Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

‘হটস্পট’ জেলার মধ্যে ‘কনটেনমেন্ট’ এলাকা সিল করে দিচ্ছে রাজ্য

রাজ্য সরকার রেড জ়োনগুলিকে অরেঞ্জ জ়োনে আনার জন্য ১৪ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে।

পুলিশের ব্যারিকেড টপকে এলাকা থেকে বেরোচ্ছেন এক যুবক। শনিবার বৌবাজারে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

পুলিশের ব্যারিকেড টপকে এলাকা থেকে বেরোচ্ছেন এক যুবক। শনিবার বৌবাজারে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৪৬
Share: Save:

‘হটস্পট’ জেলাগুলির মধ্যে ‘কনটেনমেন্ট’ এলাকার নাম প্রকাশ্যে জানাতে না চাইলেও সেখানে করোনা সংক্রমণ রুখতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে শনিবার জানালেন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। যথেষ্ট কিট পেলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় র‌্যাপিড পরীক্ষা শুরু করা হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যসচিব।

বিধি অনুযায়ী, ‘হটস্পট’ জেলার মধ্যে থাকা ‘কনটেনমেন্ট’ এলাকা (যেখানে বেশি আক্রান্ত) পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই হাওড়া, কলকাতা বা উত্তর ২৪ পরগনার যে এলাকাগুলিকে ‘রেড জ়োন’ বা ‘রেড স্টার’ হিসেবে রাজ্য সরকার চিহ্নিত করেছে, সেগুলিকে পুরোপুরি ‘সিল’ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে কোন কোন এলাকায় তা করা হচ্ছে, এ দিনও তা স্পষ্ট করেননি মুখ্যসচিব।

কিন্তু দিল্লি সরকার তো ‘হটস্পট’-এর নাম ধরে ধরে জানিয়ে দিয়েছে। মুখ্যসচিবের কথায়, ‘‘দিল্লি ছোট জায়গা। এখানে কনটেনমেন্ট কোন এলাকায় হচ্ছে, সেখানকার লোক তা জানবেন। আমাদের বেশির ভাগ আক্রান্ত হাওড়া, উত্তর কলকাতার কয়েকটা অংশ এবং কলকাতা লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনার দক্ষিণ অংশে। ওয়ার্ড ধরে নয়, কনটেনমেন্ট বাড়ি বা রাস্তা ধরে হয়। সমস্ত কেস নেগেটিভ না পাওয়া পর্যন্ত সিলড থাকবে এলাকাগুলি।’’

আরও পড়ুন: পুলিশ কড়া হতেই ভিড় কমছে রাস্তায়

রাজ্যে করোনা-চিত্র

করোনা-তথ্য
• নতুন করে করোনা পজ়িটিভ ২৩
• রাজ্যে অ্যাক্টিভ করোনা পজ়িটিভ রোগী ১৭৮
• শনিবার ছাড়া পেয়েছেন ৭ জন
• নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪৬৩০
• মোট মৃত্যু ১২

কোয়রান্টিন-তথ্য
• সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্র চালু ৫৮২টি
• সেখানে রয়েছেন ৩৮৫৮
• ছাড়া পেয়েছেন ৯১৪০
• গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন ৩৫২০৯
• ছাড়া পেয়েছেন ২২৬২৮

হটস্পট কাকে বলে
স্পর্শকাতর জেলা, আক্রান্তের সংখ্যা ও আক্রান্ত এলাকা যেখানে বেশি

কনটেনমেন্ট
হটস্পটের মধ্যে যে এলাকা থেকে বেশি সংখ্যায়
আক্রান্ত মিলেছে
• ‘কনটেনমেন্ট’ এলাকা পুরোপুরি সিল
• সিল হওয়া এলাকাগুলির ৩-৫ কিমিও নিয়ন্ত্রণের আওতায়
• ‘কনটেনমেন্ট’ এলাকায় বাড়ি বাড়ি স্ক্রিনিং
• ‘হটস্পট’ জেলায় ঘিঞ্জি ও বস্তিতে বাড়তি নজরদারি
• গুরুতর উপসর্গ ধরা পড়লে চিকিৎসা

জেলায়-জেলায়
• ১০ জেলায় নতুন করোনা অাক্রান্তের খবর নেই
• কালিম্পংয়ে শেষ মিলেছে ২ এপ্রিল
• জলপাইগুড়িতে শেষ মিলেছে ৪ এপ্রিল
• পূর্ব মেদিনীপুরে ১১ এপ্রিল।
• পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান এবং নদিয়ায় ১৫ এপ্রিল
• সংক্রমিত বেশির ভাগ হাওড়া, উত্তর কলকাতা ও কলকাতা লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনায়


তথ্য সূত্র : রাজ্য সরকার

এ দিন নবান্নে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘১০ দিন আগেও কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনার এলাকাগুলো করোনা-চিত্রে ছিল না। তখন কালিম্পং, এগরা, হলদিয়া নিয়ে কথা বলতাম। এটা নিরন্তর প্রক্রিয়া। কলকাতার উত্তর অংশ, হাওড়া এবং উত্তর ২৪ পরগনার নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকা থেকে কেস বেরিয়েছে, সেগুলিকে কনটেনমেন্ট এলাকা করা হয়েছে সংক্রমণ কমাতে।’’

আরও পড়ুন: করোনা-প্রতিরোধের লক্ষ্যে অ্যান্টিবডি টেস্টে প্রাধান্য হটস্পটকেই

তিনি জানান, রাজ্য সরকার ‘মাইক্রো প্ল্যানিং’ করছে। রাস্তা, চত্বর, বস্তিতে ব্যারিকেড কী ভাবে করা যায়, জরুরি পণ্য বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া নিশ্চিত করা— ১০০ শতাংশ পরিকল্পনার পরেই কাজ শুরু করছে প্রশাসন। থার্মাল স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। এ কাজে প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর, পুলিশকে নিয়ে দল তৈরি করেছে রাজ্য। দূরত্ববিধি মানা, জরুরি পরিষেবা বাড়িতে পাওয়া নিশ্চিত করেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। কলকাতার প্রত্যেক ওয়ার্ডে পুরসভার এক জন করে সিনিয়র অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০০-৪০০ বাড়ি নিয়ে প্রত্যেক এলাকাতেও এক জন অফিসারকে দায়িত্বে রাখা হয়েছে। হাওড়া এবং উত্তর ২৪ পরগনার ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা হয়েছে। তবে দক্ষিণ কলকাতা এর আওতায় নেই বলে জানিয়েছে রাজ্য। মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘হুগলিতে পাশের জেলা থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে আসা হচ্ছে। উত্তরপাড়া থেকে চন্দননগরের মাঝখানে যে এলাকা রয়েছে, সেখানে সমস্যা রয়েছে। ব্যবস্থা করছি।’’

বিধি অনুযায়ী, ‘কনটেনমেন্ট’ এলাকাগুলিতে কারও ‘সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস’ (সারি) বা ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ইলনেস’ (আইএলআই) রয়েছে কি না, তা দেখতে বাড়ি বাড়ি স্ক্রিনিং করার কথা। তেমন গুরুতর উপসর্গ ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সরাসরি চিকিৎসা পরিষেবার আওতায় আনা প্রয়োজন। রাজ্যও সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে র‌্যাপিড পরীক্ষা করবে। কিন্তু তার জন্য কিট এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন মুখ্যসচিব।

রাজ্য সরকার রেড জ়োনগুলিকে অরেঞ্জ জ়োনে আনার জন্য ১৪ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ১৩তম দিনে নতুন করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেলেও সে দিন থেকে ফের ‘কাউন্ট’ শুরু হবে। ফলে পুরো প্রক্রিয়া আবার শুরু করতে হবে। তাই ৩ মে বাকি এলাকার সঙ্গে হটস্পট এলাকাগুলিতে লকডাউন উঠবে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত ভাবে মন্তব্য করতে নারাজ কেউই।


(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Hotspot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE