রাজীব কুমার। ফাইল চিত্র।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে জেরা করতে চায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় ওই গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, সারদা-সহ রাজ্যের একাধিক চিটফান্ড কাণ্ডের তদন্তে রাজীব কুমার এবং রাজ্য পুলিশের আরও কয়েক জন শীর্ষ কর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে সিবিআইয়ের তরফে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে। সিবিআইয়ের অভিযোগ, এখনও সেই চিঠির জবাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি রাজ্য পুলিশ।
সারদা তদন্তের সঙ্গে যুক্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক শীর্ষ কর্তা দাবি করেছেন, সম্প্রতি তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের ডিজিকে একটি ই-মেল পাঠিয়েছেন। সেই মেলে তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, সারদা-কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর তৎকালীন ডিজি একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২০১৩-র ২৬ এপ্রিল তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে ওই সিট গঠনের কথা ঘোষণা করেন।
সেই বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যে সমস্ত বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থায় টাকা লগ্নি করে মানুষ প্রতারিত হয়েছেন, সেই সব অভিযোগ এক জায়গায় কেন্দ্রীয় ভাবে তদন্তের কথা বলা হয়। সে কারণেই ডি়জি-র নেতৃত্বে সিট তৈরি করা হয়। ডিজি ছাড়াও সিটের সদস্য হিসাবে ছিলেন ১০ জন আইপিএস অফিসার এবং তাঁদের অধীনে একটি বড় তদন্তকারী দল।
আরও পড়ুন: নিউটাউন থানায় আটক সঙ্গীদের ছাড়াতে সিভিক পুলিশকে অপহরণ করল বাইকবাজরা!
ওই ১০ জন আইপিএস অফিসারের তালিকায় প্রথমেই ছিল বিধাননগর পুলিশের তৎকালীন কমিশনার রাজীব কুমারের নাম। তিনি এখন কলকাতা পুলিশের কমিশনার। এ ছাড়াও ছিলেন বিনীত গয়াল, তমাল বসু, পল্লবকান্তি ঘোষ-সহ একাধিক আধিকারিক।
সিটে মূলত কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি-র আধিকারিকদের রাখা হলেও একমাত্র ব্যাতিক্রম ছিলেন রাজীব কুমার। কারণ, সারদা কাণ্ডে প্রথম এফআইআর হয় বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় এবং তারাই এই মামলায় প্রথম তদন্ত শুরু করে। এখন কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বিনীত গয়াল সেই সময় সিআইডি-র আইজি পদে ছিলেন। ঠিক একই ভাবে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ ছিলেন সিটের সদস্য।
আরও পড়ুন: সাড়ে ১৭ হাজার কোটির প্রতারণা রোজভ্যালির, প্রথম চার্জশিটে জানাল ইডি
রাজ্য পুলিশের ডিজিকে লেখা চিঠিতে সিবিআইয়ের যুক্তি, সারদা ছাড়াও এ রাজ্যের একাধিক চিটফান্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। সেই তদন্ত করতে গিয়ে বার বার রাজ্য পুলিশের সিটের প্রসঙ্গ আসছে। তাই সেই সিটের সদস্যদের সঙ্গে তদন্তের প্রয়োজনে কথা বলা প্রয়োজন। তাঁরা তদন্ত কত দূর এগোতে পেরেছিলেন এবং কী কী তথ্য পেয়েছিলেন তা জানতেই এই পুলিশ কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে ডিজিকে চিঠি দিয়েছে সিবিআই। সিবিআইয়ের দাবি, পর্যায়ক্রমে সিটের সকল সদস্যকে তদন্তে সহযোগিতা করে ২১ থেকে ২৪ অগস্টের মধ্যে তাদের দফতরে যেতে বলা হয়েছে।
সিবিআই এর আগেও রাজীব কুমারকে জেরা করতে চেয়ে দু’বার নোটিস পাঠিয়েছিল। কিন্তু দু’বারই হাজিরা এড়িয়েছিলেন তিনি। তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছিল সিবিআই।
সিবিআই সূত্রে খবর, এখনও রাজ্য পুলিশের তরফে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। তবে পল্লবকান্তি ঘোষ স্পষ্টই জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে সিবিআইয়ের কোনও যোগাযোগ হয়নি। একই কথা বলেছেন অন্য আরও কয়েক জন পুলিশ কর্তা। তবে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া - পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy