Advertisement
E-Paper

বাতিল তালিকার প্রার্থীদের চাকরি কোর্টের নির্দেশে

দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ‘প্যানেল’ বা নিয়োগ-তালিকা বাতিল হয়ে গিয়েছিল সাত বছর আগে। এত দিন পরে সেই তালিকার প্রার্থীরাই কৃষি দফতরে চাকরি পেতে চলেছেন। একেবারে নিচু তলার করণিক-পদে কর্মী নিয়োগের ওই তালিকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় কৃষি দফতর এফআইআর করেছে পুলিশের কাছে। আদালতের নির্দেশে সেই তালিকাটিকেই শিরোধার্য করে শুক্রবার বিজ্ঞাপন দিয়েছে ওই দফতর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৪ ০৩:৩২

দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ‘প্যানেল’ বা নিয়োগ-তালিকা বাতিল হয়ে গিয়েছিল সাত বছর আগে। এত দিন পরে সেই তালিকার প্রার্থীরাই কৃষি দফতরে চাকরি পেতে চলেছেন।

একেবারে নিচু তলার করণিক-পদে কর্মী নিয়োগের ওই তালিকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় কৃষি দফতর এফআইআর করেছে পুলিশের কাছে। আদালতের নির্দেশে সেই তালিকাটিকেই শিরোধার্য করে শুক্রবার বিজ্ঞাপন দিয়েছে ওই দফতর। নির্বাচিত প্রার্থীদের আসল নথিপত্র নিয়ে দফতরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞাপনে। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, বাতিল তালিকার প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার উদ্যোগের পাশাপাশি দুর্নীতিতে অভিযুক্ত প্রাক্তন কিছু কৃষিকর্তার বিরুদ্ধে মামলা যথারীতি চলবে।

কৃষি দফতরের লোয়ার ডিভিশন ক্লার্কের ৩৩১টি পদে নিয়োগের জন্য ২০০৭ সালে, বাম আমলে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। তার ভিত্তিতে ৯৯৩ জনের একটি প্যানেল প্রকাশ করে ওই দফতর। কিন্তু প্রার্থী নির্বাচনে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের গুরুতর অভিযোগ ওঠে। আরও একটি অভিযোগ ছিল, পরীক্ষায় বসার জন্য ৩১ হাজার প্রার্থীর কাছে অ্যাডমিট কার্ডই পাঠানো হয়নি। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি প্রায় হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় ২০০৮ সালে ওই প্যানেল বাতিল বলে ঘোষণা করে তৎকালীন বাম সরকার। সেই ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রথমে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (স্যাট) বা রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে এবং পরে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন কিছু প্রার্থী। আদালত নির্দেশ দেয়, প্রকাশিত মেধা-তালিকার ভিত্তিতেই নিয়োগ করতে হবে। সেই নির্দেশের ভিত্তিতেই এ দিন বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু।

কৃষি দফতরের এক আধিকারিক জানান, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী প্যানেলে নাম থাকা প্রত্যেক প্রার্থীকে পরীক্ষা সংক্রান্ত আসল নথিপত্র দেখাতে হবে। সেই সব নথিপত্র স্কুটিনি করে দেখার পরে চাকরির ‘অফার লেটার’ বা প্রস্তাবপত্র পাঠানো হবে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের কাছে। সব মিলিয়ে আগামী ২৭ অক্টোবরের মধ্যে নিয়োগের যাবতীয় কাজকর্ম শেষ করতে বলেছে উচ্চ আদালত।

হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে ‘স্পেশ্যাল লিভ পিটিশন’ বা বিশেষ অনুমতির আবেদন জমা দিয়েছিল। তবে সেটি প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান কৃষি দফতরের ওই আধিকারিক।

বাম আমলের ওই নিয়োগ কাণ্ডে কৃষি দফতরেরই কয়েক জন শীর্ষ কর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, প্রতারণা এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। নতুন সরকারের তরফে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় এফআইআর করা হয় গত মে মাসে। তবে তার আগেই প্রার্থীদের মামলায় হেরে যায় সরকার। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, মামলা চলাকালীন দফতরে কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত বহু ফাইলপত্র পাওয়া যায়নি। তাতে রাজ্য সরকারের মুখ পুড়েছে বলে বলে মনে করেন কৃষি দফতরের বর্তমান কর্তারা। দফতরের একাংশের অভিযোগ, ফাইল লোপাটের পিছনে তৎকালীন কিছু কৃষিকর্তার বড় ভূমিকা ছিল। এই অবস্থায় নতুন সরকার ২০১৩ সালে নিয়োগের ফাইল লোপাট এবং বাম জমানায় কৃষি দফতরের কিছু কর্তার বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগের তদন্ত করতে বলে সিআইডি-কে।

সিআইডি তদন্ত করে কৃষি দফতরে রিপোর্ট দেয়। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই কৃষি দফতরের দুই প্রাক্তন অধিকর্তা-সহ চার পূর্বতন অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে হেয়ার স্ট্রিট থানায় এফআইআর করা হয়েছে। বাতিল তালিকার প্রার্থীদের চাকরির ব্যবস্থা হলেও অভিযুক্ত প্রাক্তন কৃষিকর্তাদের বিরুদ্ধে সেই মামলা চলবে বলে সরকারি সূত্রের খবর।

purnendu basu agriculture department
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy