Advertisement
০২ মে ২০২৪

নড়বড়ে বোর্ড টেকাতে বরাদ্দে বৈষম্যের নালিশ

পুরবোর্ডে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তাই ওয়ার্ডভিত্তিক বরাদ্দে বৈষম্য করে শিলিগুড়ির মেয়র তৃণমূল ও বিজেপিকে সন্তুষ্ট রাখতে চাইছেন বলে অভিযোগ, যাদের সমর্থনে বোর্ড চলছে সেই কংগ্রেসের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৯
Share: Save:

পুরবোর্ডে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তাই ওয়ার্ডভিত্তিক বরাদ্দে বৈষম্য করে শিলিগুড়ির মেয়র তৃণমূল ও বিজেপিকে সন্তুষ্ট রাখতে চাইছেন বলে অভিযোগ, যাদের সমর্থনে বোর্ড চলছে সেই কংগ্রেসের। কংগ্রেস কাউন্সিলর সুজয় ঘটকের বক্তব্য, দলগত ভাবে তারা পুরসভায় তৃতীয় বৃহত্তম হলেও বোর্ড মিটিঙে রাস্তা, নিকাশির কাজের জন্য যে বরাদ্দ হয়েছে তাতে তাঁদের দলের কাউন্সিলদের ওয়ার্ডই সবচেয়ে কম টাকা পেয়েছে।

ডিসেম্বরে পুরসভার পূর্ত বিভাগের মোট বরাদ্দের পরিমাণ ৩ কোটি ৩৮ লক্ষ ১৫ হাজার ৮৪৭ টাকা। সুজয়বাবুর অভিযোগ, এর মধ্যে বামেদের দখলে থাকা ওয়ার্ডে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা। তৃণমূলের দখলে থাকা ওয়ার্ডের জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। বিজেপির দখলে থাকা দু’টি ওয়ার্ডের জন্যেও যেখানে প্রায় ২৬ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে, সেখানে কংগ্রেসের দখলে থাকা চারটি ওয়ার্ডে ৫ লক্ষ ৩ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

বোর্ড মিটিঙের পরে বরাদ্দ নিয়ে ক্ষোভ জানাতে তাঁদের কাউন্সিলরদের নিয়ে মেয়রের কাছেও যান সুজয়বাবু। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কংগ্রেসের সমর্থন আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ওদের ওয়ার্ডের উন্নয়ন নিয়ে যা সমস্যা রয়েছে তা আলোচনা করে মিটিয়ে নেব।’’

২৩ টি আসনে জিতে নির্দল কাউন্সিলর অরবিন্দ ঘোষের সমর্থন নিয়ে ৪৭ আসনের পুরসভায় বোর্ড গড়েছিল বামেরা। অরবিন্দবাবু প্রয়াত হওয়ায় এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের টিকিটে জেতা দুর্গা সিংহ মাস কয়েক আগে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় বামেরা। তখন জেলা কংগ্রেস সভাপতি (সমতল) শঙ্কর মালাকার পুরবোর্ড চালাতে বামেদের সমর্থন দেওয়ার কথা জানান। তখন থেকে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়েই শিলিগুড়িতে বাম বোর্ড চলছে।

শিলিগুড়ি পুরসভায় কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতাও সুজয়বাবু। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল, বিজেপি’কে তুষ্ট রেখে পুরবোর্ডে ক্ষমতা ধরে রাখতেই উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ দিতে এ ভাবে বিষম্য করা হচ্ছে। তিনি বলেন,‘‘বাম পুরবোর্ড যে সংখ্যালঘু তা নিয়ে সংশয় নেই। তৃণমূল এবং বিজেপি কাউন্সিলরদের সে কারণেই মেয়র চটাতে চাইছেন না। তাই বঞ্চিত হতে হচ্ছে কংগ্রেসের ওয়ার্ডগুলিকে। মেয়রকে অভিযোগ জানিয়েও এসেছি।’’তবে তৃণমূলের বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘যে কাজ পাওয়া উচিত ছিল তার সিকি ভাগও পাইনি। তা নিয়ে বোর্ড মিটিঙে অভিযোগও করেছি।’’

সুজয়বাবু জানান, তাঁর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের শরৎ বসু রোডে নিকাশিতে সিমেন্টের স্ল্যাব বসানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। তার জন্য এক টাকাও বরাদ্দ হয়নি। যে বিভাগের কাজ নিয়ে অভিযোগ সেই পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ মুন্সি নুরুল ইসলাম অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘সব কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলেই কাজের তালিকা হয়েছে। এমন অভিযোগের কথা অন্তত আমার জানা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congress CPIM BJP Ashoke Bhattacharya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE