মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা। ইস্ট-ওয়েস্ট রোডের টিকিয়াপাড়ায় গলদঘর্ম হয়ে কয়েকশো যাত্রী দাঁড়িয়ে। শেষ পর্যন্ত রুটের বাস না-পেয়ে দিঘা থেকে হাওড়ামুখী দূরপাল্লার বাস আসতে দেখে তার সামনেই দাঁড়িয়ে পড়লেন জনা পঞ্চাশ যাত্রী। বাধ্য হয়ে চালক গতি কমাতেই ওই বাসে দুদ্দাড় করে উঠে পড়লেন তাঁরা। বাদুড়ঝোলা লোক নিয়েই বাস চলল হাওড়া স্টেশনের দিকে।
শুধু টিকিয়াপাড়া নয়, মঙ্গলবার হাওড়া শহরের প্রায় সব রুটেই কমবেশি এই ছবি দেখা গিয়েছে। বাসভাড়া না বাড়ানোয় এমনিতেই শহরে গণ-পরিবহণ ধুঁকছে। অনেক আগে থেকেই শহর ও গ্রামাঞ্চলে কমছে বাস, মিনিবাসের সংখ্যা। গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়েছে লোকসভা নির্বাচন। নির্বাচনের জন্য বাস, মিনিবাস তুলে নেওয়ার ফলেই এই দুর্ভোগ বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। রাজ্যের প্রশাসনিক কার্যালয় এখন হাওড়ার নবান্নে। সেখানে পৌঁছনোর বাস, মিনিবাসও অনেক কমে গিয়েছে নির্বাচনের জন্য।
আজ রাজ্যের অন্য লোকসভা কেন্দ্রের পাশাপাশি হাওড়া ও উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রেরও নির্বাচন। কিন্তু তিন দিন আগে থেকেই হাওড়া শহর ও গ্রামীণ এলাকায় গণ পরিবহণ ব্যবস্থা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাসমালিক ও কর্মীরা জানাচ্ছেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচুর বাস, মিনিবাস, ট্যাক্সি, ট্রেকার তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। তাঁদের অভিযোগ, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, স্কুল, কলেজ, অফিস পৌঁছতে দু’ঘণ্টারও বেশি সময় লাগছে। বাড়ি ফেরার সময়েও একই অবস্থা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, শহর ও গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন রুট থেকে দু’হাজারেরও বেশি বাস, মিনিবাস, ট্যাক্সি, ট্রেকার তুলে নেওয়া হয়েছে। অল বেঙ্গল বাস, মিনিবাস সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, রবিবার থেকেই বাস, মিনিবাস রাস্তায় নেই। কেবল হাওড়া জেলা প্রশাসন নয়, নির্বাচনের কাজে লাগানোর জন্য বাস, মিনিবাস তুলে নিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি ও দুই ২৪ পরগনার প্রশাসনও। তাতেই দুর্ভোগ।
হাওড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) আরশাদ হাসান ওয়ার্সি বলেন, “কত গাড়ি নির্বাচনের জন্য নেওয়া হয়েছে তার হিসেব আমার কাছে নেই। এ নিয়ে নির্বাচনের সময় কোনও মন্তব্য করব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy