Advertisement
E-Paper

সুদীপ্ত-দেবযানীকে ফের জেরা করছে সিবিআই

এক জন রয়েছেন আলিপুর জেলে, অন্য জন দমদমে। বছর দুয়েক ধরে তাঁদের রুটিন হল, পুলিশি ঘেরাটোপে ১৪ দিন অন্তর জেল থেকে আদালতে যাওয়া। আবার, আদালতের নির্দেশে ফের জেলে ফিরে আসা। মাঝে-মধ্যে হাজিরা দিতে শহরের বাইরে যাওয়া।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৬

এক জন রয়েছেন আলিপুর জেলে, অন্য জন দমদমে। বছর দুয়েক ধরে তাঁদের রুটিন হল, পুলিশি ঘেরাটোপে ১৪ দিন অন্তর জেল থেকে আদালতে যাওয়া। আবার, আদালতের নির্দেশে ফের জেলে ফিরে আসা। মাঝে-মধ্যে হাজিরা দিতে শহরের বাইরে যাওয়া। গত বছর তিনেক এটাই তাঁদের জীবনের রোজনামচা। সেখানে কোনও গোয়েন্দা বা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ নেই। কিন্তু হঠাৎই যেন ছন্দপতন।

প্রশাসন সূত্রের খবর, সারদা মামলার মূল অভিযুক্ত সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন ও অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফের তিন দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই। ভুবনেশ্বরে সারদা সংক্রান্ত একটি মামলায় জেরা করার জন্য বৃহস্পতিবার তাঁদের দু’জনকে ওড়িশায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দেবযানীর আইনজীবী অর্নিবাণ গুহ ঠাকুরতা এ দিন বলেন, ‘‘ভুবনেশ্বরে একটি মামলার সূত্রে তাঁর মক্কেলকে তাদের হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে বলে আদালতের কাছে জানিয়েছে সিবিআই।’’

সারদা মামলা নিয়ে সিবিআইয়ের এই আচমকা তৎপরতায় বিস্মিত আইনজীবীরা। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, সারদা-কাণ্ড নিয়ে এক সময়ে তোলপাড় হয়েছে। কিন্তু এখন সিবিআইয়ের তদন্তের গতি অনেক শ্লথ হয়ে গিয়েছে। সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত অধিকাংশ মামলায় জামিন পেয়ে গিয়েছেন। দেবযানীরও মাত্র একটি মামলায় জামিন বাকি রয়েছে। এই মামলায় মদন মিত্র, কুণাল ঘোষ-সহ অধিকাংশ ধৃতই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। অনেক রথী-মহারথীর নাম সারদা-কাণ্ডে উঠে এলেও সিবিআই এক বারের জন্যও তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেনি বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ কেন পুরনো মামলায় সুদীপ্ত-দেবযানীকে ওড়িশায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।

সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা অবশ্য জানিয়েছেন, সারদা-কাণ্ডে ভুবনেশ্বরেও কয়েকটি প্রতারণা মামলা রয়েছে। সেই কারণেই দু’জনকে ওখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আইনজীবীরা পাল্টা বলছেন, সারদাকাণ্ডে সব মিলিয়ে শ’দুয়েক মামলা ছিল। সব ক’টি মামলাকে একত্রিত করে মোট চারটি মামলা দায়ের করেছিল সিবিআই। তার পরে নতুন কোনও মামলা দায়ের হয়নি। তা হলে কেন এখন অন্য যুক্তি দেখানো হচ্ছে?

কারণ যাই হোক, সুদীপ্ত-দেবযানীকে ফের জেরা করার পিছনে সাম্প্রতিক কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের কথাই বলছেন প্রশাসনের অনেকে।। তাঁদের মতে— নোট বাতিল, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প বন্ধ করা বা অনুদান কমিয়ে দেওয়া, বিমান বিভ্রাট, চেকপোস্টে সেনা অভিযানের মতো কয়েকটি বিষয়ে দিল্লির সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক তেতো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছেন, তাঁদের প্রতিবাদের মুখ বন্ধ করতে সিবিআই, আয়করের মতো বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে লেলিয়ে দিচ্ছে মোদী সরকার। অনেকে বলছেন, এই ঘটনা তারই ‘ফলো-আপ’।

সারদা-কাণ্ডে সম্প্রতি তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শতাব্দী রায়কে নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। আর তার পরেই সুদীপ্ত ও দেবযানীকে জেরা করা শুরু হয়েছে। আইনজীবীদের একাংশের মতে, এই কেলেঙ্কারিতে রাজ্যের শাসক দলের অনেকের নামে অভিযোগ উঠেছে। সুদীপ্ত-দেবযানীকে ফের জেরা করে নতুন কিছু তথ্যের ভিত্তিতে সেই ‘প্রভাবশালীদের’ দিকে এগোতে চাইছে সিবিআই।

Saradha scam CBI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy