বাঁকুড়ায় হেঁটে মমতার জনসংযোগ। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।
গটগটিয়ে এগিয়ে চললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে ছুটতে হল জেলার নেতাদের। কেউ নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে চলে গেলেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। কখনও আবার মমতা খোদ এগিয়ে গেলেন ভিড়ের দিকে। মঙ্গলবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের শুরুতেই বাঁধন ছাড়া উন্মাদনা চোখে পড়ার মতো।
দুপুর থেকেই বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবন থেকে সার্কিট হাউস যাওয়ার রাস্তার পাশে জমায়েত করে হাজার খানেক মহিলা, ছাত্র-যুব-সহ সর্বস্তরের তৃণমূল কর্মীরা। সামাল দিতে হিমশিম খান পুলিশ কর্মীরা। দুপুর পৌনে দু’টোর পর বাঁকুড়ার আকাশে মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার উড়তে দেখে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে জনতা। সকলকে অবাক করে রবীন্দ্রভবন লাগোয়া হেলিপ্যাড থেকে গাড়িতে না উঠে হেঁটেই সার্কিট হাউসের পথে রওনা হন মমতা। নেত্রীকে দেখে পুলিশের দড়ি পেরিয়ে কেউ মুখ্যমন্ত্রীকে প্রণাম করেন, কেউ হাত মেলান। নেত্রী হেঁটে চলেন নিজের ছন্দেই। তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী ছুটতে ছুটতে, ঘামে ভিজে মুখ্যমন্ত্রীর সামনের ভিড় সরান। হাঁটা শেষে হাঁপাতে থাকেন জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অরূপ খাঁ। সার্কিট হাউস মোড়ের কাছাকাছি এসে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন, হাতে চোট পেয়েছেন তৃণমূল নেত্রী শম্পা দরিপা। নেত্রীর সঙ্গে পা মেলাতে গিয়ে প্রায় ছুটতে হয়েছে প্রবীণ তৃণমূল নেতা শুভাশিস বটব্যালকে।
ওই ভিড়ের মাঝেই নিজের ভাঙা বাড়ির কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান বাঁকুড়ার কেঠারডাঙার বৃদ্ধা রমা মালাকার। তা শুনে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন মমতা। পথে ভৈরবস্থান মন্দিরে গিয়ে ধূপ জ্বালিয়ে প্রণামও করেন তিনি। সার্কিট হাউস মোড়ে সেখানকার পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য জেলা শাসক সিয়াদ এন ও জেলা পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারির সঙ্গে কথা বলেন নেত্রী। এরপর হালকা মেজাজে মহিলা ঢাকিদের সঙ্গে ঢাকও বাজিয়েছেন।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাঁকুড়ায় প্রচারে এসে শেষবার পদযাত্রা করেছিলেন মমতা। দীর্ঘ আট বছর পরেও তৃণমূল নেত্রীর গতির সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে ও ভিড় সামাল দিতে ঘাম ছুটেছে নেতা-কর্মীদের। সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতির কটাক্ষ, “লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে রায় দিতে মুখিয়ে রয়েছে জনতা।” বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের দাবি, “হাতে গোনা কিছু তৃণমূল কর্মী ছাড়া মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে কারও আগ্রহ ছিল না।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপের পাল্টা, “নেত্রীর প্রতি মানুষের আবেগ ভোটের আগেই সিপিএম, বিজেপির আত্মবিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy