Advertisement
E-Paper

ফুঁসছে সমুদ্র, দিঘায় খালি করা হল সমস্ত হোটেল, প্রবল ঝড়বৃষ্টি বাংলার উপকূলে

গতকাল রাতে শঙ্করপুরে একটি হাইটেনশন  লাইনের খুঁটি ঝড়ে উড়ে যায়। আতঙ্কের সৃষ্টি হয় এলাকায়।

সিজার মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৯ ১০:৫২
ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

শেষ মুহূর্তে গতি বাড়িয়ে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই ওড়িশার উপকূলে ঢুকে পড়েছে বিধ্বংসী সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ফণী। আজ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার বেগে ওড়িশার গোপালপুর এবং পুরীতে আছড়ে পড়েছে এই সামুদ্রিক সাইক্লোন। আর তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দক্ষিণবঙ্গের ১৫ জেলায়।

রাজ্যে ফণীর প্রভাব বোঝা যাচ্ছিল গতকাল রাত থেকেই । উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুর সহ দক্ষিণবঙ্গের আকাশ থম মেরেছিল। উপকূলের ভিতরের দিকে ঝোড়ো হাওয়া না থাকলেও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হচ্ছিল মাঝেমধ্যেই। সকাল আটটার পর থেকেই তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়েছে হাওড়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরে। সকাল ন’টা থেকে ব্যাপক বৃষ্টি শুরু হয় তমলুক, মেচেদা সহ আরও বিভিন্ন জায়গায়।

উপকূল এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বইছে সকাল থেকেই। সঙ্গে হচ্ছে প্রবল বৃষ্টি। গতকাল রাতে শঙ্করপুরে একটি হাইটেনশন লাইনের খুঁটি ঝড়ে উড়ে যায়। আতঙ্কের সৃষ্টি হয় এলাকায়। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরি প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তাজপুর, শঙ্করপুর, দিঘা সহ পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন উপকূলবর্তী এলাকার নিচু জায়গা থেকে গ্রামবাসীদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে রিলিফ সেন্টারে। সাইক্লোন সেন্টারে। তাঁদের জন্য মজুত করা হয়েছে ত্রাণসামগ্রী।

আরও পড়ুন: লাইভ: ২০০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ল ফণী, বিধ্বস্ত ওড়িশা

ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছে দিঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুরের সমস্ত হোটেল। সারারাত রাস্তায় টহল দিয়েছেন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মীরা। রাজ্যের জন্য প্রস্তুত আছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাঁচটি দল। প্রতিটি দলে আছেন ৪৫ জন সদস্য। দিঘায় পৌঁছেছে এনডিআরএফের সেকেন্ড ব্যাটেলিয়ন। এ ছাড়া ১৩টি দল স্ট্যান্ড বাই হিসেবে রাখা আছে শুধু রাখা আছে পশ্চিমবঙ্গের জন্য। তৈরি রাজ্য প্রশাসনের অসমারিক প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং দমকলকর্মীরাও। তাঁরা যোগাযোগ রাখছেন পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে স্থানীয় বিডিও অফিস থেকে। সমস্ত স্কুল, কলেজ বন্ধ। রাজ্য প্রশাসনের ডাকে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রেখেছে সমস্ত স্কুল কলেজ।

দিঘায় ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়েছে হোর্ডিং। নিজস্ব চিত্র।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাজ্য প্রশাসনও। কলকাতা সব উপকূলবর্তী এলাকার বিভিন্ন পুরসভায় সারারাত কাজ করেছেন নিকাশি ও পাম্পিং স্টেশনের কর্মীরা। জল জমলেই যাতে তা বের করে দেওয়া যায়, সেই জন্য তৈরি রাখা হয়েছে পরিকাঠামো। বন্ধ রাখা হয়েছে সমস্ত ফেরি সার্ভিস। কলকাতায় গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে মোতায়েন করা হয়েছে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কর্মীরা। সড়ক পরিবহনে যাতে ঝড়-বৃষ্টির প্রভাব না পড়ে, সেই জন্য তৈরি আছেন পুরকর্মীরাও। রাস্তায় গাছ ভেঙে পড়লে তা দ্রুততার সঙ্গে সরিয়ে দেওয়ার পরিকাঠামোও তৈরি। যোগাযোগ রাখা হচ্ছে সিইএসসি এবং রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গেও।

আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়, সুরক্ষিত থাকতে কী করবেন, কী করবেন না?

সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির মোকাবিলায় আজ সকাল থেকে সোমবার ৬ মে পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ ২৪ ঘণ্টা চালু করেছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম। দায়িত্বে আছেন ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিকরা। সঙ্গে আছেন কলকাতা পুরসভা, পূর্ত দফতর, দমকল বিভাগ এবং অন্যান্য সরকারি পরিষেবা সংস্থাগুলির পদস্থ আধিকারিকরা। তৈরি আছে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পরিস্থিতি মোকাবিলার পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা নিয়ে।

কলকাতা পুলিশের কন্ট্রোল রুমের ( ০৩৩-২২১৪৩০২৪/ ২২১৪-৩২৩০/২২১৪-১৩১০) পাশাপাশি সমস্যার কথা জানানো যাবে ১০০ ডায়াল করেও। বিশেষ হেল্পলাইনও (৯৪৩২৬১০৪৪৪) খোলা হয়েছে। এই নম্বরে সমস্যা জানানো যাবে হোয়াটসঅ্যাপ করে।

Cyclone Fani Cyclone Fani ফণী Digha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy