Advertisement
E-Paper

একশো দিনের কাজে নানা শর্ত কেন্দ্রের

এ বার থেকে একশো দিনের কাজের টাকা সরাসরি শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। নবান্নের খবর, এত দিন একশো দিনের টাকা রাজ্য সরকারকে পাঠাতো দিল্লি। রাজ্যই প্রকল্পে যুক্ত শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্টে তা জমা করত। কেন্দ্রের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী এখন থেকে সরাসরি সেই টাকা অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৩

এ বার থেকে একশো দিনের কাজের টাকা সরাসরি শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক।

নবান্নের খবর, এত দিন একশো দিনের টাকা রাজ্য সরকারকে পাঠাতো দিল্লি। রাজ্যই প্রকল্পে যুক্ত শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্টে তা জমা করত। কেন্দ্রের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী এখন থেকে সরাসরি সেই টাকা অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে। রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় কেন্দ্রের এই উদ্যোগকে ‘স্বাগত’ জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কেন্দ্র সরাসরি টাকা পাঠিয়ে দিলে মজুরি বণ্টনে সমস্যা কমবে, সময়ও কম লাগবে।’’

রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, একশো দিনের কাজে কয়েকটি শর্ত চাপিয়ে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। শর্ত পূরণ না হলে প্রকল্পের টাকা পেতে যে অসুবিধা হবে, পরোক্ষে সেই হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, শর্ত দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের কিছু বকেয়াও মিটিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। দেড় বছর ধরে প্রায় ১৭০০ কোটি টাকা বকেয়া ছিল। বার বার এই নিয়ে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বকেয়ার প্রায় ৯০০ কোটি টাকা মিটিয়ে দিয়েছে মন্ত্রক।

শর্তের কথা জানিয়ে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রবি ও সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বানতলার একটি রিসর্টে কর্মশালা করেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী। সেখানে দার্জিলিং ও মুর্শিদাবাদ ছাড়া সব জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ)-রা হাজির ছিলেন। বৈঠকে কেন্দ্রের শর্ত মেনে চলার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।

কী সেই শর্ত?

পঞ্চায়েত দফতরের এক মুখপাত্র জানান, শুধু গ্রামীণ রাস্তাঘাট সংস্কারে থেমে না-থেকে স্থায়ী সম্পদ তৈরিতে জোর দিতে বলেছে কেন্দ্র। এবং সেই কাজ কতটা হল— সেই ছবি আপলোড করে পাঠাতে বলা হয়েছে। কেন এই নির্দেশ? ওই কর্তা জানান, একশো দিনের কাজ নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে কেন্দ্রের। যেমন, কলকাতা-সহ বিভিন্ন পুর এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের কাজে নিয়োগপ্রাপ্ত অস্থায়ী কর্মীদের দৈনিক মজুরি দেওয়া হচ্ছে এই প্রকল্প থেকে। আবার, এই প্রকল্পের টাকায় রাস্তা সাফাইয়ের মতো কাজও হচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় পরিষেবামুলক কাজে খরচ করা হচ্ছে একশো দিনের টাকা। কেন্দ্রের বক্তব্য, এই সব করে সম্পদ সৃষ্টি হয় না। অথচ সম্পদ সৃষ্টিই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। যেমন রাস্তা তৈরি, বাঁধ নির্মাণ, জলাধার তৈরি, পুকুর কাটা, কালভার্ট নির্মাণ ইত্যাদি।

দিল্লির আরও একটি বড় অভিযোগ হল, কাজ ও শ্রমের পরিমাণের মধ্যে সমন্বয় না-থাকা। রাজ্যের ওই কর্তা জানান, অনেক ক্ষেত্রে প্রকল্পে যুক্ত ব্যক্তিরা দৈনিক কত ক্ষণ কাজ করছেন, তা দেখা হয় না। এর ফলে দু’দিনের কাজ শেষ করতে সময় নেওয়া হচ্ছে চার দিন। এবং এই ভাবে শ্রমদিবস বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে। দিল্লির সাফ কথা, দৈনিক কে, কত ঘণ্টা কাজ করছেন, একটা কাজ শেষ করতে ন্যূনতম কত সময় লাগা উচিত, তা বিশদে জানিয়ে রিপোর্ট পাঠাতে হবে রাজ্যকে। মন্ত্রক সেই রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে তবেই টাকা পাঠাবে। এ ক্ষেত্রে কোনও গাফিলতি হলে বরাদ্দ কাটছাটের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রের নতুন নির্দেশিকায় অবশ্য খারাপ কিছু দেখছেন না পঞ্চায়েত মন্ত্রী। বরং তাঁর কথায়, ‘‘এতে একশো দিনের কাজে স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।’’ সুব্রতবাবুর কথায়, নতুন নির্দেশিকায় কাজের মুল্যায়ন করে শংসাপত্র দেওয়া হবে। তাতে টাকা পেতেও সুবিধা হবে।

Centre west bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy