সাতসকালে ভরা বাজারের মধ্যে কুপিয়ে, গুলি করে এক যুবককে খুন করল দুষ্কৃতীরা।
বুধবার বসিরহাটের বাদুড়িয়া থানার কাটিয়াহাট বাজারে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম বাধে। পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। বাজারের কাছে পুলিশ ফাঁড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। শুরু হয় পথ অবরোধ। র্যাফ নামে। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশ তা অস্বীকার করেছে। রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতারও হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত রিন্টু মণ্ডল ওরফে ওয়াহাবের (৩৫) বাড়ি স্থানীয় কেফায়েতকাটি গ্রামে। সকাল ৮টা নাগাদ তিনি কাটিয়াহাটে বাজার করতে এসেছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, একটি ফলের দোকানের সামনে হঠাৎই চার যুবক এসে তাঁকে ঘিরে ধরে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তারা রিন্টুকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। তিনি লুটিয়ে পড়লে তারা গুলি চালায়। সামান্য বাদে রিন্টু মারা গিয়েছে বুঝেই তারা রিভলবার উঁচিয়ে সকলকে হুমকি দিয়ে পাশের মাঠ দিয়ে পালায়।
ঘটনাস্থলের কাছেই পুলিশ ফাঁড়ি। দিনের বেলায় সর্বসমক্ষে এমন ঘটনায় আতঙ্কে এবং ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা। গোলমালের আশঙ্কায় সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় দেহ ফেলে রেখে অবরোধ শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা পরে মাত্র এক জন পুলিশকর্মী ঘটনাস্থলে আসেন। তাতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে জনতা তাঁকে তাড়া করে। বেলা বাড়তেই অবরোধে আটকে পড়তে থাকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। অবস্থা সামাল দিতে বসিরহাট, স্বরূপনগর ও বাদুড়িয়া থানার পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এসডিপিও (বসিরহাট) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। র্যাফও নামে।
ইতিমধ্যে পুলিশ ভ্যানরিকশায় দেহ তুলতে গেলে অবরোধীকারীরা বাধা দেন। তাঁদের দাবি ছিল, দেহ নিয়ে যেতে হলে অ্যাম্বুল্যান্স আনতে হবে। এর মধ্যেই কিছু লোক পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে ভাঙচুর শুরু করে। ওই সময়েই উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। পরে দেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসডিপিও অবশ্য দাবি করেন, “লাঠি চালানো হয়নি। উচ্চ মাধ্যমিক থাকায় লাঠি উঁচিয়ে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।” স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য রুহুল কুদ্দুস, লালটুু চন্দ্ররা বলেন, “যে ভাবে সাতসকালে ভরা বাজারে খুন হল, আমরা সকলেই নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। তবে সময় মতো পুলিশ এলে এই পরিস্থিতি হত না।” পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রিন্টু এক সময়ে অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িত ছিলেন। তবে কিছু দিন যাবত তিনি সে সব এড়িয়ে চলছিলেন। তাঁর ভাই বাপি মণ্ডল বলেন, “দুষ্কৃতীরা পরিকল্পনা করেই দাদাকে খুন করেছে। বছরখানেক আগেও ওকে খুনের চেষ্টা হয়। সে যাত্রায় অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছিল।” প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, পুরনো শত্রুতার জেরেই এই খুন। কারা কী কারণে এই হামলা চালাল, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy