Advertisement
E-Paper

ঘর গোছানোর প্লেনাম ঘরোয়াই রাখছে সিপিএম

শহরে একটা হোর্ডিং, ফ্লেক্স বা ছোট পোস্টারেরও দেখা নেই। সোশ্যাল মিডিয়াও নিস্তরঙ্গ। অথচ বাকি আর মাত্র ১৫ দিন! না, পুজোর নয়। কলকাতায় সিপিএমের রাজ্য সাংগঠনিক প্লেনামের!

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:১০

শহরে একটা হোর্ডিং, ফ্লেক্স বা ছোট পোস্টারেরও দেখা নেই। সোশ্যাল মিডিয়াও নিস্তরঙ্গ। অথচ বাকি আর মাত্র ১৫ দিন!

না, পুজোর নয়। কলকাতায় সিপিএমের রাজ্য সাংগঠনিক প্লেনামের!

পার্টি কংগ্রেস, সম্মেলন বা প্লেনাম উপলক্ষে সচরাচর যে ভাবে সমাবেশের আয়োজন থাকে, এ বার তেমন কোনও পরিকল্পনাও নেই। ইটের দেওয়ালে হোক বা ইন্টারনেটের দেওয়াল, কোথাওই কোনও প্রচার নেই। কঠিন সময়ে ঘর সাজানোর বিশেষ অধিবেশনকে যথাসম্ভব ঘরোয়াই রাখতে চাইছে আলিমুদ্দিন।

কলকাতা জেলা সিপিএমের কার্যালয় প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে সিপিএমের কেন্দ্রীয় প্লেনাম হয়েছিল গত বছর ডিসেম্বরে। প্লেনামের সূচনা হয়েছিল ব্রিগে়ড সমাবেশ দিয়ে। যেখান থেকে রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে দলের প্রচারের সুরও বেঁধে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সিপিএম নেতৃত্ব। সেই প্লেনামের লোগো এবং পোস্টার এখনও দিব্যি দৃশ্যমান শহরের যে কোনও জায়গায়। কিন্তু আসন্ন সাংগঠনিক প্লেনাম নিয়ে কোনও তৎপরতাই নেই। শহরে প্লেনাম হতে চলেছে প্রায় নিঃশব্দেই!

সিপিএম রাজ্য নেতৃত্বের যুক্তি, এ বারের প্লেনামের উদ্যোগ নিখাদ সাংগঠনিক প্রয়োজনে। কোণঠাসা সংগঠনের ত্রুটি-বিচ্যুতি খুঁজে মেরামতের পথ বার করাই এই প্লেনামের উদ্দেশ্য। বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের পরে দলের বিভিন্ন স্তরের কর্মীরা এমনিই হতোদ্যম। সংগঠনে কিছু রদবদল এনে দলকে চাঙ্গা করার চেষ্টা এখন রাজ্য নেতৃত্বকে করতে হবে। তা ছাড়া, গত বছর কেন্দ্রীয় প্লেনামে সংঠনের ব্যাপারে যে সব সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার অনেক কিছুই বাস্তবায়িত করা যায়নি সামনে বিধানসভা ভোট থাকায়। এই প্লেনাম থেকে সেই পড়ে-থাকা সিদ্ধান্তও কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই গোটা বিষয়টার সঙ্গেই আম জনতার বিশেষ সংযোগ নেই। তাই অহেতুক টাকা খরচ করে প্লেনামের উত্তাপকে চার দেওয়ালের বাইরে টানতে চাইছে না সিপিএম।

দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘এই প্লেনামকে একটা বর্ধিত বৈঠক হিসাবেই দেখা হচ্ছে। যেখানে সংগঠন নিয়ে আলোচনা হবে। সচেতন ভাবেই এ বারের প্লেনাম নিয়ে বিশেষ প্রচার করা হচ্ছে না। কোনও সমাবেশও থাকছে না।’’

প্লেনামের নির্ঘণ্টও ঠিক করা হয়েছে পুজোর মরসুমে। যখন মহালয়া থেকে উৎসবের দিকেই নজর ঘুরে যাবে আম জনতার। প্লেনামকে ঘিরে বাড়তি খরচও এ বার নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছে সিপিএম। প্রথমে ঠিক ছিল প্লেনাম হবে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে তিন দিনের। পরে ঠিক হয়েছে, আলোচনার মোট সময় একই রেখেও ৩০ তারিখ সকাল থেকে শুরু করে প্লেনাম সেরে ফেলা হবে দু’দিনে। যাতে প্রতিনিধিদের আরও এক রাত কলকাতায় থাকা-খাওয়ার খরচ ছেঁটে ফেলা যায়।

সিপিএম সূত্রে বলা হচ্ছে, দলের রাজ্য প্লেনাম হচ্ছে ৪৬ বছর পরে। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার। আগের বার রাজ্য প্লেনাম বসেছিল শ্যামনগরের গারুলিয়ায়। ১৯৭০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেই প্লেনামে আলোচ্য ছিল, অন্য শরিকদের সঙ্গে বিবাদের প্রেক্ষিতে যুক্তফ্রন্টে থাকার ব্যাপারে করণীয় ঠিক করা। দ্বিতীয় যুক্তফ্রন্ট সরকারে জ্যোতি বসু তখন উপ-মুখ্যমন্ত্রী। সে বার অবশ্য সমাবেশের ব্যবস্থা ছিল। যা এ বার নেই। প্রসঙ্গত, এ রাজ্যের মধ্যে বর্ধমান (১৯৬৮),

সালকিয়া (১৯৭৮) ও কলকাতায় (২০১৫) তিনটি সর্বভারতীয় প্লেনাম হয়েছে সিপিএমের।

Plenum
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy