সীতারাম ইয়েচুরি।— ফাইল চিত্র।
বাতাবরণ অনেকটা ২১ বছর আগের মতো! সে বার জ্যোতি বসুর জন্য প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রস্তাব স্বীকার করা হবে কি না, এই প্রশ্নে ভোটাভুটি হয়েছিল সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে। এ বার কংগ্রেসের সমর্থনে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে ফের রাজ্যসভায় প্রার্থী করা হবে কি না, তা নিয়েও প্রায় একই রকম পরিস্থিতি। আর এই অবস্থায় শুধু ইয়েচুরির অপেক্ষায় থেকে পশ্চিমবঙ্গে দলের রাজ্যসভার প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে চাইছে না কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।
ইয়েচুরিকে তৃতীয় বারের জন্য রাজ্যসভার প্রার্থী করায় সম্মতি দেয়নি সিপিএমের পলিটব্যুরো। আগামী ২৩ থেকে ২৫ জুলাই কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেই ইয়েচুরির ভাগ্যে সিলমোহর পড়ার কথা। তার আগে রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে কংগ্রেসের সঙ্গে অন্য বিরোধীদের মতোই হাত মিলিয়েছে সিপিএম। তার পরে সংসদ খুলতেই ইয়েচুরির সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী ও অহমেদ পটেল। পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের একাংশ চাইছে, আর অপেক্ষা না করে রাজ্যসভায় বাংলা থেকে বিরোধীদের প্রাপ্য একটি আসনের জন্য প্রদীপ ভট্টাচার্যের নাম ঘোষণা করে দেওয়া হোক। কিন্তু ইয়েচুরিকে নিয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি কী সিদ্ধান্ত নেয়, তার জন্যই অপেক্ষায় আছেন পটেলেরা।
কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব যখন ইয়েচুরির জন্য হাত বাড়িয়ে দিতে তৈরি, তখন সলতে পাকানো হচ্ছে সিপিএমের অন্দরেও। সহজ অঙ্কে পলিটব্যুরোর মতো কেন্দ্রীয় কমিটিতেও প্রকাশ কারাট শিবিরের পাল্লা ভারী। কিন্তু ইয়েচুরি-প্রশ্নে সেই সমীকরণে কিছু চিড় ধরছে। দলীয় সূত্রের খবর, ওড়িশা, কর্নাটক, মহারাষ্ট্রের মতো কিছু রাজ্য কমিটি ইয়েচুরিকে ফের প্রার্থী করার প্রস্তাব পাঠিয়েছে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে। এই মর্মে আলিমুদ্দিনের প্রস্তাব আগেই পৌঁছেছিল এ কে গোপালন ভবনে। দলের পলিটব্যুরোর এক সদস্যের কথায়, ‘‘এখন প্রধান বিপদ বিজেপি। তার মোকাবিলায় আগামী বছর পার্টি কংগ্রেসে দলের লাইন পরিবর্তনের কাজে সুবিধা হবে এখন ইয়েচুরিকে নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভোটাভুটি হলে। তাতে যদি ইয়েচুরির প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব খারিজও হয়ে যায়, তা হলেও দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের লাভ হবে।’’
কড়া বিরোধিতার মুখে পড়তে হবে জেনেও কেন্দ্রীয় কমিটিতে ফের ইয়েচুরির জন্য জোর সওয়াল করতে তৈরি হচ্ছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা। তাঁদের যুক্তি, এ বার ইয়েচুরির জন্য সুযোগ হাতছাড়া করলে ২০১৮ ও ২০২০ সালে বাংলা থেকে সিপিএমের কেউ রাজ্যসভায় যেতে পারবেন না। রাজ্যসভায় এ রাজ্য থেকে পুরোপুরি শূন্য হয়ে যাবে বামেরা! আর এখন প্রদীপবাবুর মতো কেউ কংগ্রেসের প্রার্থী হলে নিজেদের দ্বিতীয় পছন্দের কিছু ভোট এবং বিরোধী দলের কিছু ভোট ভাঙিয়ে তৃণমূল তাদের পঞ্চম প্রার্থীকে জিতিয়ে নিতে চাইবে বলে সূর্যবাবুদের আশঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy