হতাশ: ট্রেন থেকে নেমে মালদহ টাউন স্টেশনে সিদ্দিকা। নিজস্ব চিত্র।
প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত কামরায় ‘টাকা নিয়ে’ সাধারণ যাত্রীদের তোলা হচ্ছে। সেই যাত্রীরা কামরার মধ্যে প্রতিবন্ধীদের আসনেই বেশ গুছিয়ে বসছেন। কেউ কেউ দিব্যি শুয়েও পড়ছেন। তাতে তাঁদের বসতে পর্যন্ত অসুবিধা হচ্ছিল। চোখের সামনে তা দেখে আপত্তি করেছিলেন সিদ্দিকা পারভিন। রেলপুলিশের কিছু কর্মীর সঙ্গে তাঁদের বচসাও শুরু হয়ে যায়। সিদ্দিকার অভিযোগ, তার পরে রেল পুলিশের ওই কর্মীরা সিদ্দিকা ও তাঁর মামা মোক্তারুল ইসলামের টিকিট ছিঁড়ে ফেলে দেন। তাঁর প্রতিবন্ধী শংসাপত্রটিও ছিঁড়ে দেন। তার পরে মোক্তারুলকে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। সিদ্দিকাও নেমে যান।
অনেক দিন ধরেই গুরুতর অসুস্থ দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের সিদ্দিকা। প্রায় ৮ ফুট লম্বা এই প্রতিবন্ধী তরুণীর চিকিৎসা হয়েছে কলকাতার এসএসকেএম-ও। তার পরে দিল্লির এইমসেও তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে এক মাস চিকিৎসার পরে গ্রামে ফেরেন। এখন তাঁকে মাঝে মধ্যেই ডাক্তার দেখাতে কলকাতায় আসতে হয়। রবিবার রাতে তিনি সে কারণেই গৌড় এক্সপ্রেসের বালুরঘাট লিঙ্ক ট্রেনটিতে ওঠেন। ট্রেন মালদহ টাউন স্টেশনে পৌঁছলে রেলপুলিশের তাণ্ডব শুরু হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের নামিয়ে ট্রেন চলে যাওয়ার পরে প্ল্যাটফর্মেই বসেছিলেন সিদ্দিকারা।
সিদ্দিকা বলেন, ‘‘প্রতিবন্ধী কামরাতে একের পর এক সাধারণ যাত্রীকে ওঠানো হচ্ছিল। সিটে বসে থাকতে সমস্যা হচ্ছিল আমার। পুলিশকর্মীদের জানানো হলে তাঁরা উল্টে গালিগালাজ শুরু করে দেন। মামাকে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হলে আমিও নেমে যাই।’’
আরও পড়ুন: নাবালিকা বিয়ে রুখতে সহায় নাপিত, পুরোহিত
খবর জানাজানি হতে চলে আসেন মালদহ জিআরপির কর্মীরা। প্রায় তিন ঘন্টা অপেক্ষার পরে রাত ১২টা নাগাদ মালদহ রেলপুলিশের কর্মীরাই সিদ্দিকাদের তুলে দেন পদাতিক এক্সপ্রেসের প্রতিবন্ধী কামরায়।
গৌড় এক্সপ্রেসের দায়িত্ব শিয়ালদহ জিআরপির। শিয়ালদহের এসআরপি সব্যসাচীরমণ মিশ্র বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেই শিয়ালদহের আইসি-কে বলেছি সিদ্দিকার সঙ্গে কথা বলে অভিযোগ নিতে। তারপরে আমরা খতিয়ে দেখে কড়া ব্যবস্থা নেব।’’ মালদহের জিআরপির আইসি কৃষ্ণগোপাল দত্তও বলেন, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। ওই ট্রেনের দায়িত্বে থাকা ছয় কর্মীর নামের তালিকাও তৈরি করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy