Advertisement
E-Paper

যে রাস্তা সারাইয়ে বাধা, সেই রাস্তাই সারানোর দাবি

তৃণমূল কংগ্রেসের বাধায় বছর তিনেক ধরে সংস্কারের কাজ শিকেয় উঠেছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের। আবার সেই রাস্তার হাল ফেরানোর আর্জি নিয়েই কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে আজ দেখা করল তৃণমূলের একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দল। মন্ত্রীকে জানানো হল, এই সড়কের হাল এতটাই খারাপ যে নিত্য দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩১

তৃণমূল কংগ্রেসের বাধায় বছর তিনেক ধরে সংস্কারের কাজ শিকেয় উঠেছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের। আবার সেই রাস্তার হাল ফেরানোর আর্জি নিয়েই কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে আজ দেখা করল তৃণমূলের একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দল। মন্ত্রীকে জানানো হল, এই সড়কের হাল এতটাই খারাপ যে নিত্য দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।

কেন্দ্রের অভিযোগ, ওই সড়কের পাশে জমি অধিগ্রহণ এবং জবরদখল উচ্ছেদে হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে রাজ্য। ফলে সংস্কারের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গত মাসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি লিখে এই সমস্যাগুলির সমাধান চান গডকড়ী। গডকড়ী এ দিন বলেন, “জমি অধিগ্রহণ এবং আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়। এ ব্যাপারে রাজ্য এগিয়ে এলে কেন্দ্রের তরফে সহযোগিতায় ত্রুটি হবে না। এ কথা জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের সাংসদদের।”

তৃণমূল সূত্রেও আজ দাবি করা হয়েছে, আজকের বৈঠকে গডকড়ী রাজ্যকে সহায়তার আশ্বাসই দিয়েছেন। সমস্যাগুলি খতিয়ে দেখে শীঘ্রই প্রাথমিক মেরামতির কাজ শুরু করা হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী। লোকসভায় তৃণমূলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যে দলটি গডকড়ীর সঙ্গে দেখা করতে যায়, তার মধ্যে ছিলেন সুলতান আহমেদ, কাকলি ঘোষদস্তিদার, দীনেশ ত্রিবেদী, রত্না দে নাগ, শতাব্দী রায়, অপরূপা পোদ্দার প্রমুখ। পরে সুদীপ বলেন, ৩৪ নম্বর ছাড়া ৬ নম্বর জাতীয় সড়কটি নিয়েও কথা হয়েছে। তাঁর কথায়, “৬ নম্বর সড়কের খড়্গপুর থেকে চিরচিরা পর্যন্ত রাস্তাটি ঝাড়খণ্ড সীমানা সংলগ্ন। জঙ্গল মহলের পাশ দিয়ে যাওয়া এই রাস্তার উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি ৩৪ নম্বরে বারাসত থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত সারাইয়ের কাজ অত্যন্ত ঢিমেতালে হচ্ছে। সড়কের খারাপ অবস্থার জন্য প্রায়ই দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটছে।” সুদীপের দাবি, গডকড়ী তাঁদের বলেছেন, মমতা দিল্লি এলে তিনি অফিসারদের নিয়ে বসে সমাধানসূত্র খুঁজবেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে রাজ্যে আমন্ত্রণ জানালেও মন্ত্রী গিয়ে সড়ক সংলগ্ন জেলাশাসকদের নিয়ে বসতে আগ্রহী।

কেন্দ্রীয় সড়ক মন্ত্রকের দায়িত্ব নেওয়ার পর দু’দিন ধরে দিল্লিতে রাজ্যওয়াড়ি পূর্ত সচিবদের বৈঠকে ডেকেছিলেন গডকড়ী। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ত কর্তাদের সঙ্গেও তিনি বৈঠক করেছিলেন। গডকড়ী জানিয়েছিলেন, ইস্ট ওয়েস্ট করিডর, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ, বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ-সহ প্রতিটি প্রকল্প ধরে ধরে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু দেখা গিয়েছে, প্রতি ক্ষেত্রেই সমস্যার রাশ রয়েছে রাজ্যের হাতে। মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লিখেছিলেন, “পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় সড়ক নির্মাণের বিভিন্ন প্রকল্প সাত থেকে দশ বছর ধরে আটকে রয়েছে। এ ব্যাপারে মূল সমস্যা দুটি জমি অধিগ্রহণ এবং রাস্তার পাশের জবরদখল উচ্ছেদ। আমি চাই মুখ্যমন্ত্রী নিজে গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখুন। রাজ্য সহযোগিতা করলে কেন্দ্র দু’হাত বাড়িয়ে পরিকাঠামো নির্মাণ করবে।

রাজ্যকে এ জন্য টাকার চিন্তা করতে হবে না।”

কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের ডালখোলা পর্যন্ত ৪৫৩ কিলোমিটার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কটি চার লেন করার জন্য ২০০৯ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে ২০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। প্রায় গোটা রাস্তার কাজ হয়ে গেলেও উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের সন্তোষপুর মোড় থেকে আমডাঙা থানার রাজবেড়িয়া পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার রাস্তার কিছু এলাকার কাজ থমকে রয়েছে। জমি মাপজোক করতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও দোকানির কাছে বাধা পেয়ে গত চার বছরে ১২ বার ফিরে এসেছেন সরকারি কর্মীরা। বিভিন্ন দলের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে ২০ বার বৈঠক করেও মূলত তৃণমূলের অনড় মনোভাবে সমস্যা মেটেনি। এ ব্যাপারে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সাফ কথা “জোর করে জমি নেওয়া বা উচ্ছেদ করা যাবে না। কেউ স্বেচ্ছায় জমি দিলে কাজ হবে। এটাই রাজ্য সরকারের নীতি।”

claim repairing nh 34
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy