রাজ্যে সরকারের ঘোষিত গ্রেড পে অনুযায়ী অগস্ট থেকেই প্রশিক্ষিত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ৩৬০০ টাকা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই বিষয়ে কোনও নির্দিষ্ট নির্দেশিকা এখনও জেলাগুলিতে পৌঁছয়নি।
অন্য দিকে, গত সপ্তাহে রাজ্যে কলেজের আংশিক সময়ের শিক্ষক, চুক্তিভিত্তিক পূর্ণ সময়ের শিক্ষক ও অতিথি শিক্ষকের পদ তুলে দিয়ে ওই সব শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ‘স্টেট এডেড কলেজ টিচার্স’ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই বিষয়েও সরকারি বিজ্ঞপ্তি বেরোয়নি এখনও।
এই নিয়ে ওই দুই স্তরের শিক্ষক সংগঠনেই অসন্তোষ দানা বাঁধছে। দুই সংগঠনই জানিয়ে দিয়েছে, অবিলম্বে সরকারি নির্দেশিকা না-বেরোলে তারা ফের আন্দোলনে নামবে।
প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য, অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কী ভাবে বেতনক্রম নির্ধারিত হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। অবিলম্বে ধোঁয়াশা কাটিয়ে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বেতনক্রম তৈরি না-করলে তারা ফের আন্দোলনে নামবে। সংগঠনের নেত্রী পৃথা বিশ্বাস বলেন, ‘‘শুধু গ্রেড পে বাড়ালেই হবে না। অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বেতনক্রম তৈরি করতে হবে। এই বিষয়ে আমরা জেলা স্কুল পরিদর্শকদের স্মারকলিপি দিয়েছি।’’
ন্যায্য বেতনহারের দাবি তো ছিলই। সেই সঙ্গে ১৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার বদলি রদের দাবিতে উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কিছু সদস্য সল্টলেকের বিকাশ ভবনের কাছে ওয়াই চ্যানেলে অনশন বিক্ষোভে বসেন। অনশন আন্দোলন চলে দু’সপ্তাহ ধরে। শেষ পর্যন্ত গত ২৫ জুলাই নজরুল মঞ্চে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ১৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার বদলি রদ এবং গ্রেড পে বাড়িয়ে ৩৬০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। এই নিয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। তার পরে উস্তি সংগঠন আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়। ওই আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন, সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে এক মাস কেটে গিয়েছে। এখনও এই বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে পৌঁছল না কেন?
প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেতন বৃদ্ধির সরকারি বিজ্ঞপ্তি পেয়েছেন। কিন্তু কলেজের আংশিক সময়ের শিক্ষক, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও অতিথি শিক্ষকেরা এখনও তা পাননি। শুধু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৌখিক আশ্বাস পেয়েছেন। গত সপ্তাহে আংশিক সময়ের শিক্ষক, চুক্তিভিত্তিক পূর্ণ সময়ের শিক্ষক ও অতিথি শিক্ষকের পদগুলি তুলে দিয়ে ওই শিক্ষকদের স্টেট এডেড কলেজ টিচার বলার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কবে সরকারি বিজ্ঞপ্তি আসবে, তাঁরা সে দিকে তাকিয়ে বলে শুক্রবার জানান কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের সদস্যেরা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ বলেন, ‘‘সরকারি আদেশনামা বা বিজ্ঞপ্তি শিক্ষক দিবসের আগে জারি করতেই হবে। নইলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’