ফাইল চিত্র।
সম্মেলন-পর্বে অন্তত তিনটি জেলায় কমিটি গড়া নিয়ে ভোটাভুটি হয়েছিল। এরিয়া কমিটি স্তরে ভোট হয়েছিল আরও বেশ কিছু জেলার নানা অংশে। শেষ পর্যন্ত কমিটি তৈরি হয়ে গেলেও দলের অন্দরে সমস্যা মিটে যায়নি। লোকসভা নির্বাচন মাথায় রেখে সাংগঠনিক ভাবে সমস্যায় থাকা জেলাগুলির দায়িত্ব দলের শীর্ষ রাজ্য নেতাদের হাতেই দিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
সিপিএমে ১৫ জনের নতুন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী তৈরি হয়েছে সদ্য। বিজেপি, কংগ্রেস বা তৃণমূল কংগ্রেসে যেমন জেলার দায়িত্বে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়, সিপিএমের সাংগঠনিক নিয়ম অনুসারে সেই দায়িত্ব পালন করেন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যেরা। রাজ্য কমিটির কিছু সদস্যকেও তাঁদের সঙ্গে বাড়তি দায়িত্বে রাখা হয়। দলীয় সূত্রের খবর, এ বার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের দায়িত্বে প্রাথমিক ভাবে বেশ কিছু রদবদল হয়েছে। কিছু নেতার হাতে-থাকা জেলা পরিবর্তন করা হয়েছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে আগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে অন্য নেতাদের জুড়ে দিয়ে বাড়তি ভার দেওয়া হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে সংগঠনকে যথাসম্ভব গুছিয়ে রাখাই দলের লক্ষ্য বলে সিপিএম নেতৃত্বের ব্যাখ্যা।
সিপিএম সূত্রের খবর, নতুন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এ বার কলকাতার পাশাপাশি পাহাড়ের দার্জিলিং এবং সমতলে পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দায়িত্ব নিজের হাতে রেখেছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বারের জেলা সম্মেলনে সরকারি প্যানেলের প্রস্তাব উল্টে দিয়ে ভোটাভুটিতে জিতে জেলা সম্পাদক হয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ। আবার পূর্ব বর্ধমানেও পুরনো ক্ষমতাসীন নেতৃত্বের সঙ্গে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের বিবাদ বহু বার সামনে এসেছে। ওই দুই জেলার ভারই আপাতত হাতে রেখেছেন রাজ্য সম্পাদক। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাশাপাশি এ বার উত্তর ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুজন চক্রবর্তীকে। উত্তর ২৪ পরগনায় এ বার জেলা কমিটি গড়া ঘিরে টানাপড়েন এবং ভোটাভুটি নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছিল! শিবিরে বিভক্ত উত্তর ২৪ পরগনার সঙ্গে লক্ষ্মণ শেঠদের পুরনো জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের সাংগঠনিক সমস্যা সামলাতে হবে সুজনবাবুকে।
হুগলির জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষকে এ বার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে আনা হয়েছে। তাঁর সঙ্গেই ওই জেলার দায়িত্বে থাকছেন দলের এক শীর্ষ নেতা শ্রীদীপ ভট্টাচার্য। সেই সঙ্গে তাঁর হাতে থাকছে হাওড়াও। ওই জেলায় এ বার সম্পাদক বদল হয়েছে এবং সংগঠন বেহাল। এ বারই পলিটবুরোয় জায়গা পাওয়া রামচন্দ্র ডোম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ জেলা দেখবেন। জনজাতি ও সংখ্যালঘু সমর্থন পুনরুদ্ধার করেই সিপিএম এখন ঘুরে দাঁড়ানোর জমি তৈরি করতে চাইছে।
বাম আন্দোলনের ক্ষেত্রে এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছাত্র ও যুবদের। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে ছাত্র ফ্রন্টের দায়িত্বে আপাতত সুজনবাবুকেই রাখা হয়েছে। যুব ফ্রন্ট যেমন সেলিম দেখতেন, তেমনই এ বার তাঁর সঙ্গে থাকবেন ডিওয়াইএফআইয়ের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক আভাস রায়চৌধুরী। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘আন্দোলন হোক বা নির্বাচন, সংগঠনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্য সম্মেলনে তৈরি হওয়া রূপরেখা মেনে সংগঠনকে সংহত করাই এখন লক্ষ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy