Advertisement
E-Paper

ধুরন্ধর জালিয়াতি সারদায়, রিপোর্ট কেন্দ্রকে

কোম্পানি আইনের কোনও ধারাই মানেননি সুদীপ্ত সেন। সারদা গোষ্ঠী সাধারণ মানুষের থেকে একটি কারণ দেখিয়ে অর্থ সংগ্রহ করেছে। তার পর অন্য কোনও খাতে সেই টাকা খরচ করে ফেলা হয়েছে। অর্থলগ্নি সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের যে সব আইন রয়েছে, সেগুলির ফাঁকফোকর সুচতুর ভাবে কাজে লাগিয়েছেন সুদীপ্ত সেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:২৫

কোম্পানি আইনের কোনও ধারাই মানেননি সুদীপ্ত সেন। সারদা গোষ্ঠী সাধারণ মানুষের থেকে একটি কারণ দেখিয়ে অর্থ সংগ্রহ করেছে। তার পর অন্য কোনও খাতে সেই টাকা খরচ করে ফেলা হয়েছে। অর্থলগ্নি সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের যে সব আইন রয়েছে, সেগুলির ফাঁকফোকর সুচতুর ভাবে কাজে লাগিয়েছেন সুদীপ্ত সেন। গত এক বছর ধরে এসএফআইও (সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস) গুরুতর এই জালিয়াতির তদন্ত করছিল কেন্দ্রের কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের নির্দেশে। এসএফআইও আজ তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর কর্পোরেট মন্ত্রকের এক শীর্ষকর্তা বলেন, “এই রিপোর্টের পর্যালোচনা করে এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা পদক্ষেপ করব। কোম্পানি আইনের ধারায় অভিযুক্ত সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সারদা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পরে গত বছরের এপ্রিল মাসে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক এসএফআইও-কে এর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। এ জন্য এসএফআইও-তে বিশেষ টাস্ক ফোর্সও তৈরি হয়। এসএফআইও-র রিপোর্ট বলছে, সারদা গোষ্ঠীর যে সব সংস্থা ছিল, সেগুলি কোম্পানি আইনের বিভিন্ন ধারা ভেঙে কাজ করেছে। ওই সব আইনের ধারা অনুযায়ী সংস্থার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা খতিয়ে দেখা হবে।

কর্পোরেট মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, সাধারণ ক্ষেত্রে কোনও সংস্থার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেই কোম্পানির বিরুদ্ধে নোটিস জারি করা হয়। ওই সংস্থার ব্যবসায়িক কাজকর্ম বন্ধ করতে বলা হয়। কিন্তু সারদা গোষ্ঠীর কাজকারবার ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন থেকে শুরু করে অধিকাংশ কর্তাই এখন জেলে। এই পরিস্থিতিতে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের কী করার হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, এসএফআইও-র রিপোর্ট সিবিআইয়ের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। সিবিআই সারদা কেলেঙ্কারির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করছে। এসএফআইও-র রিপোর্ট সিবিআইয়ের হাতেও তুলে দেওয়া হবে।

পাশাপাশি, বাজার থেকে লগ্নি তোলার ক্ষেত্রে যে সব নিয়ম ভাঙা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট মূলধনী বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি-কে দেওয়া হবে। আগামী দিনে সারদা গোষ্ঠীর মতো বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির কাজকারবার রুখতে এই রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে এসএফআইও তৃণমূল সাংসদ সৃঞ্জয় বসু, কুণাল ঘোষ এবং ইস্টবেঙ্গল ক্লাব-কর্তা দেবব্রত সরকারকে জেরা করেছিল। এসএফআইও সূত্রের খবর, সারদা গোষ্ঠীর বিভিন্ন তথ্য যে সব সার্ভারে রাখা হয়েছিল, ফরেনসিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সেই সব সার্ভার থেকে প্রচুর তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সারদা গোষ্ঠীর সার্ভার ছিল বিদেশেও। সেই সার্ভার থেকেও তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু বিদেশ থেকে কতটা কী তথ্য মিলেছে, সেই বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি এসএফআইও-কর্তারা।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, সারদা গোষ্ঠীর মতো সংস্থাগুলিকে সাধারণ ভাবে চিট ফান্ড বলে আখ্যা দেওয়া হলেও আইন অনুযায়ী এরা চিট ফান্ডের আওতায় পড়ে না। চিট ফান্ডের আওতায় পড়লে তাদের নিয়ন্ত্রণের ভার পড়ত রাজ্য সরকারের উপর। কিন্তু সারদা গোষ্ঠী এমন ভাবে বাজার থেকে লগ্নি সংগ্রহ করেছে, যাতে তারা সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক সকলেরই নজর এড়িয়ে কাজ করতে পারে। জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট, পর্যটনের প্যাকেজ, চড়া সুদে নগদ ফেরত বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প তৈরি করে সাধারণ মানুষকে লোভ দেখিয়ে টাকা তোলা হয়। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মতো টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য কোনও ব্যবসায়িক মডেলই তৈরি হয়নি।

saradha scam cbi probe sudipto sen debjani kunal ghosh report to centre sfio
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy