ভাঙচুরের পরে।—নিজস্ব চিত্র।
বাড়িতে চড়াও হয়ে এক তৃণমূল কর্মীর বৃদ্ধ বাবাকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল সিপিএম সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তাঁর ঘরও লণ্ডভণ্ড করেএকটি মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শনিবার রাতে তারকেশ্বরের কেশবচক পঞ্চায়েতের কুলতেঘরি গ্রামের ঘটনা। প্রহৃত অজিত ঘোষ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সিপিএমের অবশ্য দাবি, শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওই ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, অজিতবাবুর ছেলে অসীম তারকেশ্বর ব্লকে দলের কৃষক সংগঠনের সদস্য। দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে তিনি অ্যাসবেসটসের ছাউনি দেওয়া ঘরে থাকেন। পাশের ঢালাই করা ঘরে তাঁর বাবা-মা থাকেন। শনিবার রাতে জনা আটেক যুবক তাঁদের বাড়ির সামনে চড়াও হয়। অভিযোগ, অসীমবাবুর নাম করে তারা ডাকাডাকি করতে থাকে। দরজায় ধাক্কাধাক্কি করা হয়। ভয় পেয়ে অসীমবাবুরা দরজা খোলেননি। তখন একটি লিচু গাছে উঠে পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকে ওরা। অসীমবাবুর ঘরের অ্যাসবেসটস ভেঙে দেওয়া হয়। গালিগালাজ চলতে থাকে। অজিতবাবু বেরিয়ে আসেন। তখন তাঁর উপরেই দুষ্কৃতীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাঁর স্ত্রী তপতীদেবীও মারের হাত থেকে রেহাই পাননি।
অসীমবাবু বলেন, “আমার ছোট দুই মেয়ে আছে। সিপিএমের দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব দেখে ভয়ে স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে সিঁটিয়ে যাই। ওরা বাবাকে রড, লাঠি দিয়ে মারে। মাকেও মারে। ওদের হাতে বন্দুকও ছিল।” তাঁর দাবি, হামলাকারীদের মধ্যে নছিপুর এবং কাঁড়ারিয়ার বাসিন্দা তিন জনকে তিনি চিনতে পেরেছেন। হামলাকারীরা ফিরে যাওয়ার পরে তারকেশ্বর থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ আসে। অজিতবাবুকে প্রথমে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে ও পরে তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। রবিবার বিকেলে তিনি ওই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। তারকেশ্বরের পুরপ্রধান, তৃণমূল নেতা স্বপন সামন্ত বলেন, “কেশবচক পঞ্চায়েত সিপিএমের দুর্গ ছিল। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। কিন্তু সিপিএমের হার্মাদরা দুষ্কৃতীদের নিয়ে এলাকায় অশান্তি ছড়াতে চাইছে।”
সিপিএমের তারকেশ্বর জোনাল কমিটির সম্পাদক মুকুল ঘোষ বলেন, “মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় আমাদের দলের কেউ জড়িত নয়।” ওই সিপিএম নেতার দাবি, “তোলা আদায়কে কেন্দ্র করে ওখানে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল চলছে। তার জেরেই ওই ঘটনা।”
এসডিপিও (চন্দননগর) সৈকত ঘোষ বলেন, “পুলিশ এখনও লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার বলেন, “ওই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ আছে কি না, তা দেখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy