রাজ্যে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কোভিড রোগী ১ দিনে সুস্থ হয়ে উঠলেন। যদিও গত কয়েক দিনের মতোই দৈনিক মৃতের সংখ্যা পার করেছে ৫০-এর গণ্ডি। সেই সঙ্গে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হারের সঙ্গে বেড়েছে সুস্থতার হারও। তবে আগের থেকে কমেছে সংক্রিয় রোগীর সংখ্যা।
স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত মঙ্গলবারের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্য জুড়ে ৪ হাজার ৪১৫ জন সংক্রমিত পুরোপুরি সেরে উঠেছেন। যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ৩০ অক্টোবর থেকে প্রতিদিনই ৪ হাজারের বেশি কোভিড রোগীর সুস্থ হওয়ার খবর জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। এ দিনও সেই প্রবণতা বজায় রইল।
সুস্থ রোগীর সংখ্যা নতুন করে নজির গড়লেও গত কয়েক দিনের মতো এ দিনও সংক্রমণের জেরে মৃত্যু হয়েছে ৫০-এরও বেশি। সোমবারের থেকে দৈনিক মৃতের সংখ্যা কমলেও গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৫৩ জন মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।এদিনের বুলেটিনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা রাজ্যের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় সবচেয়ে বেশি (১৭ জন) কোভিড রোগী মারা গিয়েছেন। এর পরেই রয়েছে কলকাতা। গত ২৪ ঘণ্টায় শহরে মারা গিয়েছেন ১৫ জন।
আরও পড়ুন: অফিস টাইমে ৮৪ শতাংশ লোকাল চলবে কাল থেকে
আরও পড়ুন: তৃণমূল এবং বিজেপি, দু’জনের সঙ্গে প্রেম ঠিক নয়, বেইমানি করলে খতম: কল্যাণ
(গ্রাফে হোভার টাচ করলে দিনের পরিসংখ্যান দেখা যাবে)
কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়ি এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ৪ জন করে কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, হাওড়া এবং হুগলিতে ৩ জন করে সংক্রমিত মারা গিয়েছেন। নদিয়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২ জন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। দার্জিলিং, মুর্শিদাবাদ এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ১ জন করে মারা গিয়েছেন করোনায়।
রাজ্য জুড়ে মৃতের সংখ্যা প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়ালেও খানিকটা স্বস্তি দিচ্ছে সুস্থতার হার। ১ দিনে ৪ হাজারের বেশি কোভিড রোগী সুস্থ হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই তার প্রভাব পড়েছে দৈনিক সুস্থতার হারেও। এ দিন তা দাঁড়িয়েছে ৯০.১১ শতাংশে। গত কাল তা ছিল ৮৯.৮৯ শতাংশ।
রাজ্য জুড়ে মৃতের সংখ্যা প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়ালেও খানিকটা স্বস্তি দিচ্ছে সুস্থতার হার। ১ দিনে ৪ হাজারের বেশি কোভিড রোগী সুস্থ হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই তার প্রভাব পড়েছে দৈনিক সুস্থতার হারেও। এ দিন তা দাঁড়িয়েছে ৯০.১১ শতাংশে। গত কাল তা ছিল ৮৯.৮৯ শতাংশ।
সুস্থতার হার বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হারও। প্রতি দিন যত সংখ্যক টেস্ট করা হয়, তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। আগের দিনের থেকে এ দিন পরীক্ষা (৪৪ হাজার ১১৭টি) কম হলেও তার মধ্যেই ৩ হাজার ৮৯১ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। যা দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। গত কাল ৪৪ হাজার ৩৪৬টি পরীক্ষা হয়েছিল।
(গ্রাফে হোভার টাচ করলে দিনের পরিসংখ্যান দেখা যাবে)
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লক্ষ ১৩ হাজার ১১২ জন। যদিও এর মধ্যে ৩ লক্ষ ৭২ হাজার ২৬৫ জন পুরোপুরি সেরে উঠেছেন। ফলে এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ৪৪৪ জন।
গোড়া থেকেই রাজ্যের মধ্যে কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যায় বাড়বাড়ন্ত দেখা গিয়েছে। এ দিনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় সবচেয়ে বেশি (৮৬৯ জন) করোনার সংক্রমণ ঘটেছে। এর পরেই দৈনিক সংক্রমিতের তালিকায় রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। ওই জেলায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮৪৪ জন। তা ছাড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা (২২৫), হুগলি (২৬৭), নদিয়া (২১০), পশ্চিম মেদিনীপুর (২০৯), পূর্ব মেদিনীপুর (১৭৯), হাওড়া (১৪৪), কোচবিহার (১০৬) এবং জলপাইগুড়ি (১৩৪)-র দৈনিক পরিসংখ্যানও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। ওই সব জেলাতেই গত ২৪ ঘণ্টায় ১০০ বা তার বেশি কোভিড রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)