ফাইল চিত্র।
তৃণমূল ভবনে এক সময়ে তিনি নিয়মিত বিরোধী শিবির থেকে আসা নেতা-বিধায়কদের হাতে শাসক দলের পতাকা তুলে দিতেন। তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে তার পরে নিজেই চলে গিয়েছিলেন বিজেপিতে। ‘ফুল’ বদলে পদ্ম থেকে আবার ফিরে এলেন ঘাসফুল শিবিরে। মুকুল রায়ের এই দলবদলের ঘটনাপ্রবাহকে ঘিরে বিজেপি ও তৃণমূল, দু’দলকেই একসঙ্গে কটাক্ষ করছে কংগ্রেস ও সিপিএম।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, বিধানসভা ভোটের প্রচারে স্বয়ং তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছিল মুকুলবাবুর প্রতি তাঁর পুরনো দল যথেষ্ট ‘নরম’। সেই সূত্র ধরেই শেষমেশ তিনি আবার ফিরে গিয়েছেন মমতার দলে। অধীরবাবু শুক্রবার বলেন, ‘‘কে কোন দল করবেন, তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। তবে যে মুকুল রায় বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে বাংলায় আসল পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তিনিই এখন তৃণমূল নেত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করলেন। নিজের সন্তানকেও সঙ্গে নিয়ে গেলেন। বাংলায় দলবদলের রাজনীতির যে ধারা শুরু হয়েছে, তাতে একটা নতুন মাত্রা যোগ হল।’’
তৃণমূলের বিকল্প হিসেবে বিজেপিকে বেছে নেওয়ার ভাবনা বিধানসভা ভোটের পর থেকেই যে ফের ধাক্কা খাচ্ছে, সেই প্রশ্নে সরব হয়েছে সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘তৃণমূলের বিকল্প যে বিজেপি হতে পারে না, সেটা আবার প্রমাণিত। বাংলায় বিকল্প দিতে পারবে বামপন্থী ভাবনাই।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘যাঁরা তৃণমূলে স্বচ্ছন্দ, তাঁরা বিজেপিতেও স্বচ্ছন্দ। এটাই আমরা বারবার বলার চেষ্টা করেছি। মুকুল রায়ের দলবদলের ঘটনায় সেটা আবার সামনে এল।’’
সারদা এবং নারদ-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছিল মুকুলবাবুর। সম্প্রতি রাজ্যের চার নেতা-মন্ত্রীকে নারদ-কাণ্ডে সিবিআই যখন গ্রেফতার করে, তখন তৃণমূলের পাশাপাশিই বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রশ্ন তুলেছিলেন, মুকুলবাবু ও শুভেন্দু অধিকারীর ক্ষেত্রে পৃথক ফল কেন হবে? এখন মুকুলবাবু তৃণমূলে চলে আসার পরে সেই দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গও ফের তুলছে সিপিএম ও কংগ্রেস।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফলকে ফ্যাসিবাদ-বিরোধী রায়’ বলেই আখ্যা দিয়েছিল সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন। ওই দলের রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ এ দিন বিবৃতিতে দাবি করেছেন, ‘‘ক্ষমতার লোভে দলবদল করে বিজেপিতে গিয়ে যারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, আবার ক্ষমতার আকর্ষণেই তারা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে এলে আবার জনতার রায় নিতে হবে। এই দলবদলের সুবিধাবাদী রাজনীতি থেকে পশ্চিমবঙ্গের ও দেশের রাজনৈতিক পরিসরকে মুক্ত করা আজ গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy