Advertisement
E-Paper

অভাবে বিজ্ঞান পড়ার স্বপ্নভঙ্গ কৌশিকের

ভানুবাবু, ‘‘ছেলেক পড়াতে চেষ্টার কসুর করব না। কিন্তু...।’’ কথা থেকে যায় মনেই।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৪ ০১:২৪
কৌশিক সর। —নিজস্ব চিত্র।

কৌশিক সর। —নিজস্ব চিত্র।

মাধ্যমিকে ছেলের রেজাল্ট বের হওয়া ইস্তক কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ বেড়েই চলেছে হুগলির শিয়াখালার দক্ষিণ পাতুল গ্রামের ভানু সরের। জৈষ্ঠের তেতে-পোড়া দুপুরে দিনমজুরির ফাঁকে মাঠের আলে বসে কাঁধের গামছা দিয়ে ঘামে ভেজা শরীরটা মুছতে মুছতে বিড় বিড় করেন ভানুবাবু, ‘‘ছেলেক পড়াতে চেষ্টার কসুর করব না। কিন্তু...।’’ কথা থেকে যায় মনেই।

ভানুবাবুর ছেলে কৌশিক এ বার শিয়াখালা বেণিমাধব উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দিয়ে ৫৪১ নম্বর পেয়েছে। কৌশিকের স্বপ্ন বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করার। কিন্তু তাতে খরচ অনেক। তাই কষ্ট হলেও স্বপ্নের সঙ্গে সমঝোতার পথই বেছে নিয়েছে সে। কলা বিভাগে পড়বে বলেই আপাতত মনস্থির করেছে কৌশিক। তার কথায়, ‘‘বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তাই আর্টস নিয়ে পড়ব ঠিক করেছি। ভবিষ্যতে ইচ্ছা রয়েছে শিক্ষকতা করার।’’ টিনের চালের মাটির ঘরে বাবা-মা আর বোনকে নিয়ে এখন থেকেই লড়াই শুরু কৌশিকের। মা অনিমাদেবী ঘরোয়া গৃহবধূ। বাবার দিনমজুরির সামান্য রোজগারই সংসারের একমাত্র আয়। আর গোয়ালে একটা গরুর দুধ বেচে যা আসে তাতেই বেঁচে থাকে চারজনের সংসার। আর এ ভাবেই মাধ্যমিক পর্যন্ত এগোলেও উচ্চ মাধ্যমিকের পড়ার খরচ চালানো যে কার্যত অসাধ্য, তা বিলক্ষণ জানে কৌশিক। যদিও ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেন ভানুবাবু। তাই বলেন, “জানি না কী হবে। তবে শেষ পর্যন্ত লড়াই করব।”

মাধ্যমিকে নিজের সাফল্য অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চায় বিনয়ী ছেলেটি কৌশিক। জানায়, অন্য এক স্কুলের শিক্ষকের কোচিং সেন্টারে বিনা পয়সায় বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়গুলি সে পড়েছে। তার আশা এ বার নিশ্চয়ই কাউকে পাশে পাবে সে। তার সাহায্যে এগিয়ে আসবেন কেউ। আপাতত সেটাই ভরসা কৌশিকের।

prakash pal siakhala kaushik
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy