দিলীপ ঘোষ।
পঞ্চায়েত নির্বাচন এগিয়ে আসতেই ফের হিংসাত্মক ঘটনায় তেতে উঠছে রাজ্য রাজনীতি। গত ২৪ ঘণ্টাতেই পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর এবং হুগলির পুরশুড়ায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ভগবানপুরে মারা গিয়েছেন তৃণমূলের যুব নেতা। পুড়শুরায় গুলিবিদ্ধ আরও একজন। তার মধ্যেই শনিবার দলের পঞ্চায়েত সম্মেলন থেকে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য আরও গরম করে দিল হাওয়া। জাতীয় গ্রন্থাগারের অডিটোরিয়ামে ওই সম্মেলনে ভাষণে দিলীপবাবু এ দিন বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে লড়তে গেলে দমদার লোক চাই। বুথে ল়ড়াই হবে। কিন্তু ওরা যদি ভাবে বুথে লড়াই শেষ, তা হলে ভুল ভাববে। বুথ থেকে লড়াইটা শ্মশান পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে হবে। আমি দিলীপ ঘোষ বলছি, লড়াইটা শ্মশান পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাব। সেই মানসিকতা নিয়ে লড়তে হবে।’’
দিলীপবাবুর এই মন্তব্যের পর পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘উনি যে অসুস্থ তা কথা থেকেই স্পষ্ট। সিনেমায় শুনেছি, মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানের মতো ডায়লগ। বাস্তবে এ সব হয় না।
এটা দিলীপবাবুর জানা উচিৎ। তাছাড়া, লোক কোথায় যে এত বড় বড় কথা বলছেন।’’
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যে এখন বিরোধীরা যথেষ্ট দুর্বল। ফলে পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে থেকেই বিরোধীদের খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিয়ে শাসক তৃণমূল এগোবে। অনেকেই মনে করছেন, এ বারের পঞ্চায়েতে বিনা লড়াইয়ে রেকর্ড সংখ্যক আসনে ফলাফল নির্ধারণ হয়ে যাবে। তার মধ্যেও যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তা পদ্ম ফুল বনাম জোড়া ফুলের মধ্যেই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ, গত কয়েকটি উপনির্বাচনের ফলে দেখা গিয়েছে কংগ্রেস ও বামেরা ক্রমেই বঙ্গের রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছে। তৃণমূলের একাধিপত্যের শাসনে সামান্য হলেও বিরোধী ভূমিকায় পাওয়া যাচ্ছে বিজেপিকেই। পঞ্চায়েতেও সেই ধারা বজায় থাকলে এই দুই দলের মধ্যেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটবে। এমন পরিস্থিতিতে উত্তেজনা কমার পরিবর্তে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য মারদাঙ্গায় উৎসাহ দেবে বলেই রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত। পাশাপাশি শাসক দলের টিকিটের তীব্র চাহিদা সামলাতে গিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও খুনোখুনি পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দিলীপবাবুর শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার হুমকি উত্তেজনার পারদ আরও চড়িয়ে দিল।
বামেরা অবশ্য মনে করছে, পঞ্চায়েত ভোটে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটলে তাতে তৃণমূল এবং বিজেপি দু’পক্ষই দায়ী থাকবে। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূল রাজ্যে মাস্তানির রাজনীতি করছে। আর বিজেপি ভারতে সেই একই কাজ করছে। এক জন আর এক জনের পরিপূরক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy