ছবি: সংগৃহীত।
উপনির্বাচনকে ঘিরে এ বার সিপিএমের বিরুদ্ধে জোটধর্ম পালন না করার অভিযোগ আনল কংগ্রেস। পাল্টা মুখ খুলল সিপিএমও। আর তার প্রভাব এসে পড়ল বিধানসভার মধ্যে বামফ্রন্ট-কংগ্রেস কক্ষ সমন্বয়ে।
কংগ্রেসের জোটের প্রস্তাবে সাড়া না দিয়েই সবং বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছিল বামফ্রন্ট। তার প্রেক্ষিতেই কংগ্রেসও এ বার হাইকম্যান্ডের কাছে চিরঞ্জিব ভৌমিক-সহ তিন সম্ভাব্য প্রার্থীর নামে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস প্রস্তাব দিয়েছিল, একজোট হয়ে লড়াই হোক। সবং বিধানসভা আসনটি ছেড়ে দেওয়া হোক কংগ্রেসকে। কিন্তু কোনও আলোচনা না করে সিপিএম প্রার্থী দিয়েছে। তারা জোটধর্ম পালন করেনি।’’
গত বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস সবং জিতেছিল বলেই ওই আসনে নিজেদের প্রার্থী দিয়ে বামেদের সহায়তা চেয়েছিলেন অধীরবাবুরা। এখন কি তা হলে বামেদের বিরুদ্ধে তাঁরা ‘বিশ্বাসঘাতকতা’র অভিযোগ আনছেন? অধীরবাবু বলেন, ‘‘বামেরা জোটধর্ম পালন করতে পারেনি, সেটা তাদের বিষয়। আমরা নিচু তলার বাম কর্মীদের বলব, তৃণমূল এবং বিজেপি-কে রোখার স্বার্থে কংগ্রেস প্রার্থীকেই সমর্থন করুন।’’
প্রদেশ সভাপতির এমন বক্তব্য শুনে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম পাল্টা কটাক্ষ করেছেন, ‘‘সবংয়ে মানস ভুঁইয়া সূর্যকান্ত মিশ্রকে জড়িয়ে ধরে মুখ্যমন্ত্রী করার ঘোষণা করেছিলেন। তার পরে নিজেই কংগ্রেসে থাকলেন না! অধীরবাবুর কথা শুনে মনে হচ্ছে, তিনি বাম কর্মীদের নিয়েই বেশি চিন্তিত! তার চেয়ে নিজের ঘরের দিকে নজর রাখলেই ভাল হবে!’’ কংগ্রেস প্রস্তাব দিয়েছিল মেনে নিয়েই সেলিমের বক্তব্য, বামফ্রন্টের নিজস্ব নীতির কারণে তাদের সমর্থন করা সম্ভব হয়নি। তবে তৃণমূল এবং বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াই চলবে অবশ্যই। তাই কোনও পক্ষেরই এমন কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়, যাতে ওই লড়াইয়ের ক্ষতি হয়।
অধীর-সেলিম এই চাপানউতোরের জেরে বিধানসভায় মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে কংগ্রেস-বামের যৌথ মুলতবি প্রস্তাব অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে! যৌথ প্রস্তাবের জন্য সই করে দিয়েছিলেন বাম বিধায়কেরা। কিন্তু কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র যখন বিধানসভার বাসে উঠে পরিষদীয় দলের উপ-নেতা নেপাল মাহাতোকে সই করাতে যান, তিনি তাতে রাজি হননি। নেপালবাবুর যুক্তি, প্রদেশ সভাপতি বলেই দিয়েছেন বামেরা ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছে। আর তার জবাবে সিপিএম ঘর সামলাতে বলেছে কংগ্রেসকে। তার পরে আবার যৌথ প্রস্তাব কীসের? বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান অবশ্য মনে করছেন, উপনির্বাচনের জন্য কক্ষ সমন্বয়ে প্রভাব পড়া উচিত নয়। বাকি কংগ্রেস বিধায়কেরা আজ, বুধবার কী অবস্থান নেন, তার উপরে মুলতবি প্রস্তাবের রূপ নির্ভর করছে।
কংগ্রেস-বাম মতান্তরের মাঝে সবংয়ে প্রার্থী করেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সিপিএমের প্রাক্তন সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যকে। গত বিধানসভা ভোটে তিনি পিংলা থেকে বিজেপি-র প্রার্থী হয়েছিলেন। বাম-কংগ্রেস জোট না হওয়ায় কি তাঁদের সুবিধা হল? বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘জোট নিয়ে আদৌ ভাবছি না। একমাত্র বিজেপি-ই মানুষের সমস্যা নিয়ে দুর্নীতি, অপশাসনের প্রতিবাদে ও গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে মাঠে-ময়দানে লড়ছে। মানুষ তাই বিজেপি-কেই বিকল্প হিসাবে দেখছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy