মায়ের কোলে নিশ্চিন্তেই ছিল একরত্তি শিশুটি। চলন্ত সিঁড়ি (এসক্যালেটর) দিয়ে নামার সময় আচমকাই কোল থেকে ছিটকে পড়ে যায় সে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে প্রথমে নাগেরবাজারের নার্সিংহোমে, পরে ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ছ’মাসের খুশি।
ঘটনাস্থল কলকাতা বিমানবন্দর। সময় ভোর সাড়ে ৫টা। দীনেশ ও সঙ্গীতা সোনির মেয়ে খুশি। বাড়ি রাজস্থানে। দীনেশ সিআরপি জওয়ান। কর্মসূত্রে শিলচরের বাসিন্দা। রাজস্থানে ছুটি কাটিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন শিলচরের বিমান ধরবেন বলে। ভোর ৬টা ২০ মিনিটে স্পাইসজেটের উড়ান ছিল তাঁদের। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সোনি পরিবার দোতলায় চেক ইন সেরে একতলায় যাওয়ার জন্য এসকালেটরে উঠেছিলেন। তার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ওই দুর্ঘটনা!
বিমানবন্দরের কর্মীদের একাংশের সন্দেহ, তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়েই এই বিপত্তি। তাঁরা জানান, বিমানবন্দরের একতলায় ২৩এ থেকে ২৩ডি— চারটি গেট রয়েছে। কিন্তু অনেকেই ভুল করে দোতলায় ২৩ নম্বর গেটের সামনে অপেক্ষা করেন। পরে ভুল বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি নীচে নামার চেষ্টা করেন। দোতলা এবং একতলার মধ্যে যাতায়াতের জন্য লিফট থাকলেও ভিড়ের জন্য এসকালেটরে ওঠেন। দীনেশ-সঙ্গীতারদের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
বিমানবন্দরের এক অফিসারের কথায়, ‘‘এই ভুল বোঝাবুঝির জন্য ইদানীং মাঝে-মধ্যেই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। গত নভেম্বরেই এই চলন্ত সিঁড়ি থেকে এক বৃদ্ধা পড়ে যান। কাছেই থাকা এক সিআইএসএফ জওয়ান ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করায় বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছিল।’’
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার পর প্রথমে সেখানেই শিশুটিকে পরীক্ষা করেন চিকিৎসক পি কে দাস। তখন শিশুটির কান থেকে রক্ত ঝরছিল। নাড়িও পাওয়া যাচ্ছিল না। চিকিৎসক শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। খুশিকে নাগেরবাজারের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা গুরুতর দেখে অন্য হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়। এর পর বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানান, খুশির মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। তাকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। সেই সময় তার কার্ডিয়াক অ্যাটাক হয়। সকাল সাড়ে ৭টায় সব শেষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy