Advertisement
E-Paper

‘ঘরবন্দি থাকবেন না ইটালি হতে দেখবেন’

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ইটালিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২২৯ জন। ১৫ মার্চ তা হয় ২৪,৭৪৭!

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২০ ০৫:৩১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

লকডাউন চলছে। তবুও বাজারে নিয়ম না মেনে ভিড় ক্রেতাদের। ক্লাবের সামনে বা চায়ের দোকান খুলিয়ে আড্ডাও চলছে দিব্য। এই ধারা চলতে থাকলে পরিস্থিতি স্পেন, ইটালির মতো হতে দেরি লাগবে না বলে মত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। পথ একটাই— লকডাউন পর্যায়ে বাড়ির বাইরে না বেরোনো। একান্ত বেরোতে হলেও অত্যন্ত সাবধানে, অন্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে দ্রুত কাজ সেরে ফিরে আসা, হাত ধোয়া-সহ যাবতীয় সুরক্ষা বিধি মেনে চলা। অকারণ বাইরে কাটানো বা আড্ডা দেওয়া একেবারেই চলতে পারে না।

মাইক্রোবায়োলজিস্ট তথা সংক্রামক রোগের চিকিৎসক অঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের দেশের জনসংখ্যার ১০ শতাংশ যদি অসুস্থ হন, তারও দশ শতাংশকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়ার মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই। বিনা চিকিৎসায় মানুষকে মরতে হবে। সে জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলছে। তা করতে হলে বাড়ি থেকে বেরোনো যাবে না। লকডাউন মানতেই হবে।’’

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ইটালিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২২৯ জন। ১৫ মার্চ তা হয় ২৪,৭৪৭! নাইসেড সূত্রের খবর, এ দেশে ৫ মার্চ ৩০ জন আক্রান্তের হদিস মেলে। ১৫ মার্চ তা হয় ৮০। দু’সপ্তাহের ব্যবধানে সেই ৮০ এখন ৯১৮ হয়ে গিয়েছে! এই পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করেই লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র এবং নবান্ন। কিন্তু নাগরিকদের একটা বড় অংশকে তা কে বোঝাবে! বাইরে বেরিয়ে আড্ডায় বিরাম নেই।

এখানেই সতর্ক করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কনসালট্যান্ট চিকিৎসক দীপাঞ্জন রায় জানান, নোভেল করোনাভাইরাস ‘ড্রপলেট ইনফেকশন’, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। তাই দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির উপরে বসে রয়েছি। আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সমূহ বিপদ।’’ তিনি জানান, রাজ্যে এখনও আক্রান্তের সরাসরি সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে রোগ সীমাবদ্ধ রয়েছে। কিন্তু এ ভাবে আড্ডা, ভিড় চলতে থাকলে ভাইরাস ঠেকানো কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

একাধিক মেডিক্যাল কলেজে কমিউনিটি মেডিসিনের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান সমীর দাশগুপ্ত জানান, গণতান্ত্রিক কাঠামোয় মানুষকে ঘরে আটকে রাখা কঠিন। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তা ছাড়া উপায়ও নেই। সমীরবাবুর বক্তব্য, ‘‘কমিউনিটিতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে রাতারাতি এত চিকিৎসক, নার্স, টেস্ট কিট, ভেন্টিলেটর কোথা থেকে আসবে?’’ ‘ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব পাবলিক হেলথ’ এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ অনির্বাণ দলুইয়ের কথায়, ‘‘ইটালি, আমেরিকা, ব্রিটেন, স্পেনের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো অনেক উন্নত। তবু তারা এখন অসহায়। মানুষ সতর্ক না হলে আমাদের দেশে হাসপাতালে শয্যা পাওয়াই দুষ্কর হবে।’’

Coronavirus West Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy