Advertisement
E-Paper

স্বাস্থ্যে কারিগরি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি কবুল

রোগীর প্রকৃত রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে রোগ কতটা ছড়িয়েছে, তা খুঁজে দেখা পর্যন্ত গোটা বিষয়টাই অনেকাংশে নির্ভর করে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের (ল্যাবরেটরি) কাজের উপরে।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৭ ০৩:০৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ভুয়ো বা জাল ডাক্তার নিয়ে রাজ্য জুড়ে তোলপাড়ের মধ্যেই স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে টেকনিশিয়ান বা কারিগরি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছিল কিছু দিন ধরে। এ বার রাজ্য সরকার স্বীকার করে নিল, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কম যোগ্যতার এবং বিভিন্ন অস্বীকৃত জায়গা থেকে ডিপ্লোমাপ্রাপ্ত অনেক টেকনিশিয়ানকে নিয়োগ করা হয়েছে। এই বিষয়ে তদন্তও শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর।

রোগীর প্রকৃত রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে রোগ কতটা ছড়িয়েছে, তা খুঁজে দেখা পর্যন্ত গোটা বিষয়টাই অনেকাংশে নির্ভর করে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের (ল্যাবরেটরি) কাজের উপরে। অথচ এ-হেন টেকনোলজিস্টদের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার মানের তোয়াক্কা করা হয়নি বলে গত মাসে
অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী জানান, ন্যূনতম যোগ্যতা ছাড়াই টেকনিশিয়ান
হিসেবে অনেকে নিয়োগপত্র পেয়েছেন। অনুমোদনহীন সংস্থা থেকে পাওয়া ডিপ্লোমার জোরেও নিযুক্ত হয়েছেন অনেকে।

রাজ্যে ডাক্তারের ঘাটতির সঙ্গে সঙ্গে এমটি (ল্যাব)-র অভাবে চিকিৎসা পরিষেবা ধাক্কা খাচ্ছে বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। শেষ পর্যন্ত গত জানুয়ারি ও এপ্রিলে দু’দফায় মোট ১৪৭৭ জনকে নেওয়া হয়। তাঁদের নিয়োগের দায়িত্বে ছিল স্বাস্থ্য নিয়োগ বোর্ড। সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রার্থী নিয়োগের সময় বোর্ড কেন নথিপত্র খুঁটিয়ে-খতিয়ে দেখেনি এবং কী ভাবে অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়ার সুপারিশ করেছে, সেই প্রশ্নে তোলপাড় চলছে স্বাস্থ্য দফতরে।

এই দুর্নীতি সামনে আসার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্বাস্থ্য নিয়োগ বোর্ডের সদস্য-পদে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। অস্থায়ী চেয়ারম্যান সুবীর চট্টোপাধ্যায়ের জায়গায় নিযুক্ত হয়েছেন এসএসকেএম হাসপাতালের ইউরোলজির প্রধান রাজেন্দ্র পাণ্ডে। বাকি চার সদস্যের মধ্যে ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অতীন ঘোষের বদলে এসেছেন নির্মল মাজি ও শান্তনু সেন। যদিও নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির জেরেই যে এই পরিবর্তন, তা মানতে চাইছেন না স্বাস্থ্যকর্তারা।

বিশ্বরঞ্জনবাবুর কথায়, ‘‘১৪৭৭ জনেরই নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর মধ্যে মোট দু’দফায় ১০ জনের নিয়োগপত্র বাতিলও করা হয়েছে।’’ কিন্তু ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রোগ্রেসিভ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, স্বাস্থ্য অধিকর্তা যে-দশ জন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে দাবি করছেন, তাঁরা বহাল তবিয়তে কাজ করে যাচ্ছেন। অনিয়ম মানলেও ১৪৭৭ জনের প্যানেলটি বাতিল করা হয়নি। কেন?

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আসলে কেঁচো খুড়তে গিয়ে যাতে কেউটে বেরিয়ে না-যায়, সেই ভয়ে অতি সন্তর্পণে পা ফেলতে চাইছে স্বাস্থ্য প্রশাসন। এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘অজস্র হাসপাতাল-সহ স্বাস্থ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এবং পিপিপি মডেলে চলা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অষ্টম-দশম শ্রেণি পাশ বহু টেকনোলজিস্ট কাজ করছেন। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা সংস্থা থেকে ডিপ্লোমা জোগাড় করেছেন তাঁরা। নিয়োগ নিয়ে অনুসন্ধান চালালে তাঁদের সকলকে নিয়েই টানাটানি শুরু হয়ে যাবে।’’

Health Department West Begal Corruption মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy