Advertisement
০২ মে ২০২৪

চুক্তির বিজ্ঞপ্তি, খুশি ছিটমহল

রাতারাতি বদলে গিয়েছে ছবিটা। কেউ মেতে উঠেছেন নাচে। কেউ বা আবার মেতে উঠেছেন আবির খেলায়। কোথাও চলছে মিষ্টি বিলি। কারও আবার আনন্দের অভিব্যক্তি প্রকাশ পাচ্ছে চোখের জলে। কোথাও আবার পতাকা তুলে ধরে নিজেদের পরিচয় জানাচ্ছেন ছিটমহলের বাসিন্দারা। স্থল চুক্তি সীমান্ত বিল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করতেই উৎসব শুরু হয়েছে ছিটমহলগুলিতে।

ছিটমহলে আবির খেলা।—নিজস্ব চিত্র।

ছিটমহলে আবির খেলা।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৫ ০৩:৪৯
Share: Save:

রাতারাতি বদলে গিয়েছে ছবিটা। কেউ মেতে উঠেছেন নাচে। কেউ বা আবার মেতে উঠেছেন আবির খেলায়। কোথাও চলছে মিষ্টি বিলি। কারও আবার আনন্দের অভিব্যক্তি প্রকাশ পাচ্ছে চোখের জলে। কোথাও আবার পতাকা তুলে ধরে নিজেদের পরিচয় জানাচ্ছেন ছিটমহলের বাসিন্দারা। স্থল চুক্তি সীমান্ত বিল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করতেই উৎসব শুরু হয়েছে ছিটমহলগুলিতে। বাসিন্দারা বলেন, “একটু একটু করে মুক্তির স্বাদ পাচ্ছিলাম ক’দিন ধরে। আজ যেন মুক্তি পেয়েছি। আর আমাদের পরিচয়হীন হয়ে বেঁচে থাকতে হবে না।”

ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহাল বিনিময় কমিটির সহকারি সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “আজ স্বাধীনতা। আজ থেকে আর ছিটমহল বলে কিছু থাকল না। এখন শুধু বিনিময়ের অপেক্ষা। আমরা চাই দ্রুত বিনিময়ের কাজও শেষ হোক। উন্নয়নের কাজ শুরু হোক ছিটমহলগুলিতে।” এ দিনই ছিটমহলে উন্নয়নের রূপরেখা নিয়ে কোচবিহার জেলা প্রশাসন বৈঠকে সামিল হন। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “ছিটমহল সমস্যার সমাধান হতে চলেছে। তাই ওই এলাকায় কীভাবে উন্নয়ন হবে তা নিয়ে আলোচনা করে পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে।”

সংসদে স্থল সীমান্ত চুক্তি বিল পাশ হওয়ার পর থেকেই ছিটমহলগুলিতে অপেখ্যায় দিন গোনা শুরু হয়। আগামী ৬ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমেই এই বিনিময়ের কাজ শুরু হবে বলে আশাবাদী ছিটমহলের বাসিন্দারা। এর মধ্যেই এ দিন স্থল সীমান্ত চুক্তি বিল নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর থেকে তাঁরা আর আনন্দ ধরে রাখতে পারেনি। কমিটির দাবি, বিজ্ঞপ্তি হওয়া মানেই ওই বিল আইনে পরিণত হয়েছে। সকাল ১১ টা নাগাদ ওই খবর দিনহাটার ছিটমহল পোয়াতের কুঠিতে পৌঁছতেই আবির খেলা শুরু হয়। সাউন্ড বক্স বাজিয়ে আনন্দে মাতেন ওই ছিটমহলের সব বয়সের মানুষ। সাহেব আলী, আবুল হোসেন কাজি, মঞ্জুর আলি, রহমান আলিরা বলেন, “কত বছর ধরে অপেক্ষা করছি। তা যেন শেষই হচ্ছিল না। আজ মনে হচ্ছে স্বাধীন হলাম আমরা।”

ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে ছিটমহলের সংখ্যা ১৬২। এর মধ্যে বাংলাদেশ ভূখন্ড ঘেরা ভারতীয় ছিটমহলের সংখ্যা রয়েছে ১১১ টি। ভারতীয় ভূখণ্ড ঘেরা বাংলাদেশি ছিটমহলের সংখ্যা ৫১ টি। ভারতীয় ছিটমহলে ৩৭ হাজারের কিছু বেশি মানুষ বসবাস করেন। বাংলাদেশি ছিটমহলে ১৪ হাজারের কিছু বেশি মানুষ বসবাস করেন। নাগরিকত্ব না থাকায় জীবন যাত্রার ন্যূনতম সুযোগ থেকেও এতদিন বঞ্চিত ছিলেন তাঁরা। এবার তাই সবকিছুকে নতুন করে দেখার অপেক্ষা শুরু হয়ে গেছে এতদিনের এই ব্রাত্যভূমিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE