Advertisement
০২ মে ২০২৪
Darivit

‘আর যাবেন না,’ দাড়িভিট বন্ধই

তাঁর কথা শোনার পরে থমকে দাঁড়িয়ে যান পাঁচ শিক্ষক। তার পর ফিরে যান তাঁরা। পরে বলেন, ‘‘গোলমাল হতে পারে, এই আশঙ্কায় আর গেলাম না।’’

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

অভিজিৎ পাল
দাড়িভিট শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫৭
Share: Save:

শিক্ষকরা জড়ো হয়েছিলেন সকালবেলা। কিছুক্ষণ আলোচনার পরে স্কুলের দিকে হাঁটতে শুরু করেন তাঁদের পাঁচ জন। তখনই দূর থেকে এক জন চেঁচিয়ে বলে ওঠেন, ‘‘মাঠের ও দিকে (স্কুলের দিকে) আর যাবেন না মাস্টারমশাই!’’ তিনি নিহত তাপস বর্মণের বাবা বাদল বর্মণ। তাঁর কথা শোনার পরে থমকে দাঁড়িয়ে যান পাঁচ শিক্ষক। তার পর ফিরে যান তাঁরা। পরে বলেন, ‘‘গোলমাল হতে পারে, এই আশঙ্কায় আর গেলাম না।’’

ফলে বন্ধই রইল দাড়িভিট হাইস্কুল। গত ২০ সেপ্টেম্বর গোলমালের পরে তিন সপ্তাহ হতে চলেছে। এখনও দাড়িভিট স্কুলের তালা খুলতে পারেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসন। স্কুলের মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ১৯০০-এর বেশি। এর মধ্যে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরাও রয়েছে। তাদের রেজিস্ট্রেশন ফর্ম সময়মতো বোর্ডে না পাঠালে নতুন করে সমস্যা তৈরি হতে পারে। দ্বাদশ শ্রেণির মণিকা বিশ্বাস ও পূজা সরকার স্কুলে ভাল ছাত্রী বলে পরিচিত। দু’জনেই বলেন, ‘‘খুব মানসিক চাপে রয়েছি। টেস্ট পরীক্ষা কবে হবে, তারও ঠিক নেই।’’ হাজিরা খাতায় সই করতে পারছেন না শিক্ষকরা। ফলে তাঁদেরও বেতন পাওয়া নিয়ে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এ দিন বিশেষত পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখেই সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ইসলামপুরের টাউন লাইব্রেরি হলের সামনে হাজির হন দাড়িভিট হাইস্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ কুণ্ডুও ছিলেন। আধ ঘণ্টা আলোচনার পরে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, ঝুঁকি নিয়েই স্কুলমুখী হবেন। প্রধান শিক্ষক না গেলেও ইংরেজির শিক্ষক অনিল মণ্ডল, অঙ্কের শিক্ষক সুদীপ্তকুমার সিংহ এবং আরও এক শিক্ষক ও দুই প্যারাটিচার স্কুলের মাঠ পর্যন্ত যান। তখনই বাদল বর্মণ বলে ওঠেন, ‘‘ও দিকে যাবেন না মাস্টারমশাই!’’

এ দিনও স্কুলের দরজার সামনে ত্রিপল খাটিয়ে বসেন তাপসের মা মঞ্জু বর্মণ এবং রাজেশের মা ঝর্ণা সরকার। ছিলেন তাপসের বোন ডলিও। এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকরা চান, ছাত্রছাত্রীদের অন্য স্কুল থেকে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হোক। প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ কুণ্ডু মন্তব্য করতে চাননি। ইসলামপুরের মহকুমাশাসক মণীশ মিশ্র বলেন, ‘‘আমরা চাই স্কুল তাড়াতাড়ি খুলুক। অভিভাবকদের কোনও দাবি থাকলে তাঁরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’’ বিকেলে শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন তিনি।

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সুজিতকুমার মাইতি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলা বিদ্যালয় দফতরের একাধিক কর্তার দাবি, দাড়িভিটের পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁরা রোজ খোঁজখবর নিচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Darivit School Open
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE