Advertisement
E-Paper

গৌতমকে কেন প্যারোলে মুক্তি, কোর্টে সিবিআই

অসুস্থ মাকে দেখতে গত ডিসেম্বরে তিন দিনের প্যারোলে জেল থেকে বাড়ি গিয়েছিলেন রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু। কিন্তু সিবিআইয়ের অভিযোগ, তাদের না-জানিয়েই তখন গৌতমকে ছাড়া হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৪১

অসুস্থ মাকে দেখতে গত ডিসেম্বরে তিন দিনের প্যারোলে জেল থেকে বাড়ি গিয়েছিলেন রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু। কিন্তু সিবিআইয়ের অভিযোগ, তাদের না-জানিয়েই তখন গৌতমকে ছাড়া হয়েছিল।

এবং এ নিয়ে ভুবনেশ্বর কোর্টে একটা মামলাও ঠুকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো। সিবিআইয়ের প্রশ্ন— প্যারোলে থাকাকালীন গৌতম যে বাড়িতে বসে কোনও প্রভাবশালীর সঙ্গে বৈঠক করেননি, তার নিশ্চয়তা কী? বস্তুত সিবিআই মনে করছে, প্যারোলে মুক্ত গৌতম যে হেতু কলকাতা পুলিশের প্রহরায় ছিলেন, তাই ওই সময়ে প্রভাবশালীদের সঙ্গে বৈঠক করতে তাঁর বিশেষ অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।

ব্যাঙ্কশাল কোর্টে আবেদন করে গৌতম কুণ্ডু গত ৯ থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্যারোল পান। গৌতমের কৌঁসুলির সওয়াল ছিল, তাঁর মক্কেল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হেফাজতে রয়েছেন। তাঁকে তিন দিনের জন্য ছাড়া

হোক। বিচারক আবেদন মঞ্জুর করেন। এখন সিবিআইয়ের দাবি— গৌতম যেমন ইডি’র হেফাজতে, তেমন তাদেরও হেফাজতে। ‘‘শুধু ইডির হেফাজত থেকেই প্যারোলে মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সিবিআই হেফাজত থেকে নয়।’’— মন্তব্য এক সিবিআই-কর্তার।

গোয়েন্দা-সূত্রের খবর: ২০১৫-র ১৫ মার্চ ইডি কলকাতায় গৌতমকে গ্রেফতার করে। ক’দিন ইডির হেফাজতে থাকার পরে তিনি জেলে চলে যান। যদিও আইনত থেকে যান ইডি-র হেফাজতেই। ২০১৬-র ২৫ জানুয়ারি সিবিআই জানায়, তারাও গৌতমকে গ্রেফতার করছে। আদালতের নির্দেশে তাঁকে কলকাতার জেল থেকে তুলে ভুবনেশ্বরের নয়াপল্লির ৮ নম্বর ইউনিট অফিসে নিয়ে গিয়ে আট দিন ধরে জেরা করে সিবিআই।

সেখান থেকে ফেরা ইস্তক কলকাতায় প্রেসিডেন্সি জেলই রোজ ভ্যালি কর্ণধারের ঠিকানা। সিবিআই বলছে, কোন আসামি কী কী মামলায় বন্দি, জেল সুপারের কাছে সব নথি থাকে। ইডি’র হেফাজত থেকে গৌতমের প্যারোলে মুক্তির নির্দেশ আসতেই সুপারের বলা উচিত ছিল, আসামি সিবিআইয়েরও হেফাজতে রয়েছেন। এই মর্মে সুপারের তরফে কোর্টে রিপোর্ট পেশ করার কথা। অথচ কিছুই করা হয়নি।

তাই গত ৯ ডিসেম্বর ভুবনেশ্বরের বিশেষ আদালতে বিচারক প্রশান্ত মিশ্রের এজলাসে সিবিআইয়ের কৌঁসুলি কালীচরণ মিশ্র অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার আইনের পথে তো চলেনইনি, বরং পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন। মামলাটির এক দফা শুনানিও হয়ে গিয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের কী বক্তব্য?

রাজ্যের কারা-কর্তারা আদালতের নির্দেশকেই ঢাল করছেন। ‘‘সাধারণত কোর্ট শর্তসাপেক্ষে প্যারোল দিলে আমরা আসামিকে ছেড়ে দিই। তাঁর নামে অন্য মামলা আছে কি না, সেটা এখানে বিচার্য নয়।’’— যুক্তি এক জেলকর্তার। তাঁদের দাবি, ওই সময়ে কোর্টের নির্দেশ পালন না-করলে আদালত অবমাননার দায়ে পড়তে হতে পারে।

এবং রোজ ভ্যালি কর্তার ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে বলে জেল-সূত্রের খবর। ওই কর্তার কথায়, ‘‘যে দিন গৌতম কুণ্ডুকে প্যারোলে ছাড়ার কথা, কোর্টের অর্ডার এসে পৌঁছয় তার আগের দিন সন্ধ্যায়। ফলে পর দিন সকালে ওঁকে ছাড়তেই হতো।’’ যদিও সিবিআইয়ের পাল্টা যুক্তি— আদালতকে সিবিআই হেফাজতের তথ্য জানালে অবমাননা হতো না।

৯ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্সি জেল থেকে বেরিয়ে গৌতম পঞ্চসায়রে নিজের ফ্ল্যাটে গিয়ে ওঠেন। তাঁর কৌঁসুলি বিপ্লব গোস্বামী বলেন, ‘‘গৌতমবাবুর মা বিভাদেবী আচমকা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাই উনি প্যারোল চান। ১১ ডিসেম্বর বিকেলে গৌতমবাবু জেলে ফিরে যান।’’

Goutam Kundu CBI Rose Valley
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy