Advertisement
E-Paper

সামান্য বৃষ্টিতেই বেহাল রাস্তা, দুর্ভোগে নিত্যযাত্রী

রাস্তার উপরের পিচ উঠে গিয়েছে বছর দু’য়েক আগেই। ফলে সারা রাস্তা জুড়ে বড় বড় খানা-খন্দ। আর সেখানে বৃষ্টির জল জমে থৈ থৈ করে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লকের আঢ্যবাজার থেকে পাথরপ্রতিমা বাসমোড় পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তার এই হাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৪ ০১:১৩
খন্দ পথ। ছবি: দিলীপ নস্কর।

খন্দ পথ। ছবি: দিলীপ নস্কর।

রাস্তার উপরের পিচ উঠে গিয়েছে বছর দু’য়েক আগেই। ফলে সারা রাস্তা জুড়ে বড় বড় খানা-খন্দ। আর সেখানে বৃষ্টির জল জমে থৈ থৈ করে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লকের আঢ্যবাজার থেকে পাথরপ্রতিমা বাসমোড় পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তার এই হাল। যা নিয়ে তিতিবিরক্ত এলাকার অসংখ্য মানুষ।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর দ’শেক আগে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় ওই রাস্তাটি পিচঢালা হয়েছিল। রাস্তাটি তৈরি হওয়ার পরে পাথরপ্রতিমা ব্লকের বাসিন্দাদের সরাসরি পাথরপ্রতিমা বাজার থেকে বাসে কাকদ্বীপ মহকুমা শহরে সহজে পৌঁছতে পারেন। এমনকী, ওই বাজারমোড় থেকে সরাসরি বাসে কাকদ্বীপ হয়ে ডায়মন্ড হারবার, কলকাতা যাতায়াত করা যায়। বর্তমানে ওই রাস্তায় পাথরপ্রতিমা বাজার থেকে এম-৫০ রুটের বাস রামনগরের রায়চক মোড় এবং এম-১৯ রুটের রুটের বাস কলকাতা পর্যন্ত চলাচল করে। দুই রুটের প্রায় ২০-২৫টি করে বাস আছে। এ ছাড়াও, শতাধিক মোটরভ্যান পাথরপ্রতিমা বাজারমোড় থেকে কাকদ্বীপ, গঙ্গাধরপুর পযর্ন্ত চলাচল করে। বেহাল রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে নানা ভাবে ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা। প্রাণ ওষ্ঠাগত গাড়ি চালক-মালিকদেরও।

রাস্তা শুকনো থাকলে বাস চলার সময়ে ধুলোর ঝড়ে টেঁকা দায়। ধুলো নাকে-মুখে ঢুকে দম বন্ধ হওয়ার দশা হয়। যাত্রীরা নাকে-মুখে রুমাল চেপে ধরে কোনও ক্রমে অবস্থা সামাল দেন। ওই ১০ কিলোমিটার রাস্তা পারাপার করত গিয়ে জামাকাপড় ধুলোয় ঢেকে যায়। শুধু যাত্রীদের নয় রাস্তার পাশে মোড়ে মোড়ে দোকানদারদেরও ধুলোর ঝড়ে হাঁসফাঁস দশা। ধুলো আটকানোর জন্য দোকানের সামনে প্লাস্টিক লাগান অনেকে। কিন্তু তার উপরেও ধুলোর পুরু আস্তরণ চোখে পড়বে।

বৃষ্টি হলে আবার উল্টো বিপত্তি। রাস্তার গর্তে জল জমে যায়। গর্তের গভীরতা আন্দাজ করতে না পেরে খুব ধীরে গাড়ি চালাতে হয়। তাতে সময় বেশি লাগে। আবার ছোটখাট দুর্ঘটনাও লেগে থাকে। অন্য দিকে, বাসের চাকা জমা জলের গর্তে পড়তেই জল ছিটকে গিয়ে লাগে পথচারীদের গায়ে। ওই নোংরা কাদাজল ছিটে ঢুকে পড়ে রাস্তার পাশের দোকানেও। এই রাস্তা দিয়েই নিয়মিত যাতায়াত করেন হাজার হাজার মানুষ। পাথরপ্রতিমা ব্লকে রয়েছে কলেজ, বেশ কিছু স্কুল, ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, থানা, বিডিও অফিস। এ ছাড়াও, বিভিন্ন অফিস-কাছারি আছে এই এলাকায়। ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ ছাড়াও কলকাতা থেকেও বহু যাত্রী নিত্য প্রয়োজনে কাকদ্বীপ থেকে বাসে পাথরপ্রতিমা বাজার মোড়ে পৌঁছন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এমন রাস্তা দিয়ে প্রশাসনের কতার্রা তো বটেই নেতা-মন্ত্রী-সান্ত্রীরাও যাতায়াত করেন। কিন্তু তাঁরা অবস্থা যেন দেখেও দেখেন না। বতমার্নে রাস্তার যা হাল, তাতে গাড়ি তো দূরের কথা, হেঁটেও চলাফেরা করা দায়। স্থানীয় বাসিন্দা কমল জানা, শঙ্কর চক্রবর্তীরা জানান, এই রাস্তার জন্য ছেলে-মেয়েদের স্কুল-কলেজে পাঠাতে ভয়ে ভয়ে থাকেন তাঁরা। এই বুঝি কখন দুর্ঘটনা ঘটে গেল।

পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধক্ষ্য রজনীকান্ত বেরা সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, “আমি অসহায়। এত টাকা আমাদের তহবিলে নেই যে ওই রাস্তাটি সংস্কার করা যাবে।” রাস্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের মুখে তাঁদেরও পড়তে হচ্ছে বলে মেনে নেন তিনি। একাধিক বার সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না জানান তিনি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামিমা শেখ জানান, জেলার বিভিন্ন রাস্তা ধীরে ধীরে সংস্কারের ব্যবস্থা হবে। পাথরপ্রতিমার বিডিও কিশোরকুমার বিশ্বাস জানান, ওই রাস্তাটির কয়েক বার খানা-খন্দ ভরাটের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু রাস্তাটি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার হওয়ায় কাজ করা যাচ্ছে না। পূর্ত দফতরের অধীনে স্থানান্তরিত করে সংস্কারের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

patharpratima deplorable road sufferings of passengers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy