নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজ শুরু হওয়ার পর রাজ্য প্রশাসনের কাজের ভার বাড়ছে। এই সময়ে উন্নয়নমূলক কাজ যাতে কোনও ভাবেই থমকে না যায়, তার জন্য সরাসরি নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। শনিবার নবান্নে জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক বৈঠকে বসেন তিনি। সেখানেই এই বার্তা দেন পন্থ।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে মুখ্যসচিব সরাসরি এসআইআর শব্দ ব্যবহার না-করলেও তাঁর বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট— বিকল্প কোনও কাজের ‘অজুহাতে’ সরকারি প্রকল্প এগোতে দেরি হলে, তা মেনে নেওয়া হবে না। উপস্থিত আধিকারিকরা বুঝে নেন, নির্দেশটি মূলত এসআইআরের কাজের বাড়তি চাপকে ‘লক্ষ্য’ করেই। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, মুখ্যসচিব স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন— ‘আমার পাড়া, আমার সমাধান’ কর্মসূচিতে যে সব জনদাবি উঠেছে, সেগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে এবং অগ্রগতির রিপোর্ট পাঠাতে হবে নবান্নে। একই সঙ্গে রাজ্যের ১৫টি জনহিতকর বিভিন্ন দফতরের প্রকল্পের কাজ যাতে কোনওভাবেই মন্থর না হয়, সেদিকেও কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
বিশেষ করে ‘বাংলার বাড়ি’, ‘জলস্বপ্ন’, ‘পথশ্রী’ এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ঋণপ্রদান-সহ প্রকল্পগুলির ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন মুখ্যসচিব। গ্রামীণ সড়ক প্রকল্প কোথাও আটকে আছে কি না এবং উপভোক্তার তালিকা ঠিকঠাক অনুসৃত হচ্ছে কি না— তা-ও খতিয়ে দেখতে বলা হয়। প্রশাসনিক নির্দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও রয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। আগামী ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে। সেই কারণে এসআইআরের চাপে সরকারি পরিষেবা বা উন্নয়ন যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়— এটাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা, মত ওই মহলের একাংশের।
অন্য দিকে, রাজ্যে এসআইআর চলাকালীন বিএলও এবং সাধারণ মানুষের মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তৃণমূলের দাবি— এসআইআর আতঙ্কেই এ সব হচ্ছে, এর দায় কমিশনের। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ইতিমধ্যেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই ঘটনার পরেই মুখ্যসচিবের এই জরুরি বৈঠককে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে প্রশাসনিক মহলে।