নারদ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে জনস্বার্থের মামলার আবেদনকারী ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী। এ বার সেই ঘটনায় অভিযুক্ত নেতা-মন্ত্রীদের পদত্যাগের দাবি জানাতে রাজ্যপালের কাছে দরবার করা নিয়ে তীব্র বিবাদ বাধল সেই কংগ্রেসেরই অন্দরে!
অভিযুক্তদের মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর দাবিতে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর দেখা করতে যাওয়ার কথা কাল, শনিবার। তার দু’দিন আগেই পরিষদীয় দল নিয়ে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান কেন রাজভবনে চলে গেলেন, বিরোধ এই নিয়েই। তিনি সংসদের অধিবেশনে ব্যস্ত থাকবেন বলে জানিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও তাঁর জন্য অপেক্ষা না করে পরিষদীয় দল যে ভাবে রাজ্যপালের কাছে গিয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ প্রদেশ সভাপতি। আবার বৃহস্পতিবার পরিষদীয় দলের বৈঠকে যে ভাবে তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তাতে ব্যথিত মান্নানও। পদ ছাড়তে চেয়ে তিনি সঙ্গে সঙ্গেই যোগাযোগ করেছেন দিল্লিতে। গোটা ঘটনার বিবরণ হাইকম্যান্ড জানতে চাওয়ায় সন্ধ্যার উড়ানে মান্নান দিল্লি চলেও গিয়েছেন। এই বিবাদে মান্নানদের এ দিনের রাজভবনে যাওয়া প্রায় আড়ালেই চলে গিয়েছে!
কংগ্রেস সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টে নারদ-কাণ্ড নিয়ে শুনানি সেরে ফিরে মান্নান প্রদেশ সভাপতিকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, ৩০ মার্চ পরিষদীয় দলের বৈঠক এবং সময় পেলে সে দিনই রাজ্যপালের কাছে যাওয়া হবে। অধীরকে উপস্থিত থাকার আর্জি জানান তিনি। কিন্তু অধীর জবাবে লেখেন, পরিষদীয় দল বিধানসভার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। অন্য রাজনৈতিক বিষয়ে দলের সঙ্গে আলোচনা করে নিলে ভাল হতো। ওই দিনটা তিনি সংসদে ব্যস্ত থাকবেন। তার পরেও পরিষদীয় দল এ দিন রাজভবনে গিয়েছে শুনে অধীরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘লোকসভায় আজও বক্তৃতা ছিল আমার। আমি ১ এপ্রিল রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার সময় চেয়েছি। মান্নানেরা হয়তো জরুরি মনে করেছেন বলে আগে চলে গিয়েছেন! এই নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই।’’
প্রদেশ সভাপতির অনুমোদন ছাড়াই কেন মান্নান রাজভবনে বিধায়কদের নিয়ে যাচ্ছেন, পরিষদীয় দলের বৈঠকে এ দিন সেই প্রশ্নই তোলেন বহরমপুরের মনোজ চক্রবর্তী। অন্য বিধায়কদের না যাওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। তাঁর সঙ্গে প্রবল বাদানুবাদ বাধে অপূর্ব সরকার, দুলাল বরদের। পরে বহরমপুর পুরসভায় গণ্ডগোলের কথা বলে রাজভবনে না গিয়ে ট্রেন ধরতে চলে যান মনোজবাবু, অন্য রাস্তা ধরেন আরও কয়েক জন বিধায়ক। মান্নান ১৩ জন বিধায়ককে নিয়ে যান রাজ্যপালের কাছে। বিধায়কদের মধ্যে মতভেদ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি শুধু বলেন, ‘‘দলের ব্যাপার, দলেই আলোচনা করব।’’ তবে বিধায়কদের মধ্যে কারও কারও আক্ষেপ, ‘‘সারদা-নারদায় মান্নানদা’র জনপ্রিয়তাই কাল হয়েছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy