবে না আদালতের নির্দেশে। যেকোনও সময় সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠাতে পারে এবং সেক্ষেত্রে তাঁকে হাজির হতেই হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy