মুখ্যমন্ত্রীদের এড়িয়ে সরাসরি মুখ্যসচিবদের বৈঠকে ডেকেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। নীতি আয়োগের মঞ্চকে ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা সেই বৈঠকে গরহাজির রইলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব মলয় দে। দিল্লিতে বসে রাজ্যগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে মোদীর এই চেষ্টা তিনি যে ভাল ভাবে নিচ্ছেন না, তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্য সরকারের মতে, মোদী সরকার মুখে কেন্দ্র-রাজ্য সুসম্পর্ক, বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে প্রতিযেগিতার মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, লগ্নির সহায়ক পরিবেশ তৈরির কথা বলছে। কিন্তু সুকৌশলে দেখাতে চাইছে, একমাত্র বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিই ভাল কাজ করেছে। সেই অজুহাতেই অন্য রাজ্যের কাজে নাক গলাতে চাইছে। এমনিতেই দার্জিলিং থেকে বসিরহাটের অশান্তিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধেই চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন মমতা। আজও মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। এই সঙ্ঘাতের পরিবেশে রাজ্যের মুখ্যসচিব মোদীর বৈঠকে হাজির হলেই আশ্চর্যের ঘটনা ঘটত বলেই নবান্নের কর্তাদের মত। মমতার সরকার বরাবরই কেন্দ্রের এই ‘পিএম টু ডিএম’ বা ‘মাইনাস সিএম’ পরিকল্পনা নিয়ে আপত্তি তুলে এসেছে। রাজ্যকে এড়িয়ে একশো দিনের কাজের মজুরি বা বিভিন্ন প্রকল্পের ভর্তুকি সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো নিয়েও আপত্তি তুলেছেন মমতা।
গত তিন বছরে এই প্রথম মুখ্যসচিবদের দিল্লিতে ডেকে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যগুলির অর্থ, পরিকল্পনা, কৃষি, শিল্প সচিবদেরও ডাকা হয়। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব করেছেন স্বাস্থ্যসচিব অনিল বর্মা। নীতি আয়োগের যুক্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ডিজিটাল পরিষেবা বা লগ্নির সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে যে সব রাজ্য উল্লেখযোগ্য কাজ করছে, তা অন্যদের সামনে তুলে ধরাই বৈঠকের উদ্দেশ্য। কেন্দ্র এ ক্ষেত্রে রাজ্যের উপরই নির্ভরশীল। সেই কারণেই এ সব ক্ষেত্রে কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে তার তালিকা করেছে আয়োগ।
এখানেই মোদী সরকারের চাতুরি দেখছে নবান্ন। যুক্তি হল, সুকৌশলে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিকে সেরা দেখানোর উদ্দেশ্যেই এই তালিকা। ক্যাবিনেট সচিব পি কে সিনহা অবশ্য বৈঠকে যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘নীতি আয়োগ যে ভাবে রাজ্যগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা গড়ে তুলতে চাইছে, তা খুবই প্রয়োজনীয়। রাজ্যগুলি জেলাগুলির মধ্যেও এমন প্রতিযোগিতা শুরু করাতে পারে।’’
মুখ্যসচিবের দিল্লি না যাওয়া নিয়ে বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন। তিনি ও তাঁর সরকারই কেন্দ্রের সঙ্গে অসহযোগিতা করছেন, মুখ্যসচিবের দিল্লি না যাওয়াই তার প্রমাণ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy