Advertisement
E-Paper

করোনা নিয়ে গবেষণা বিদ্যাসাগরে

মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একদল গবেষক দক্ষিণ কোরিয়ার হালিম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই গবেষণা শুরু করেছেন।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২০ ০৪:০৩
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, করোনাভাইরাস হল একটি বিশেষ প্রকার ভাইরাস গ্রুপ যা মূলত স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখিদের দেহে সংক্রমণ ঘটায়।

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, করোনাভাইরাস হল একটি বিশেষ প্রকার ভাইরাস গ্রুপ যা মূলত স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখিদের দেহে সংক্রমণ ঘটায়।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিধি ক্রমশ বাড়ছে। মারণ এই রোগ ঢুকে পড়েছে এ দেশেও। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক বা টিকা আবিষ্কারে জোর দিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। বিজ্ঞানীরা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। সেই গবেষণায় শামিল হয়েছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ও।

মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একদল গবেষক দক্ষিণ কোরিয়ার হালিম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই গবেষণা শুরু করেছেন। গবেষণার প্রথম ধাপের নির্যাস সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাপত্র ‘জার্নাল অব মেডিক্যাল ভাইরোলজি’-তে প্রকাশিতও হয়েছে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বিধানচন্দ্র পাত্র বলেন, ‘‘বিশ্ব জুড়ে গবেষকেরা প্রতিষেধকের খোঁজে নিরন্তর গবেষণা চালাচ্ছেন। আমরাও গবেষণা করছি।’’

আট জনের গবেষক দলে বিধান ছাড়াও রয়েছেন চিরঞ্জীব চক্রবর্তী, মনোজিৎ ভট্টাচার্য, সাংসু লি, আশিসরঞ্জন শর্মা, গরিমা শর্মা, প্রশান্ত পাত্র ও প্রতীক ঘোষ। সাংসু লি, আশিসরঞ্জন শর্মা, গরিমা শর্মা দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত। চিরঞ্জীব কলকাতার অ্যাডামাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। বাকি চার জন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন। দলের অন্যতম সদস্য ওড়িশার ফকিরমোহন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মনোজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই গবেষণার কার্যকারিতা সম্পর্কে আমরা খুবই আশাবাদী।’’

আরও পড়ুন: করোনা-আতঙ্ক: সৌদি থেকে ফিরেই যুবকের মৃত্যু মুর্শিদাবাদে

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, করোনাভাইরাস হল একটি বিশেষ প্রকার ভাইরাস গ্রুপ যা মূলত স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখিদের দেহে সংক্রমণ ঘটায়। ২০০৩ সালে প্রথম মানুষের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ লক্ষ করা যায়। তখনও অনেকে মারা গিয়েছিলেন, যা সার্স-সিওভি করোনাভাইরাস নামে পরিচিত। পরে ২০১২, ২০১৫, ২০১৮ সালে পশ্চিম এশিয়ায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে যাকে মার্স-সিওভি করোনাভাইরাস নামে চিহ্নিত করা হয়েছিল। বিধান, মনোজিৎদের কথায়, ‘‘এখন যে করোনাভাইরাসটি সারা বিশ্বের কাছে আতঙ্ক, তার চরিত্র আগের দুই করোনাভাইরাসের থেকে অনেকটাই আলাদা।’’ এই ভাইরাসটি প্রথম চিনের উহান শহরে গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি শনাক্ত করা হয়। ভাইরাসটি ২০১৯-এনসিওভি নামে পরিচিত হলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে পরে সার্স-সিওভি-২ নামে অভিহিত করে ও রোগটির নাম রাখে কোভিড-১৯। গত বছর প্রথম চিহ্নিত করা হয় বলেই এর নামে রাখা হয়েছে ‘১৯’-কে।

এ ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের বাইরের আবরণে উপস্থিত স্পাইক প্রোটিনকে গবেষণায় নিশানা করা হয়েছে। কারণ এটি সহজেই মানুষের অনাক্রমতা তন্ত্র (ইমিউনিটি সিস্টেম)-এর সংস্পর্শে এসে তাকে দুর্বল করে দেয়। বিধান বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে আমরা ইমিউনো ইনফরমেটিক্স পদ্ধতির সাহায্য নিয়েছি, যা মূলত একটি সফ্‌টওয়্যার পরিচালিত ব্যবস্থা।’’ বিধানদের দাবি, তাঁরা এমন একটি প্রতিষেধক তৈরির চেষ্টা করছেন, যা ওই ভাইরাসের ক্ষতিকর স্পাইক প্রোটিনটিকে নিষ্ক্রিয় করে দেবে। এতে এর মারণ ক্ষমতা কমে যাবে। ইতিমধ্যেই গবেষণার দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা।

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের এমন জরুরি একটি গবেষণাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরাও। ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দীর মতে, ‘‘এমন গবেষণা থেকে উঠে আসা তথ্য ওই ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারে কোনও না কোনও ভাবে কাজে লাগতে পারে। অন্য গবেষণাকেও হয়তো সাহায্য করবে।’’

Vidyasagar University Coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy