Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গঙ্গারামপুরে গণধর্ষণ করে খুন তরুণী, স্বীকার জেরায়

ঘটনার দিন সন্ধে থেকেই নিখোঁজ ছিলেন অসুস্থ ওই তরুণী। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওষুধ আনতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তার পর আর ফেরেননি।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৩৫
Share: Save:

গঙ্গারামপুর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় নয়া মোড়। পুলিশ সূত্রের খবর, ৬ সেপ্টেম্বরের রাতে শুকদেবপুরের তরুণীকে গণধর্ষণ করেছিল তাঁর পরিচিত যুবক ও তার দুই বন্ধু। গণধর্ষণের পর তিন জন মিলেই ওই তরুণীকে খুন করে। অভিযুক্ত ওই তিন জনের মধ্যে দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। টানা জেরায় দু’জনেই গণধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

ঘটনার দিন সন্ধে থেকেই নিখোঁজ ছিলেন অসুস্থ ওই তরুণী। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওষুধ আনতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তার পর আর ফেরেননি। পর দিন, অর্থাৎ ৭ সেপ্টেম্বর, শনিবার সকালে ওই তরুণীর দেহ মেলে জাহাঙ্গিরপুরে পুনর্ভবা নদীর ধারে। ঘটনার পাঁচ দিন পর, গত বুধবার গ্রেফতার হয় তরুণীর পরিচিত এক যুবক। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওই যুবক কালদিঘির এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মী। অসুস্থতার কারণে পরীক্ষানিরীক্ষার সূত্রে ওই তরুণীর যাতায়াত ছিল ওই সেন্টারে। সেখানেই ওই যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। দু’জনের পরিচয়ের কথা তরুণীর পরিবারও জানত। যদিও ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার আগে ওই তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল ওই যুবক। তাতে রাজি হননি তিনি। এর পর ওই দিন সন্ধেয় ওই তরুণীকে ডেকে পাঠায় ওই যুবক। নিয়ে যায় পুনর্ভবা নদীর ধারে কোনও নির্জন জায়গায়। সেখানে ছিল ওই যুবকের দুই বন্ধুও, যাদের একজন ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তার সহকর্মী। নদীর ধারে তিন জন মিলে তরুণীকে ধর্ষণ করে। এর পরে প্রায় অচেতন তরুণীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে ফেলে রাখে। খুনের পর অভিযুক্তেরা তরুণীর পোশাক খুলে নেয়। সেই পোশাক ও নিজেদের রক্তমাখা পোশাক একটি জায়গায় এনে পুড়িয়ে ফেলে তারা।

অবশ্য পুলিশ এখনও গণধর্ষণ নিয়ে সরাসরি কিছু বলেনি। তারা এখন নির্যাতিতার মেডিক্যাল রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে। আইসি পূর্ণেন্দু কুণ্ডু বলেন, ‘‘এখন আমরা মেডিক্যাল রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে। রিপোর্ট পেলেই ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব। তার আগে নয়।’’

এ দিকে, ঘটনার পর থেকেই নির্যাতিতার বাবা-মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কয়েক দিন ধরে প্রবল জ্বরে আক্রান্ত তাঁরা। স্থানীয় প্রশাসন তাঁদের চিকিৎসার জন্য গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করাতে উদ্যোগী হয়েছে। পাশাপাশি, তাঁদের জন্য চাল-ডাল, কম্বল, পোশাক দেওয়ার পরিকল্পনাও নিয়েছে প্রশাসন। মহকুমাশাসক দেবাঞ্জন রায় বলেন, ‘‘ওঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরিকল্পনা নিয়েছি। ওঁরা যদি চান, তাহলে স্পেশাল কেয়ারে ওঁদের রেখে চিকিৎসা করা হবে। এ ছাড়া, প্রাথমিক ভাবে ওঁদের কিছু সাহায্যও দেওয়া হচ্ছে। সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে পাকা বাড়ি তৈরির প্রকল্পের মাধ্যমেও যাতে সাহায্য করা যায় সেটা দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Gangarampur Gang Rape Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE