ফৌজিদের জন্য সংরক্ষিত কামরাতেই ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল অমৃতসর এক্সপ্রেসে। তবে পালানোর সময় অভিযুক্ত দুই জওয়ানের ছবি উঠে গিয়েছিল মধুপুর স্টেশনের সিসিটিভি ক্যামেরায়। সেই নজরদারি-ক্যামেরার ছবি দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে নির্যাতিতা নাবালিকা। পরবর্তীকালে রেল বাজেটে ট্রেনের কামরায় সিসিটিভি বসানোর কথা জানান রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু।
পশ্চিমবঙ্গের ট্রেনে সেই ব্যবস্থা চালু হয়নি। তবে এ বার রাজ্যের বাসগুলিতে নজরদারি ক্যামেরা বসানোর তোড়জোড় শুরু হল। যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে এই পদক্ষেপ করতে চলেছে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (এসবিএসটিসি)।
সোমবার এসবিএসটিসি-র মেদিনীপুর ডিপো পরিদর্শনে এসে সংস্থার চেয়ারম্যান তমোনাশ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা বাসে সিসিটিভি বসানোর ব্যবস্থা করছি। শীঘ্রই এটা করা হবে। বাসের মধ্যে অনভিপ্রেত কিছু হলে তা ছবিতে ধরা থাকবে।
এর ফলে একদিকে যেমন অপরাধমূলক কাজের প্রবণতা কমবে, তেমনই দ্রুত অপরাধীদের চিহ্ণিত করা সম্ভব হবে।’’ সরকারি বাসে টিকিট না দিয়ে ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ হামেশাই ওঠে। ফলে, বঞ্চিত হয় সরকার। ক্যামেরা বসলে সেই প্রবণতা ঠেকানো যাবে।
রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই সিসিটিভি ক্যামেরা, জিপিএস ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। ক্যামেরা বসলে বাসভাড়ায় ফাঁকি আটকানো যাবে।’’
ছিঁচকে চোর বা পকেটমারের উপদ্রব বাসযাত্রীদের চেনা। তবে বাসযাত্রায় মেয়েদের নিরাপত্তা যে কতটা ঠুনকো তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে দিল্লির ‘নির্ভয়া কাণ্ড’। ফলে, এ রাজ্যেও বাসের মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হলে যাত্রা সুরক্ষিত হবে বলেই আশা।
ইতিমধ্যে ওলা, উবেরের মতো সংস্থার গাড়িগুলিতে নজরদারি-ক্যামেরা বসাতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। ওলা-উবের সংস্থা সূত্রে খবর, পরীক্ষামূলক ভাবে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি গাড়িতে ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
এসবিএসটিসি সূত্রে খবর, বাসের দরজার সামনে পরীক্ষামূলক ভাবে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। তবে বাসের মধ্যে কোনও ভাবেই যাত্রীদের উপরে নজরদারি চালানো হবে না। এমন ভাবে ক্যামেরা বসানো হবে যাতে কোন স্টপে কে ওঠা-নামা করছে, তা পরিষ্কার বোঝা যায়। এসবিএসটিসি-র প্রায় সাড়ে চারশো বাস রয়েছে।
এর মধ্যে কোন রুটের কতগুলো বাসে সিসিটিভি বসানো হবে, আগামী ২৫ জুন সংস্থার বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হবে।
তমোনাশবাবুর কথায়, “খরচের ব্যাপারটা মাথায় রাখতে হবে। তবে পর্যায়ক্রমে সব বাসেই সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে।’’ সরকারি বাসে জিপিএস ব্যবস্থা চালুর জন্য দুর্গাপুর এবং বেলঘরিয়ায় দু’টি কন্ট্রোল রুম হবে বলেও জানান চেয়ারম্যান। তমোনাশবাবু বলেন, ‘‘নতুন এই প্রযুক্তিতে কোন বাস কোথায় রয়েছে তা জানা যাবে।’’
এসবিএসটিসি-র মেদিনীপুর ডিপো পরিদর্শনে তমোনাশবাবুর সঙ্গে ছিলেন সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর শুভেন্দু বসু। ডিপো চত্বরে বাস চালকদের বিশ্রামকক্ষের উদ্বোধন হয়েছে এ দিন। এখন এসবিএসটিসি-র ১২টি বাতানুকূল বাস রয়েছে। আরও ৫টি বাতানুকূল বাসের বরাত দেওয়া হয়েছে বলে জানান সংস্থার চেয়ারম্যান তমোনাশবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘যাত্রীরা এখন পয়সা খরচ করতে রাজি। তাঁরা স্বাচ্ছন্দ্য চান। এখন দিঘার মতো রুটে এসি বাস চলছে। যাত্রীও হচ্ছে।”
সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘বাস পরিষেবা নিয়ে কোনও অভিযোগ এলে দ্রুত তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। গড়িমসি চলবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy