মারধরে জখম অটোচালক বিদ্যুৎ দত্ত। ছবি: তাপস ঘোষ।
দীর্ঘদিন ধরেই চলছে এই অবস্থা। বার বার জেলা প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও ফল না হওয়ায় সোমবার বেআইনি অটোর বিরুদ্ধে চুঁচুড়ার খাদিনা মোড়ে যৌথ ভাবে আন্দোলনে নেমেছিল হুগলি জেলা বাস অ্যাসোসিয়েশন ও বৈধ অটো বাঁচাও কমিটি। পরিণতিতে পরদিন, মঙ্গলবার বৈধ রুটের অটো চালকদের এক জনকে বেধড়ক মারধর করল এক দল যুবক। বৈধ অটোচালকদের অভিযোগ, বেআইনি অটোর বিরুদ্ধে তাঁদের আন্দোলন থামাতে এ ভাবেই আক্রমণ শানাচ্ছে বেআইনি অটোচালকেরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর একটা নাগাদ খাদিনা মোড় ও অ্যাঙ্গাস রুটের এক অটোচালক যাত্রী নিয়ে খাদিনা মোড় ছেড়ে চন্দননগরের দিকে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, তালডাঙার আগে জিটি রোডে এক দল যুবক তাঁর অটো আটকায়। যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। তারপর বিদ্যুৎ দত্ত নামে ওই অটোচালককেও নামিয়ে শুরু হয় মারধর। রাস্তায় ফেলে নাগাড়ে চলতে থাকে কিল, চড়, ঘুসি। একজন অটোচালককে এ ভাবে মারতে দেখে ছুটে আসেন স্থানীয় দোকানদার এবং আশপাশের লোকজন। তা দেখে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। গুরুতর জখম বিদ্যুৎবাবুকে স্থানীয় বাসিন্দারাই হাসপাতালে নিয়ে যান। বিদ্যুৎবাবুর অভিযোগ, বেআইনি অটোর বিরুদ্ধে ফের প্রতিবাদ করলে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে হামলাকারীরা। এই ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন বৈধ রুটের অটোচালকেরা অটো বন্ধ করে দেন। চন্দননগর হাসপপাতালের সামনে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। আটমকা রুটে অটো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম সমস্যায় পড়েন যাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ।
এ দিন হাসপাতালে শুয়ে বিদ্যুৎবাবু বলেন, “সোমবার বেআইনি রুটের অটোর বিরুদ্ধে আন্দোলন-অভিযানে আমি ছিলাম না। গরমে অসুস্থতার জন্য কয়েকদিন ধরেই অটো নিয়ে বেরোইনি। এ দিনই অটো বের করি। ওরা আমার অটো আটকালে অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু ওরা শোনেনি। যে ভাবে অটো আটকে আমাকে মারধর করেছে এবং মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে তাতে আতঙ্কে আছি।’’
বৈধ অটো বাঁচাও কমিটির সভাপতি আমজাদ আলি বলেন, “আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর থেকে গ্রামাঞ্চলে যাত্রী পরিষেবার জন্য বেশ কিছু অটোর পারমিট দেওয়া হয়। সেখানকার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য ওই অটোর পারমিট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তিকালে দেখা যায় ওই সব অটো এলাকায় না চলে শহরের রাস্তায় চলাচল করছে। এর ফলে শহরে বৈধ রুটের অটোচালকেরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।”
তাঁর অভিযোগ, সমস্যাটি নিয়ে তাঁরা জেলা প্রশাসন থেকে পরিবহণ দফতর সর্বত্র দরবার করলেও তাঁদের কথা কেউই শুনছেন না। উল্টে বেআইনি রুটের ওই সব অটোচালকদের হাতে তাঁদের অনেককে নিগৃহীত হতে হচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে তাঁরা শীঘ্রই বড় আন্দোলনে নামবেন।
আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের কর্তা সৈকত দাস বলেন, “আমাদের দফতর থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে গ্রামাঞ্চলের রাস্তায় যাত্রী পরিবহণের জন্য অটোর পারমিট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সব এলাকা ছেড়ে বেশিরভাগ অটো শহরে নিজেদের পছন্দমতো রুটে চলাচল করছে জেনে আমরা অভিযান চালানোর পাশাপাশি তাদের সতর্কও করেছি। কিন্তু ফের অভিযোগ ওঠায় তা খতিয়ে দেখে অবিলম্বে ওই সব অটোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy