Advertisement
০৭ মে ২০২৪
ফোনে আলোচনা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে

ফণীর ছোবল দেখতে বেরোলেন কেশরীনাথ

প্রধানমন্ত্রীর ফোন পেয়েই ফণীর জন্য রাজ্যের কতটা ক্ষতি হয়েছে তা দেখতে শনিবার তড়িঘড়ি কাকদ্বীপ যান রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। 

কাকদ্বীপের পথে পুলিশের সঙ্গে কথা কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর। নিজস্ব চিত্র

কাকদ্বীপের পথে পুলিশের সঙ্গে কথা কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৯ ০৩:৩৭
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রীর ফোন পেয়েই ফণীর জন্য রাজ্যের কতটা ক্ষতি হয়েছে তা দেখতে শনিবার তড়িঘড়ি কাকদ্বীপ যান রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।

সেখানে পৌঁছে সাধারণ মানুষের কাছে তিনি জানতে চান, ফণীর বিপর্যয়ের পরে কেমন আছেন তাঁরা, ত্রাণ ঠিকঠাক মিলেছে কি না। প্রত্যুত্তরে বাসিন্দারা রাজ্যপালকে জানান, তাঁরা ঠিক আছেন। রাজ্যের ত্রাণ কাজে তাঁরা খুশি। আর গ্রামবাসীদের বক্তব্য শুনে রাজ্যপালও বলেন, ‘‘স্থানীয়েরা বলছেন তাঁরা ভাল আছেন। স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থায় তাঁরা সন্তুষ্ট।’’ একই কারণে আজ, রবিবার তাঁর মেদিনীপুর যাওয়ার কর্মসূচি আছে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হলেও রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে তিনি যে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও কথা বলেননি রাজ্যপাল নিজেই সে কথা জানিয়েছেন। আর তাতেই ভোট মরসুমে তাঁর এই সফর নিয়ে ‘পদ্ধতিগত’ প্রশ্ন উঠেছে। তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করার জন্য রাজ্যপালকে ব্যবহার করছে। এ কাজ অসাংবিধানিক এবং অসৌজন্যমূলক।’’

শনিবার দুপুর তিনটে নাগাদ কাকদ্বীপের সেচ দফতরের বাংলোয় পৌঁছন কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সেখানেই স্থানীয় বিডিও, জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের থেকে জেনে নেন ফণীর প্রভাবে কতটা ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবন উপকূলের। কিছু ক্ষণ বৈঠকের পরে রাজ্যপাল কাকদ্বীপের কয়েকটি গ্রাম, আশ্রয়স্থল নিজের চোখে দেখতে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলতে বেরিয়ে পড়েন। প্রথমে তিনি পৌঁছে যান কাকদ্বীপের লট ৮ এর জেটিতে। সেখানে তখন ভেসেলের অপেক্ষায় সাগরদ্বীপের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। ফণীর জন্য তাঁদের কী কী ক্ষতি হয়েছে, তা জানতে চান রাজ্যপাল।

‘সব ঠিক আছে’ শুনে নদীর পাড়ে বেশ কিছু বড় পাইপ দেখিয়ে জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে সেগুলি সম্পর্কে জানতে চান তিনি। আধিকারিকরা জানান, সারা বছর নদী থেকে পলি তোলার কাজে ব্যবহার করা হয় ওই পাইপগুলি। এর পরেই সাংবাদিকদের কাছে এলাকার পরিস্থিতি জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন কেশরীনাথ। আয়লার মতো ফণীতে তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি এমনকি, বিভিন্ন সাইক্লোন সেন্টার থেকে লোকজনও বাড়ি ফিরে গিয়েছেন শুনে অন্য গন্তব্যে রওনা হন তিনি।

তার আগে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বললাম। ত্রাণ কাজে তাঁরা কতটা খুশি জানতে চেয়েছি। সকলে খুশি।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোনের প্রসঙ্গে রাজ্যপালের বক্তব্য, ‘‘উনিও পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। জানতে চাইছিলেন ত্রাণ কাজের তহবিল নিয়ে কোনও সমস্যা আছে কি না। আরও সহযোগিতার প্রয়োজন কি না।’’ তখনই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ফণী-পরিস্থিতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়নি।

এখানেই ‘রাজনীতি’ দেখছেন পার্থবাবু। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বিগত দিনে বাংলায় বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়েছে তখন প্রধানমন্ত্রীকে খুঁজেও পাওয়া যায়নি। অন্য রাজ্য সাহায্য পেলেও বাংলা বঞ্চিত থেকেছে। এখন ভোট এসেছে বলে ওঁর টনক নড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে তা-ই রাজ্য প্রশাসনকে এড়িয়ে সরাসরি রাজ্যপালকে ব্যবহার করছেন।’’

এ দিন কাকদ্বীপের মধুসূদনপুরের শিবকালী নগরের বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রেও গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে অবশ্য তখন আর কোনও শরণার্থী ছিলেন না। সেখানে উপস্থিত কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুতের কর্মাধ্যক্ষ সন্দীপ কামারের কাছে তিনি জানতে চান, শুক্রবার কত মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সন্দীপবাবু তাঁকে জানান প্রায় হাজার খানেক মানুষ। পরে সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘শুক্রবার যখন এত মানুষ ছিলেন তখন রাজ্যপাল এসে দেখতে পারতেন। এখন তো সব মিটে গিয়েছে! এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Fani Keshari Nah Tripathi Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE