Advertisement
E-Paper

গাঁজা পাচারে ধৃত শিবু, তৃণমূলে দ্বন্দ্ব

বছর ঘুরতে না-ঘুরতেই ফের গ্রেফতার শিবু যাদব। গ্রেফতারের খবরে থমথমে ব্যারাকপুর। আদালত চত্বরে বাহুবলীদের ভিড়। বাস, অটো বন্ধ। তবে বেলা গড়াতে প্রশাসনের অনমনীয় ভূমিকায় ভরসা পেয়ে রাস্তায় আবার চেনা ছবি। একটি খুনের ঘটনার পরে, গত বছর ৭ জুন পুলিশ ও সাংবাদিকদের মারধর, ভাঙচুর করে এলাকায় সন্ত্রাস চালানোয় অভিযুক্ত শিবুকে তৃণমূলের মঞ্চে দেখা যেত হামেশাই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৪ ০২:১৩
শিবু যাদব

শিবু যাদব

বছর ঘুরতে না-ঘুরতেই ফের গ্রেফতার শিবু যাদব। গ্রেফতারের খবরে থমথমে ব্যারাকপুর। আদালত চত্বরে বাহুবলীদের ভিড়। বাস, অটো বন্ধ। তবে বেলা গড়াতে প্রশাসনের অনমনীয় ভূমিকায় ভরসা পেয়ে রাস্তায় আবার চেনা ছবি।

একটি খুনের ঘটনার পরে, গত বছর ৭ জুন পুলিশ ও সাংবাদিকদের মারধর, ভাঙচুর করে এলাকায় সন্ত্রাস চালানোয় অভিযুক্ত শিবুকে তৃণমূলের মঞ্চে দেখা যেত হামেশাই। মোট ১১টি ধারায় মামলা হলেও কিছু দিন জেল খেটে জামিনে ছাড়া পেয়েছিল শিবু ও তার ২৮ শাগরেদ। দাপটও বেড়েছিল। এমনকী তোলাবাজি ও দাদাগিরির বিস্তর অভিযোগ সত্ত্বেও শিবুকে লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীর হয়ে প্রচার করতে দেখা গিয়েছিল। সেই লোককেই মঙ্গলবার গভীর রাতে গাঁজা পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মোট ২১ কেজি ৬০০ গ্রাম গাঁজা পাচারের অভিযোগ। “রাত পৌনে দু’টো নাগাদ ব্যারাকপুর ১৫ নম্বর রেলগেটের কাছে উড়ালপুলের নীচে ঘোষপাড়া রোডে শিবুকে হাতেনাতে ধরা হয়।” এ দিন বলেন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা-প্রধান সি সুধাকর। বুধবার ব্যারাকপুর আদালত শিবুকে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখতে বলেছে।

শিবুর গ্রেফতারির পরে এ দিন সকাল থেকেই ব্যারাকপুর সদর বাজার চত্বরে বাইকবাহিনীর ঘোরাঘুরি শুরু হয়। কোর্ট বাসস্ট্যান্ডে শ’তিনেক যুবকের দাদাগিরি দেখে চালকেরা বাস বার করার সাহস পাননি। বাস ইউনিয়নের তৃণমূল নেতা তথা আইনজীবী রবীন ভট্টাচার্য বিষয়টি পুলিশ-কর্তাদের জানান। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (ট্রাফিক) দেবাশিস বেজ বলেন, ‘‘চালকেরা কেন ভয় পাচ্ছিলেন, সেটাও বলতে পারছিলেন না। অন্য রুটগুলো কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পরে জোর করে চালু করতে পেরেছি। ৭৮ নম্বরটা চালু করতে একটু সময় লেগেছে।’’

শিবু-কাণ্ডকে কেন্দ্র করে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে চলে এসেছে। ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ এ দিন দাবি করেছেন, শিবুকে ফাঁসানো হয়েছে। কারা ফাঁসাল, সে সম্পর্কে সরাসরি মন্তব্য না-করলেও বিধায়কের ইঙ্গিত দলেরই একাংশের দিকে। “সবই তো জানেন! আর কী বলব?” বলেন অর্জুন। প্রসঙ্গত, অর্জুনের আর এক ঘনিষ্ঠ মণীশ শুক্লকেও খুঁজছে পুলিশ। দু’বছর আগে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেফতার হওয়া মণীশের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা হলেও তিন দিন বাদে সে জামিন পেয়ে যায়। “ওদের মতো সমাজবিরোধীরা কেন বাইরে থাকে, সেটাই তো প্রশ্ন হওয়া উচিত!” আক্ষেপ করেছেন স্থানীয় এক বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা।

দলীয় সূত্রের খবর, শিবুর বিষয়টি নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। মুকুলবাবু তাঁদের জানিয়ে দেন, আইন আইনের পথেই চলবে। তবু প্রশ্ন থাকছে, গত বছর শিবু তৃণমূলের কেউ নয় বলে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দেওয়ার পরেও সে শাসকদলেরই ছত্রচ্ছায়ায় এত দিন কাজকর্ম চালিয়ে গেল কী ভাবে?

উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূলের কোনও নেতা এর দায় নিতে চাননি। অর্জুনের বক্তব্য, ‘‘দিদি আগের ঘটনায় ওকে দল থেকে বার করে দিয়েছিলেন, এটা ঠিক। কিন্তু এ বার লোকসভায় ও দলের হয়ে খুব খেটেছে বলে শুনেছি। আমি তো ওই এলাকার দায়িত্বে ছিলাম না!”

opium shibu yadav
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy