Advertisement
E-Paper

নিয়ন্ত্রণেই ডেঙ্গি, মত মলয়েরও

গত ১২ অক্টোবর নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোটেই উদ্বেগজনক নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১২
নবান্নে: সাংবাদিকদের মুখোমুখি মুখ্যসচিব মলয় দে। সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

নবান্নে: সাংবাদিকদের মুখোমুখি মুখ্যসচিব মলয় দে। সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

রাজ্যে ডেঙ্গি-পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয় এবং কোনও তথ্যই গোপন করা হচ্ছে না— এ বার খোদ মুখ্যসচিবকে আসরে নামিয়ে ডেঙ্গি নিয়ে নিজেদের অবস্থান আরও এক বার জানিয়ে দিল সরকার।

গত ১২ অক্টোবর নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোটেই উদ্বেগজনক নয়। বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলি ঠিকমতো পরীক্ষা না-করেই ডেঙ্গি হয়েছে বলে জানিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, অভিযোগ করেছিলেন তিনি। তার পর গত ১২ দিনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক ডেঙ্গি আক্রান্ত ও জ্বরে মৃত্যুর খবর এসেছে। অভিযোগ, ডেঙ্গি হয়েছে বলে রিপোর্ট না দেওয়ার জন্য ল্যাবগুলির উপরে শাসক দলের চাপ বেড়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও চাপ দেওয়া হচ্ছে জ্বরে মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি না লেখার জন্য।

তবে সরকারও যে যথেষ্ট চাপে, তার প্রমাণ মিলেছে মঙ্গলবার খোদ মুখ্যসচিব মলয় দে’কে দিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করানোয়। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর ঠিক করে দেওয়া অবস্থান থেকে বিন্দুমাত্র নড়েননি তিনি। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয় বোঝাতে পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেছেন, ‘‘গত বছর এই সময়ে ডেঙ্গিতে এ রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২০,১৪০। মৃতের সংখ্যা ৪০। এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৮,২৩৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের।’’ গত কয়েক দিন ধরে এই যুক্তিই দফায় দফায় শুনিয়েছে স্বাস্থ্যভবন।

এ রাজ্যের ডেঙ্গি-পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক নয়, তা বোঝাতে আগের দিন মুখ্যমন্ত্রী একাধিক ভিন্‌ রাজ্যের তুলনা টেনেছিলেন। মুখ্যসচিবও এ দিন বলেন, ‘‘আমরা অন্য রাজ্যের সোয়াইন ফ্লু এবং মশাবাহিত রোগের পরিসংখ্যান জোগাড় করেছি। তাতে দেখা গিয়েছে, এ রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই কম।’’ কিন্তু ভিন্‌ রাজ্যে ডেঙ্গিতে মৃত্যু কত জনের জানতে চাওয়া হলে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘সেই তথ্য এখনও আমাদের
হাতে পৌঁছয়নি।’’

ডেঙ্গি সম্পর্কে তথ্য গোপন করার অভিযোগও খণ্ডন করে মুখ্যসচিব বলেছেন, ‘‘ডেঙ্গির মতো মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ মিললে, তা নথিভুক্ত করতে হয়। এটাই আইন। তার নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলিকেও তা প্রশাসনকে জানাতে হয়।’’ কিন্তু শাসক দলের চাপে অনেক বেসরকারি হাসপাতালই ডেঙ্গি হলেও তা লিখছে না বলে অভিযোগ। মুখ্যসচিবের জবাব, ‘‘এমন ঘটনা জানা নেই। স্বাস্থ্যভবন থেকে এমন কিছু লেখার নির্দেশও দেওয়া হয়নি। ডেঙ্গি হলে কেন লিখবে না? লিখতেই হবে।’’

প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি সঠিক তথ্য পেশ না-করার দায় প্রকারান্তরে বেসরকারি ল্যাব ও হাসপাতালগুলির উপরেই চাপিয়ে দিচ্ছে রাজ্য? সেই প্রশ্নের কোনও জবাব মুখ্যসচিবের বক্তব্যে মেলেনি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই তিনি বলেন, ‘‘অনেক সেন্টারে র‌্যাপিড টেস্ট হচ্ছে, তা বিজ্ঞানভিত্তিক নয়। সেটা নথিভুক্ত করা যাবে না।’’

মুখ্যসচিব এ দিন বলেন, ডেঙ্গ২ এবং ডেঙ্গ৪ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হওয়ায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে এবং শহরাঞ্চলের পাশাপাশি গ্রামেও রোগ ছড়িয়েছে। যদিও দেগঙ্গা, হাবরায় ডেঙ্গি ছড়ানো নিয়ে প্রশ্নে তাঁর জবাব, ‘‘ওখানে কয়েকটি জায়গায় ডেঙ্গির ঘটনা ধরা পড়েছে। তবে সবগুলি ডেঙ্গি নয়।’’ মশার লার্ভা রোধে কলকাতা পুরসভা যতটা সক্রিয়, জেলার পুরসভাগুলি এখনও ততটা জোরকদমে ময়দানে নামতে পারেনি, এমন অভিযোগ সম্পর্কে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘আমরাও অভিযোগ পাচ্ছি। পুরসভাগুলির পিছনে নিয়মিত লেগে আছি। নজরদারি চলছে। কী করতে হবে তা স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

Dengue মলয় দে Malay dey
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy