Advertisement
০৫ মে ২০২৪

প্রাথমিক শিক্ষায় অপসারিত অন্য চার চেয়ারম্যানও

আগেই সরানো হয়েছিল ১৪ জনকে। বাকি ছিলেন পাঁচ জন। সেই পাঁচ জনের মধ্যে কলকাতা বাদে বাকি চারটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানদের বুধবার সরিয়ে দিল রাজ্য সরকার। এঁরা হলেন পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া এবং হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৪ ০৩:২৫
Share: Save:

আগেই সরানো হয়েছিল ১৪ জনকে। বাকি ছিলেন পাঁচ জন। সেই পাঁচ জনের মধ্যে কলকাতা বাদে বাকি চারটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানদের বুধবার সরিয়ে দিল রাজ্য সরকার। এঁরা হলেন পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া এবং হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান। তাঁদের সরানোর কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে কলকাতা জেলার চেয়ারম্যানকে কেন সরানো হল না, সেই বিষয়ে কিছুই বলতে চাননি মন্ত্রী।

গত শুক্রবার রাজ্যের ১৪টি জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানদের পদত্যাগের নির্দেশ দেয় সরকার। তাঁদের পদত্যাগপত্র আসতে শুরু করেছে স্কুলশিক্ষা দফতরে। তাঁদের জায়গায় কারা আসবেন, সব দিক খতিয়ে দেখে, সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করে সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে বলে ওই দফতর সূত্রের খবর। ওই ১৪ জনকে সরানোর সঙ্গে সঙ্গেই স্কুলশিক্ষা দফতর জানিয়েছিল, বাকিদেরও সরতে হবে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার বাকি চার জনকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, কলকাতা জেলা সংসদের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্নার কাজে সরকার সন্তুষ্ট। সেই জন্য তাঁকে এখনই সরানোর কথা ভাবা হচ্ছে না। কার্তিকবাবু বাম আমলে ওই পদে মনোনীত হন।

কার্তিকবাবু ছাড়া অন্য সব জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকেই তৃণমূল আমলে নিয়োগ করা হয়েছিল। তাঁরা নিযুক্ত হয়েছিলেন নয়া জমানার প্রথম স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের আমলে। তাঁর পরের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সব চেয়ারম্যানকেই রেখে দিয়েছিলেন। কিন্তু পার্থবাবু শিক্ষা দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার পরে ১৮ জন চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দেওয়া হল। ২০১২ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা টেট যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে সামলাতে না-পারার জন্যই তাঁদের সরতে হল বলে শিক্ষা দফতরের কর্তাদের একাংশের মত।

যে-সব চেয়ারম্যানকে এ দিন সরানো হয়েছে, তাঁরা এখনও এই ব্যাপারে সরকারি নির্দেশ সংবলিত চিঠি পাননি বলেই জানান। হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান পরেশ সামন্ত জানান, খবরটি তিনি শুনেছেন। চিঠি হাতে পাননি ঠিকই। তবে আজ, বৃহস্পতিবার তিনি ওই দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। পূর্ব মেদিনীপুরের গোপাল সাহুর কথায়, “চিঠি পাইনি। সেটা পেলেই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে দায়িত্ব ছেড়ে দেব। এই কঠিন দায়িত্ব থেকে আমাকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য শিক্ষা দফতরকে ধন্যবাদ।”

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য ও স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বুধবার বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবুর ঘরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। জেলা সংসদের চেয়ারম্যানদের সরানোর বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে মন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে বলে শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর। পরবর্তী টেট নিয়ে দায়ের হওয়া মামলার অগ্রগতি এবং কী ভাবে পুরো বিষয়টির নিষ্পত্তি করা যায়, মন্ত্রী তা দেখার দায়িত্ব মানিকবাবুকে দিয়েছেন বলে ওই সূত্রে জানানো হয়েছে।

২০ জুন জেলা চেয়ারম্যানদের অপসারণের সঙ্গে সঙ্গেই জল্পনা তৈরি হয়েছিল, মানিকবাবুকেও সভাপতির পদ থেকে সরানো হবে। তবে এ দিন শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত তাঁকে সরানো হচ্ছে না। তাঁকে রেহাই দেওয়া হচ্ছে কেন?

সরাসরি জবাব মেলেনি। তবে স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “আমরা হৃৎপিণ্ডটাকে সরাতে চাই না। খারাপ হয়ে যাওয়া অন্য অঙ্গগুলি মেরামত করে নিলেই চলবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE