Advertisement
E-Paper

পলাতক দেখিয়ে ভারতীর নামে সমন জারির আর্জি

আদালতে গোয়েন্দাদের আবেদন, প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে ‘পলাতক আসামি’ ঘোষণা করা হোক।

শুভাশিস ঘটক ও অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৮ ০৪:২৩
ভারতী ঘোষ। ফাইল চিত্র।

ভারতী ঘোষ। ফাইল চিত্র।

উচ্চবাচ্য হয়নি বেশ কিছু দিন। ১৪৯ দিনের মাথায়, গত শুক্রবার হঠাৎই তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে সিআইডি। আদালতে গোয়েন্দাদের আবেদন, প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে ‘পলাতক আসামি’ ঘোষণা করা হোক। একই সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানায় সোনা লুঠ ও প্রতারণার মামলার মূল অভিযুক্ত ভারতীর নামে সমন জারির আবেদন জানানো হয়েছে।

ঘাটাল আদালতে পেশ করা চার্জশিটেই বিচারকের কাছে এই জোড়া আবেদন জানিয়েছে সিআইডি। তাদের বক্তব্য, গত চার মাসে বিভিন্ন রাজ্যে বারবার হানা দিয়েও ভারতীর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তিনি তদন্তে কোনও রকম সহযোগিতা করছেন না। তাঁর দেহরক্ষী সুজিত মণ্ডলকেও গ্রেফতার করা যায়নি। এই অবস্থায় সুজিতকেও ‘পলাতক আসামি’ ঘোষণা করে যাতে সমন জারি করা হয়, সেই আবেদন জানিয়েছেন তদন্তকারী গোয়েন্দারা।

সিআইডি-র এক কর্তা জানান, সমন জারি হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে হবে। না-করলে অভিযুক্তের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা যেতে পারে। আদালত সমন জারি করলে প্রকাশ্যে বিভিন্ন জায়গায় সেই সমনের নোটিস পোস্টারের মতো করে সেঁটে দেওয়া হয়। তাতে অভিযুক্তের ছবিও দেওয়া থাকে। যার অর্থ, আদালত সমন জারি করলে বিভিন্ন জায়গায় ভারতীর ছবি পোস্টার হিসেবে দেখা যাবে।

সিআইডি-র দাবি, তদন্ত চলাকালীন বেশ কয়েক বার দিল্লি, গুজরাত-সহ বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়েও তদন্তকারীরা ভারতীর নাগাল পাননি। অভিযোগ, দাসপুর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়ার কয়েক দিন আগেই রাজ্য ছাড়েন ভারতী। পরে বিভিন্ন ‘ভয়েস মেসেজ’ মারফত ‘সিআইডি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে’ বলে অভিযোগও করেন তিনি। এক সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ এই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে আচমকাই কেন এমন মামলা করা হল, তা নিয়ে পুলিশ মহলে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে।

ভারতীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৬ সালে নোটবন্দির সময় পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার থাকাকালীন তিনি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক জন পুলিশ অফিসার পুরনো হাজার ও পাঁচশো টাকার নোট দিয়ে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে প্রায় ৭০ কোটি টাকার সোনা কিনেছিলেন। ওই সময় অভিযোগ ওঠে, নিজের ক্ষমতাবলে ভারতী ও তাঁর সঙ্গীরা বহু লোকের কাছ থেকে সোনা নিয়েও টাকা দেননি। এই মর্মে দাসপুরের এক ব্যবসায়ী থানায় অভিযোগ করেন।

অভিযোগ, ভারতীর স্বামী এমভি রাজু এবং তাঁর কলকাতার মাদুরদহের ফ্ল্যাটের কেয়ারটেকার রাজমঙ্গল সিংহও ওই সোনা লুঠ ও প্রতারণা চক্রে জড়িত। তদন্তে নেমে মাদুরদহ ও নাকতলার ফ্ল্যাট থেকে সাড়ে চার কোটি নগদ টাকা ও সোনার গয়না উদ্ধার করে সিআইডি। রাজু ও রাজমঙ্গল সেই সোনা ও টাকা ফ্ল্যাটে লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ।

তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, সোনা লুঠ ও প্রতারণা সব তথ্যপ্রমাণই সিআইডি-র হাতে আছে। ভারতীই ওই ঘটনার মূল চক্রী বলে চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে।

ভারতীর এক আইনজীবী বলেন, ‘‘আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে। ভারতীর স্বামী ও কেয়ারটেকার কোনও ভাবেই সোনা লুঠ ও প্রতারণার সঙ্গে জড়িত নন। উচ্চ আদালতে সবই জানানো হবে। আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’

Bharati Ghosh Extortion Case CID
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy