আবেদন-নিবেদন, সচেতনতার প্রচার সত্ত্বেও মরণোত্তর দেহদানে আশানুরূপ সাড়া নেই। যৎসামান্য যা সাড়া মিলছে, সেই সব ক্ষেত্রেও যদি হাসপাতালের অসহযোগ বা অন্য কোনও কারণে প্রয়াতের দেহ গ্রহণ করা না-যায়, সেটা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় বলেই স্বাস্থ্য শিবিরের অভিমত।
খাস কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমনই অসহযোগিতায় মঙ্গলবার এক মহিলার দেহ নেওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। পরিবারের বক্তব্য, নীপা মারিক (৪৬) নামে ইছাপুরের নবাবগঞ্জের ওই বাসিন্দার দেহদানের অঙ্গীকার করা ছিল। কিন্তু মেডিক্যালে মাসাধিক কাল ভর্তি থাকা সত্ত্বেও করোনা পরীক্ষা না-হওয়ায় তাঁর দেহ গ্রহণ করা যায়নি। দেহ দাহ করে দিতে বাধ্য হয়েছে তাঁর পরিবার। ২০১৪ সালে দেহদানের অঙ্গীকার করেন নীপাদেবী এবং তাঁর পরিবার। মরণোত্তর দেহদান এবং অঙ্গদান নিয়ে কাজ করে ‘গণদর্পণ’। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, এক মাসেরও বেশি হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালে ওই মহিলার করোনা পরীক্ষা করা হয়নি। অথচ নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালে ভর্তি হলে করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক।
পেটে টিউমার নিয়ে ১৩ নভেম্বর মেডিক্যালে ভর্তি হন নীপাদেবী। সোমবার দুপুরে তিনি মারা যান। তাঁর ভাই কৌশিক মারিক জানান, মেডিক্যাল কলেজ জানায়, অ্যানাটমি বিভাগে জায়গা নেই। তাই দেহটি গ্রহণ করা যাবে না। পরে গণদর্পণের সাহায্যে মঙ্গলবার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে দেহদানের ব্যবস্থা হয়। শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘মঙ্গলবার দেহ আনতে গিয়ে দেখি, নীপাদেবীর কোভিড পরীক্ষাই করা হয়নি। বার বার আবেদন করা সত্ত্বেও তাঁর দেহ থেকে লালারস নিয়ে করোনা পরীক্ষা করেনি হাসপাতাল।’’