Advertisement
২৩ মার্চ ২০২৩

অনটনের মধ্যেও শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখে চলেছে জারিয়া

আর্থিক প্রতিবন্ধকতা ছিল। আরও ছিল সামাজিক বাধা। এই পরিবেশে শুধুমাত্র মনের জোরকে সঙ্গী করেই সংগ্রামপুরের জারিয়া খাতুন এ বার উচ্চমাধ্যামিকে কলাবিভাগ থেকে ৩৫০ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। তাঁর ইচ্ছে, ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষিকা হবে। কিন্তু আর্থিক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই রে সেই ইচ্ছে কত দূর পূরণ হবে, তা নিয়ে এখন সংশয়ে মেয়েটি।

স্বপ্নপূরণের আশায়। ছবি: শান্তশ্রী মজুমদার।

স্বপ্নপূরণের আশায়। ছবি: শান্তশ্রী মজুমদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০১:১৫
Share: Save:

আর্থিক প্রতিবন্ধকতা ছিল। আরও ছিল সামাজিক বাধা। এই পরিবেশে শুধুমাত্র মনের জোরকে সঙ্গী করেই সংগ্রামপুরের জারিয়া খাতুন এ বার উচ্চমাধ্যামিকে কলাবিভাগ থেকে ৩৫০ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। তাঁর ইচ্ছে, ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষিকা হবে। কিন্তু আর্থিক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই রে সেই ইচ্ছে কত দূর পূরণ হবে, তা নিয়ে এখন সংশয়ে মেয়েটি।

Advertisement

মগরাহাট ১ ব্লকের কালীকাপোতা পঞ্চায়েতের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় থাকে জারিয়া। সেখান থেকে ডায়মন্ড হারবার গালর্স স্কুলে যাওয়া নিয়ে এলাকাবাসীর অনেক বিদ্রুপের মুখোমুখি হয়েছে সে। কেউ বলেছে, এত দূরে স্কুলে গিয়ে কোনও লাভ হবে না। কেউ বলেছে, পড়া ছেড়ে সেলাইয়ের কাজ শেখা উচিত। কিন্তু পাড়ার লোকের কথা উপেক্ষা করে মেয়েকে পড়িয়েছেন বাবা আব্দুর রেজ্জাক গাজি। নিজে মাধ্যমিক পাশ। বললেন, “অনেক কিছু সহ্য করে এত দূর যখন পড়াতে পেরেছি, আরও পড়াতে চাই মেয়েকে।”

২০০৯ সালে আল আমিন মিশনে সুযোগ পেয়েছিল জারিয়া। কিন্তু দুই ছেলের পড়ার খরচ ও সংসারের খরচ চালিয়ে তাঁর বাবা পড়াতে পারেননি এই মিশনে। মাধ্যমিকের পরে নিজের পড়ার খরচ চালানোর জন্য কখনও বা টিউশন করেছে, কখনও বা পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে পোলিও খাওয়ানোর কাজ করেছে সে। বাবার সঙ্গে সেলাইয়ের কাজেও নিয়মিত হাত লাগাতে হয়েছে তাকে। কিন্তু হার মানেনি জীবনের কাছে। জারিয়ার কথায়, “এখানে মাধ্যমিক পাশ করার আগেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় মেয়েদের। পড়তে দেওয়া হয় না। আমি পড়ছি দেখে পাড়া-প্রতিবেশীদের রাগ। জীবনে এগিয়ে চলার পথে অনেক বাধা আসবে। তাও পড়াশোনা করা উচিত।” ডায়মন্ড হারবার গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রীতা ভট্টাচার্য জারিয়ার এই লড়াইয়ের সাক্ষী। তিনি বইপত্র, টিফিন দিয়ে সাহায্য করতেন মেয়েটিকে। বললেন, “মেয়েটি জন্য বড্ডো মায়া হয়। বেশিরভাগ দিনই স্কুলে আসত না খেয়ে। আগামীদিনেও চেষ্টা করব ওকে বইপত্র দিয়ে সাহায্য করার।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.