Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কর সংগ্রহকারী ঘরছাড়া, পঞ্চায়েতের তহবিলে টান

গত বিধানসভা ভোটের পর তৃণমূলের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে ঘর ছাড়েন আরামবাগের সালেপুর-২ পঞ্চায়েতের একমাত্র কর সংগ্রহকারী, সিপিএম কর্মী তরুণ মণ্ডল। তার পরে আর ফিরে কাজে যোগ দেননি। ওই পদে নতুন নিয়োগও হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৪ ০১:২৮
Share: Save:

গত বিধানসভা ভোটের পর তৃণমূলের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে ঘর ছাড়েন আরামবাগের সালেপুর-২ পঞ্চায়েতের একমাত্র কর সংগ্রহকারী, সিপিএম কর্মী তরুণ মণ্ডল। তার পরে আর ফিরে কাজে যোগ দেননি। ওই পদে নতুন নিয়োগও হয়নি। ফলে, তিন বছর ধরে পঞ্চায়েত এলাকার ‘গৃহ ও ভূমি কর’ আদায় শিকেয়। কর আদায় হচ্ছে না ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও।

কর আদায় প্রায় বন্ধ হওয়ায় টান পড়ছে পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলে। ব্যাহত হচ্ছে এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। এমনকী, পঞ্চায়েতের পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং দৈনন্দিন পরিচালনা খরচেও সমস্যা হচ্ছে। আপাতত পঞ্চায়েত সচিবের মাধ্যমে যতটা সম্ভব কর আদায় করছে পঞ্চায়েত। আগে যেখানে তরুণবাবু বাড়ি বাড়ি এবং ব্যবসায়ীদের কাছে গিয়ে বছরে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা কর আদায় করতেন, এখন সেখানে বছরে ৭০-৮০ হাজার টাকা কর মিলছে বলে পঞ্চায়েত সূত্রেই জানা গিয়েছে।

সমস্যার কথা মেনে নিয়েছে ব্লক প্রশাসন। কিন্তু কেন নতুন নিয়োগ হচ্ছে না, এই প্রশ্নে আরামবাগের বিডিও প্রণব সাঙ্গুই বলেন, “কর সংগ্রহকারী হিসেবে পঞ্চায়েত দফতর যাঁকে চুক্তিতে নিয়োগ করেছিল, তিনি ইস্তফা না দেওয়ায় নতুন নিয়োগ নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” তরুণবাবু কোনও হুমকির অভিযোগ দায়ের করেননি বা ঘরে ফেরার আবেদনও জানাননি বলে পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। তরুণবাবুর অভিযোগ, “তৃণমূলের হুমকিতে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। ফেরারও চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওরা থাকতে দিচ্ছে না।” স্থানীয় তৃণমূল নেতা কমল কুশারী অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেছেন, “তরুণবাবু নিজেই ভয়ে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছেন।” পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের ময়না দাস স্বীকার করেছেন, সে ভাবে কর আদায় না হওয়ায় পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে নলকূপ বসানো বা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নের মতো কাজ ব্যাহত হচ্ছে। পঞ্চায়েতে যাঁরা ব্যক্তিগত কাজে আসছেন, কেবল তাঁদের কাছ থেকেই কর আদায় করা হচ্ছে। কয়েকবার অবশ্য বিভিন্ন গ্রামে শিবির করে পঞ্চায়েত সচিব কর আদায়ের ব্যবস্থা করেন বলে ময়নাদেবী জানিয়েছেন।প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতগুলিকে আর্থিক ভাবে সাবলম্বী করার জন্য বহু দিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। পঞ্চায়েতগুলির কাছে নিজস্ব তহবিল সৃষ্টির মূল ক্ষেত্র ‘ভূমি ও গৃহ কর’ আদায়। এ ছাড়া রয়েছে কিছু কর বহির্ভূত আয়। যেমন, পুকুর ইজারা দেওয়া, টোল ও লেভি আদায় ইত্যাদি। এই তহবিলের অন্তত ৫০ শতাংশ এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে খরচ করার কথা পঞ্চায়েতগুলির। কিন্তু তা করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছে সালেপুর-২ পঞ্চায়েত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tarun mondal arambag salepur tax collection
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE