Advertisement
E-Paper

টাকা ফেরত চেয়ে খুন আমানতকারী, গ্রেফতার এজেন্ট

এজেন্টের মাধ্যমে সানমার্গ অর্থলগ্নি সংস্থায় টাকা রেখেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বেড়াচাঁপার আলনি ঘোষপাড়ার বাসিন্দা কার্তিক কর্মকার (১৮)। মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও ওই টাকা ফেরত পাচ্ছিলেন না। বুধবার দুপুরে বাবার সঙ্গে তারক বিশ্বাস নামে ওই এজেন্টের বাড়িতে যান টাকা ফেরত চাইতে। অভিযোগ, সেখানে কার্তিক ও তাঁর বাবা হেমন্ত কর্মকারকে মারধর করে তারক ও তার পরিবার। শুক্রবার রাতে কলকাতার নীলরতন হাসপাতালে মৃত্যু হয় কার্তিকের। খুনের অভিযোগে তারক বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নির্মল বসু

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৪ ০২:৩৬

এজেন্টের মাধ্যমে সানমার্গ অর্থলগ্নি সংস্থায় টাকা রেখেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বেড়াচাঁপার আলনি ঘোষপাড়ার বাসিন্দা কার্তিক কর্মকার (১৮)। মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও ওই টাকা ফেরত পাচ্ছিলেন না। বুধবার দুপুরে বাবার সঙ্গে তারক বিশ্বাস নামে ওই এজেন্টের বাড়িতে যান টাকা ফেরত চাইতে। অভিযোগ, সেখানে কার্তিক ও তাঁর বাবা হেমন্ত কর্মকারকে মারধর করে তারক ও তার পরিবার। শুক্রবার রাতে কলকাতার নীলরতন হাসপাতালে মৃত্যু হয় কার্তিকের। খুনের অভিযোগে তারক বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাড়োয়ায় রোজভ্যালির এক এজেন্টের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। খাসবালান্দা পঞ্চায়েতের ঝাঁজা গ্রামের বাসিন্দা মানস মণ্ডল (২৭) নামে ওই এজেন্ট কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের দাবি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, কার্তিক ও তার বাবা পেশায় দিনমজুর। তারকের মাধ্যমে প্রায় দশ হাজার টাকা সানমার্গ অর্থলগ্নি সংস্থায় রেখেছিলেন কার্তিক। কিন্তু মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও টাকা পাচ্ছিলেন না তিনি। বুধবার দুপুরে কার্তিক বাবাকে নিয়ে তারকের বাড়িতে টাকা চাইতে গেলে দু’পক্ষের বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, তারক, তাঁর ভাই গোপাল এবং বাবা অজিত কাঠ দিয়ে কার্তিকবাবু ও হেমন্তবাবুকে মারধর করে। কার্তিকের মাথায় চোট লাগে। গ্রামবাসীরা তাঁকে উদ্ধার করে বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করান। কার্তিকের অবস্থার অবনতি হওয়ায় প্রথমে কলকাতার আর জি করে ও পরে নীলরতনে তাঁকে পাঠানো হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় তাঁর।

বৃহস্পতিবার রাতে কাতির্র্ক মারা গিয়েছেন বলে গ্রামে গুজব ছড়ায়। তার জেরে গ্রামবাসীরা তারকের বাড়িতে হামলা চালায়। তারক ও তার পরিবার পালায়। পুলিশ আসার আগেই বিক্ষোভকারীরা তারকের বাড়িতে ভাঙচুর-লুঠপাট চালায়। পরিস্থিতি সামলাতে র্যাফ নামানো হয়। ভাঙচুরের ঘটনায় রাজেশ কাহার নামে এক গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রামে পুলিশ পিকেট চলছে।

কার্তিকের বোন সরস্বতী কর্মকার বলেন, ‘‘দাদা কোনও রকমে ১০ হাজার টাকা জমিয়েছিল। তারকের মাধ্যমে সানমার্গে টাকা রেখেছিল।” তারকের দাবি, “একটু একটু করে টাকা ফেরতের চেষ্টা করছিলাম।” গ্রামবাসী রঞ্জন মল্লিক, বাপন কাহার বলেন, ‘‘বহু লোক তারকের হাত দিয়ে সানমার্গে টাকা রেখেছিলেন। এখন সর্বস্বান্ত হতে বসেছেন।”

হাড়োয়ার ঝাঁজা গ্রামের বাসিন্দা মানস রোজ ভ্যালি কোম্পানির এজেন্টের কাজ করতেন। এলাকার কিছু মানুষ তাঁর হাত দিয়ে ওই সংস্থায় টাকা রেখেছিলেন। অভিযোগ, রোজ ভ্যালি আমানতকারীদের ঠিক মতো টাকা ফেরাতে পারছিল না। এলাকায় চাপের মুখে পড়েছিলেন মানস। এ নিয়ে তাঁর পরিবারেও অশান্তি হচ্ছিল বেশ কিছু দিন ধরে। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য কাজ করে আমানতকারীদের টাকা শোধ করার চেষ্টা করছিলেন তিনি।

যদিও মানসের কাকা সুমিত মণ্ডল বলেন, “বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছিল ও। আগের মতো আর সমস্যা ছিল না।” তাঁর দাবি, মানস বছর দুই আগে বিয়ে করেছিল। অভাবের জন্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগে ছিল। গতকাল স্ত্রীর সঙ্গে বচসার পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ির কাছেই একটি জায়গায় অসুস্থ অবস্থায় মানসকে দেখেন তাঁর বন্ধুরা। হাড়োয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বারাসত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানোর পথেই মারা যান তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হবে।

nirmal basu basirhat investment agency agent
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy